বুধবার রবীন্দ্রসদন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। ৩০তম কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরার শিরোপা পেলেন কারা? গত একসপ্তাহ ধরে সিনেপ্রেমীরা মজে ছিলেন বিশ্ব সিনেমা নিয়ে। নন্দনে প্রাঙ্গণ মুখরিত ছিল সিনে প্রেমীদের পদচারণায়। ফের এক বছরের অপেক্ষা।
বুধবার রবীন্দ্রসদনে হয়ে গেল চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। বেছে নেওয়া হল সেরা পরিচালক, সেরা ছবি। সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিল বাংলার তিন ছবি। প্রতিবারের মতোই নাচে গানে পুরস্কার জমজমাটভাবে শেষ হলো কিফ এর অনুষ্ঠান। পুরস্কার বাবদ দেওয়া অর্থ ভবিষ্যতে পরিচালকদের আরও সিনেমা বানাতে উৎসাহী করবে বলে আশা করা যায়।
কোন কোন সিনেমা পুরস্কৃত হলো? পুরস্কার বাবদ কতো অর্থ পেলেন সকলে?
সেরা ভারতীয় স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘গুলারকে ফুল’ (হিন্দি) ৷ পরিচালক অরণ মৈত্র। পরিচালককে পুরস্কার বাবদ দেওয়া হয় ট্রফি ও সার্টিফিকেট এবং ৫ লাখ টাকা নগদ পুরস্কার। এরপর সেরা বাংলা প্যানোরমা ফিল্মের পুরস্কার জিতে নেয়, ‘ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন’ (বাংলা) সিনেমা৷ অভিজিৎ চৌধুরী পরিচালিত এই ছবি সার্টিফিকেট ও ট্রফির পাশাপাশি পায় ৭.৫ লাখ টাকা পুরস্কার ৷
হীরালাল সেন মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড এ সেরা পরিচালকের পুরস্কার জেতেন (ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফিল্ম ক্যাটাগরি) আরিয়ান চন্দ্র প্রকাশ (সিনেমা-আজুর) ৷ ট্রফির সঙ্গে হাতে তুলে দেওয়া হয় ৫ লাখ টাকা নগদ পুরস্কার ৷ সেরা সিনেমা (ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফিল্ম ক্যাটাগরি)- লাচ্ছি (কন্নড়) ট্রফির সঙ্গে পরিচালক ও প্রযোজকের হাতে তুলে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকা নগদ পুরস্কার ৷ পরিচালক ও প্রযোজকের হাতে তুলে দেওয়া হয় সার্টিফিকেটও।
বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে পুরস্কার ছিনিয়ে নিলেন কোন কোন আন্তর্জাতিক সিনেমা?
গোল্ডেন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার অ্যাওয়ার্ড (ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন) এ সেরা পরিচালকের শিরোপা পান, আনা এন্ডেরা (বিলাভড ট্রপিক)। পুরস্কার হিসেবে ট্রফির পাশাপাশি পরিচালকের হাতে তুলে দেওয়া হয় নগদ ২১ লাখ টাকা পুরস্কার এবং সার্টিফিকেট ৷ সেরা সিনেমা হিসেবে স্থান লাভ করেন ‘তারিকা’ (বুলগেরিয়া) পরিচালক মিলকো লাজারোভ ও প্রযোজক ভেসেলকা কিরায়াকোভারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ট্রফি, ৫১ লাখ টাকা এবং সার্টিফিকেট ৷ এছাড়াও স্পেশাল জুরি মেনশন (ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন ইনোভেশন ইন মুভিং ইমেজেস)-এ সার্টিফিকেট পায় মেক্সিকোর সিনেমা ডেড’স ম্যান সুইচ ৷ FIPRESCI পুরস্কারের সার্টিফিকেট পায় ‘তারিকা’ ৷
নেটপ্যাক অ্যাওয়ার্ড বেস্ট ফিল্ম ক্যাটাগরিতে (এশিয়ান সিলেক্ট)- ‘পুতুলনামা’র পরিচালক রণজিত রায় পুরস্কৃত হন। স্পেশাল জুরি মেনশন হলে স্থান লাভ করেন (ইন্ডিয়ান ডকুমেন্টারি ফিল্ম)- ‘মোজ্জাত’ (বাংলা) এর অমৃত সরকার। স্পেশাল জুরি মেনশন এ আরও জায়গা করে নেয়, (ইন্ডিয়ান ডকুমেন্টারি ফিল্ম)- ‘মেলভিলাসম’ (মালয়লম)- পরিপ্রসাদ কেএন। স্পেশাল জুরি মেনশন (ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফিল্ম ক্যাটাগরি)-এর সার্টিফিকেট দেওয়া হয় হিন্দি সিনেমা ‘নুক্কড়’ নাটক ছবিকে।
৩০তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দীক্ষামঞ্জরী’র নৃত্য পরিবেশনা দিয়ে। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শান্তনু বসু, ইন্দ্রনীল সেন, অরূপ বিশ্বাস, গৌতম ঘোষ, সোহম চক্রবর্তী, পাওলি দাম, ঋতাভরী চক্রবর্তী, নিকোলাস ফ্যাসিনোর মতো কলা কুশলীরা।