সঙ্গীত জগতের এক অন্যতম নাম হল ঊষা উত্থুপ। বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়ে মন জয় করেছেন বহু মানুষের। পদ্মভূষণ সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। সঙ্গীত জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। সঙ্গীত জীবনের প্রথম অধ্যায়ের পথ চলা মোটেই সহজ ছিল না তাঁর, মুখোমুখি হতে হয়েছে বহু সমস্যার।
৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন তিনি। ১৯৬৯ সালে নাইট ক্লাবে গান গাওয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় তাঁর পথ চলা। এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান তাঁর সঙ্গীত জীবনের প্রথম দিকের লড়াইয়ের কথা। তিনি বলেন তাঁর চেহারার জন্য বহু কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে, বিচার করা হয়েছে তাঁর চেহারার জন্য। মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন দর্শকের কাছ থেকে, তবে তিনি এই কটাক্ষ ধরে বসে থাকেননি, বিশ্বাস রেখেছেন তাঁর সুর এবং তালের ওপর, যা তাঁকে শিল্পী জীবনে এগিয়ে নিয়ে যেতে বহু সাহায্য করেছে। “রাম্বা হো হো”, “হরি ওম হরি”, “ওয়ান টু চা চা চা” এবং “ডার্লিং” এর মত বহু গানের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন ঊষা। ভারতীয় সঙ্গীত জগতের মহিলাদের জন্য ঊষার জীবনী এক অনুপ্রেরণার মত। তাঁর চেহারা ও অমলিন কন্ঠস্বর কটাক্ষের সম্মুখীন করেছে তাঁকে বহুবার। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে গিয়েছেন তাঁর সঙ্গীত জীবনে। তাঁকে “স্টিলব্লেজার” বলা হয়। যার অর্থ হলো “উদ্ভাবক”। এই তকমাটি তাঁর জন্য যথেষ্ট সম্মান এবং দায়িত্বেরও। ঊষা এর সাথে যোগ করে দিয়ে বলেন , তাঁর এই অমলিন কণ্ঠস্বর সব থেকে বড় শক্তি ও অস্ত্র হয়ে ওঠে, পপ ও জ্যাজ সঙ্গীতের জন্য তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল একদম প্রযোজ্য এবং এর মধ্যে দিয়েই সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। তবে তিনি বলেন তাঁর এই পথ চলায় সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করে দর্শক, তাঁরা তাঁকে গ্রহণ না করলে হয়তো তাঁর পথ চলা এত সহজ হতো না। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন প্রত্যেক সঙ্গীত শিল্পীকেই তাঁর নিজের কণ্ঠস্বর, তাল, লয় এবং সুরের উপর ভরসা রাখতে হবে। সব রকম পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখতে হবে। নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারালে হবে না এবং কঠোর পরিশ্রমের দ্বারাই তাঁদের পথ চলা মসৃণ হবে।
ঊষা উত্থুপ তাঁর পরবর্তী কাজের সম্পর্কে বলেন ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরু, দিল্লী এবং কলকাতা সহ বেশ কয়েকটি শহরে অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানের জন্য তিনি যথেষ্ট উৎসাহী কারণ বহুদিন পর তিনি তাঁর গান আবারও পৌঁছে দিতে পারবেন সঙ্গীত প্রেমীদের কাছে। এই অনুষ্ঠানগুলির জন্য একইভাবে অপেক্ষায় রয়েছেন অনুরাগীরা।