সবসময় সোজাসাপটা এবং স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে ভালোবাসেন অভিনেত্রী টুইঙ্কল খান্না। রাজনৈতিক হোক কিংবা সামাজিক যে কোনো বিষয় সম্পর্কে কলম তুলে নিতে দ্বিধাবোধ করেন না অক্ষয় ঘরনী। ” মিসেস ফানিবোনস” এই ছদ্মনামেই বরাবর কলম তুলে ধরেন অভিনেত্রী। সারা কলকাতা শহর যখন আর জি কর কান্ডকে ঘিরে উত্তাল। চারিদিকে সকলের একটাই দাবি ,”বিচার চাই”, তখন পিছুপা হলেন না তিনিও। এই নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদে কলম ধরতে দেখা গিয়েছিল টুইঙ্কল খান্নাকে। তবে শুধু আরজি কর নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা। এবার এই সমস্ত বিষয়ে আওয়াজ তুললেন অভিনেত্রী টুইঙ্কল খান্না।
সম্প্রতি, টাইমস অফ ইন্ডিয়ার জন্য তিনি যে প্রতিবেদনটি লিখেছেন তার শিরোনামে লেখা ছিল, ” কেন ভূতেরা ভারতীয় স্ত্রীদের ভয় দেখায় না”! কারন অভিনেত্রীর ধারণা ভারতের রাস্তাঘাটে রাতের অন্ধকারে ভূতের চেয়ে পুরুষরা বেশি ক্ষতিকারক মহিলাদের জন্য। তিনি আরো বলেন, ” আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চারপাশে যে সমস্ত ঘটনাগুলি প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে, তার তুলনায় এই হরর মুভিগুলি কম ভয়ানক মনে হয়।”
উল্লেখযোগ্য, এমন উত্তপ্ত সময়ে টুইঙ্কল খান্না দেখে ফেলেছেন অমর কৌশিক পরিচালিত সিনেমা ” স্ত্রী২”। তিনি মনে করেন, এই সিনেমা আসলে বিভিন্ন স্তরের মহিলাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিন যে অন্তর্ঘাত চলে তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । তিনি লিখতে গিয়ে কলকাতায় ঘটা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পাশাপাশি তিনি বিহার ও বদলাপুরে ঘটা যথাক্রমে একটি ১৪ এবং ২-৪ বছরের শিশুর ওপর হওয়া যৌন নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। অভিনেত্রী তার লেখায় আরো যোগ করেন , ” এই পৃথিবীতে পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও আমি দেখতে পেয়েছি আমরা তখনও আমাদের মেয়েদেরকে সেই একই জিনিস শেখাচ্ছি। যা আমাকে আমার ছোটবেলায় শেখানো হয়েছিল,যেমন একা বাইরে যেতে পারবে না। যেমন পার্কে যাওয়া যাবে না একা, স্কুলে যেতে একা পারবে না, কাজ করতে কোথাও একা যাবে না। সবচেয়ে বড়, কোনো পুরুষের সঙ্গে একা যাবেন না। এমনকি সেটা যদি তোমার কাকা, তুতো ভাই, বন্ধু যেই হোক না কেন, কোথাও একা যাবে না। তুমি একা যেও না, কারণ তুমি একা গেলে আর কখনও ফিরে আসতে নাও পারো।”
সবশেষে অভিনেত্রী টুইঙ্কল খান্না বলেছিলেন , সমস্ত মহিলাদের ঘরের চার দেওয়ালের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পাবলিক স্পেসে মহিলাদের সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তা পুরোপুরি ভাবে অনুসরণ করার সময় এসে গেছে। তবে যতদিন না এটা কার্যকরী হচ্ছে ততদিন ভারতের নানান অন্ধকার গলিতে পুরুষের চেয়ে মহিলাদের ভূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়া অনেক বেশি নিরাপদ হলে মনে করেন তিনি। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে দেশে ক্রমাগত ঘটে চলা নারী নির্যাতনের কারনে টুইঙ্কল খান্না ভীষণভাবে চিন্তিত এবং তিনি যে কোনোভাবেই প্রতিবাদ করতে পিছুপা হবেন না , তা তার লেখার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়।