চেহারাই অভিনয়ের চাবিকাঠি একথা লোকে মুখে অস্বীকার করলেও, মনে মনে সকলেই জানেন কথার কিছুটা সত্যতা রয়েছে। বলিউডের ২০ থেকে ৮০ ত্বকের যত্ন নেন সমস্ত বলি সুন্দরীই। ত্বকের যত্নে নিয়মিত রুটিন ফলোও করেন প্রত্যেকে। বয়েস যতই বাড়ুক, বলি সুন্দরীদের চেহারায় যেন তাঁর কোনো ছাপই নেই। ৪০ পেরোনোর পরেও বলিরেখাহীন উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী সমস্ত বলিউড সুন্দরীরা। অভিনেত্রী আলিয়া ভাট ছাড়া ৪০ এর দিকে হাঁটছেন বলিউডের বেশিরভাগ অভিনেত্রীই। ৪০ পেরিয়েও গেছেন সফল সমস্ত বলি নায়িকাই। ক্যাটরিনা কাইফ থেকে দীপিকা পাডুকোন।
বয়েস যতো বাড়ছে তাঁদের মুখের উজ্জ্বলতা যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন। নিজেদের কম বয়সের উজ্জ্বলতাই যেন তাঁদের বর্তমান উজ্জ্বল ত্বকের কাছে হার মানবে। বয়েস যতই ৪০ ছুঁইছুঁই হোক না কেন, সকলেই ‘গ্ল্যামারে’ টক্কর দেন অল্পবয়সি যেকোনো নায়িকাদের।
বয়েস কালেও এই ঝকঝকে ত্বকের পেছনে তাঁদের রহস্য কি?
কোরিয়ান গ্লাস স্কিনের সাথে তুলনা করা হয় বর্তমান দিনে এই ত্বকের। কোরিয়ানদের এই ত্বক তো জন্মগত, তবে ভারতীয় সুন্দরীদের এই ত্বকের কি রহস্য?বলি সুন্দরীদের উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য কি?তামান্না ভাটিয়া থেকে আলিয়া ভাট অথবা ক্যাটরিনা কাইফ হোক বা সামান্থা রুথ প্রভু নিজগুণে অনুরাগীদের মন জিতেছেন প্রত্যেকে। বলিউড এবং দক্ষিণী সিনেমার শীর্ষস্থানীয় সকল অভিনেত্রী এরা সকলেই। নিজগুণে ও কাজে দর্শকমহলে স্বনামে পরিচিত অভিনেত্রী। বয়েস যতই হোক, প্রত্যেকেই এখনো দাপিয়ে করছেন নায়িকার চরিত্র। পর্দায় তাঁদের দেখলে হৃদয়ে দোলা দেয় প্রত্যেক অনুরাগীর। নিয়মিত জিম যান বা ডায়েট করেন বলে কি তাঁদের এমন ঝলমলে ত্বক? জিম বা ডায়েট এগুলো বেশিরভাগই শরীরকে ধরে রাখার জন্য। একটি অন্যটির সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও মেদের দেখভালে এদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
তাহলে কি যোগব্যায়াম? নাহ্ সেও বেশি কাজে দেয় মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে। ঘুম থেকে উঠেই জিম ছোটার আগেই প্রত্যেকে নেন এক স্পেশাল ফেসপ্যাক। প্রায় সব বলি সুন্দরীই ত্বকের গোপন যত্ন হিসেবে এই ফেসপ্যাকের কথা বলেছেন। সকালে উঠে চা কফির মতো এই নিয়ম মানেন অভিনেত্রীরা। রোজ সকালে এই রুটিন না সেরে ঘর থেকে বেরোন না কেউ।ফেসিয়ালের নাম ‘আইস ওয়াটার ফেসপ্যাক’। এক বাটি বরফ জলে মুখ ডুবিয়ে রাখতে হয়। সকাল বেলায় কিছুটা সময় ত্বকের এই পরিচর্যাই ত্বককে তরুণ রাখে বছরের পর বছর। সকালে ঘুম থেকে উঠে বরফ জলে ত্বকের পরিচর্যার বেশ কয়েকটি ভাল দিক আছে বলে জানান স্কিন স্পেশালিস্টরা। এর উপকার সম্পর্কে তাঁরা বলেন, এটি মুখের লালচে ও ফোলা ভাব কমায়। ত্বকে ব্রণ, ফুস্কুরি, র্যাশও অনেকটাই কমে যায় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ত্বকের রন্ধ্রপথ মুখ বন্ধ করে যা ত্বকের জন্য ভালো। একারণেই শীতপ্রধান অঞ্চলের মানুষের ত্বকের উজ্জ্বলতা সবসময়ই বেশি থাকে।ত্বকের যত্ন নিয়ে বলিউড অভিনেত্রীদের কি মতামত?সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী কৃতি খারবান্দাকে দেখা গেলো আইস ওয়াটারের ফেসিয়াল করতে। নিজের একাউন্ট থেকেই সেই ফেশিয়ালের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন অভিনেত্রী।ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে একটি কাচের পাত্রে বরফ-ঠান্ডা জল নিয়ে তাতে মুখ ডোবাচ্ছেন কৃতি। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘‘আইস আইস বেবি! ত্বকের যত্ন নেওয়ার সেরা পদ্ধতি।’’আবার এর আগে সংবাদমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী আলিয়া ভাটও বলেছিলেন, সকালে উঠে মুখে বরফ লাগানো তাঁর ত্বকের যত্ন নেওয়ার রোজের রুটিন। ক্যাটরিনা কাইফ বলেছিলেন, তিনি নাকি সারাদিনে বিভিন্ন সময়েই মুখ বরফ জলে ডুবিয়ে রাখেন। যদি সব সময় সেটা সম্ভব না হয়ও, সকালের ওই রুটিন মানতে কখনোই ভোলেন না অভিনেত্রী।দক্ষিণী অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু আবার নিজের সমস্ত শরীরই বরফ ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখেন। এর আগে ২০২৩ সালের একটি ভিডিয়োতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল, টানা ৬ মিনিট বরফ-ঠান্ডা জলে ডুবে ধ্যান করতে। সামান্থা বলেছিলেন, বরফ জলে স্নানের অনেক উপকারিতা আছে। এটি শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদনও বৃদ্ধি করে ত্বকের তারুণ্যও ধরে রাখে। আরেক দক্ষিণী সুন্দরী তামান্না ভাটিয়াও ত্বকের জেল্লা নিয়ে বলেছিলেন, মুখের ত্বকের রন্ধ্রপথ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য তিনি প্রতি দিন সকালে আইস ওয়াটার ফেশিয়াল করেন।
বলি সুন্দরী কৃতি শ্যাননের মতে, বরফ ঠান্ডা জলে ফেশিয়াল হলো তাঁর ত্বকের কফি। এক মগ কফি যেমন সকালে তাঁকে এনার্জি দেয় তেমনি বরফ জলে এনার্জি পায় তাঁর ত্বক। তিনি নিয়মিত ওই বরফ ঠান্ডা জলের ফেসিয়াল নেন। তাঁর মতে, সকালের এই ফেসিয়ালের পরেই তাঁর ত্বক জেগে ওঠে।
প্রতিবেদন : প্রিয়াংকা সরকার