রাজ্যজুড়ে চলছে খাদান ‘ঝড়’। নতুন সিনেমার জন্য দেব ও যিশু সেনগুপ্তকে শুভকামনা জানিয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে জিৎ এর মতো বাংলার অন্য সুপারস্টাররা। তবে দক্ষিণী সিনেমার দাপট এখনো বেশ রমরমিয়ে চলছে বাংলায়। সেই দাপটে শো পাচ্ছিল না, বাংলার নতুন সিনেমাগুলো। তবে থেমে রইলেন না দেব। রাত দুটোয় রাখলেন সিনেমার প্রথম শো।
এবারে অভিনেতা দেবের সিনেমার প্রথম শো এলো একটু অন্যভাবে। ২০ ডিসেম্বর, শুক্রবার মুক্তি পাওয়ার কথা দেব ও যিশু অভিনীত খাদান এর। তবে পুষ্পা ২ এর জন্য অনেক প্রেক্ষাগৃহেই শো পাননি প্রযোজক দেব। তাই বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই রাখলেন ‘খাদান’-এর প্রথম শো। এহেন ঘটনা বাংলা সিনেমাতে প্রথমবার ঘটলো। দক্ষিণী সিনেমাকে মাত দিতে দক্ষিণী পন্থাই অবলম্বন করলেন দেব। রাত দুটোয় প্রথম শো, আর সেটাও হাউজফুল। ব্যান্ডপার্টি বাজিয়ে এই জয়ের উৎসব জমজমাট করলেন দেবের ভক্তরাই।
রাত দু’টোয় প্রথম শো! সমস্ত টিকিট বিক্রি হয়ে হাউজফুল রাত দুটোর শো!
তবে হ্যাঁ এই উন্মাদনা কিন্তু বাংলার সমস্ত প্রেক্ষাগৃহের ঘটনা নয়। এমনকি কলকাতার কোনো প্রেক্ষাগৃহে হয়নি এ ঘটনা। দেবের নতুন ছবি নিয়ে এমন উন্মাদনা দেখা গেল, রায়গঞ্জে। ২০ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মাঝরাতে, রাত ২টোয় রায়গঞ্জের এক প্রেক্ষাগৃহে ‘খাদান’-এর প্রথম শো রাখা হয়েছিল। আর অগ্রীম বুকিং শুরু হওয়ার মিনিট খানেকের মধ্যেই সমস্ত টিকিট শেষ।
রায়গঞ্জের কল্যাণী মাল্টিপ্লেক্স এসভিএফ সিনেমায় রাত ২টোয় দেখানো হবে ‘খাদান’। অগ্রীম বুকিং শুরু হওয়ার মিনিট খানেকের মধ্যেই সমস্ত টিকিট শেষ।
ভারতে এখন পর্যন্ত দক্ষিণী রাজ্যগুলোতেই গভীর রাতে প্রথম শো রাখার চল ছিল। সেখানকার সুপারস্টারদের অনুরাগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করে প্রেক্ষাগৃহ ভরিয়ে দেওয়ার দৃশ্য খুব একটা অচেনা নয়। এমনকি রজনীকান্তের সিনেমার জন্য সরকারি দপ্তরে ছুটিও থাকে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথমবার গভীর রাতে বাংলা সিনেমার শো হাউজফুল হলো।
পুষ্পা ২ কে হার মানলো খাদান! হাউজফুল রাত দু’টোর শো!
বৃহস্পতিবার রাতেই বুক মাই শো-তে দু সপ্তাহ ধরে রমরমিয়ে চলা ‘পুষ্পা’কে হার মানিয়ে দিয়েছে ‘খাদান’। দেব-যিশু ভক্তদের উন্মাদনায় নিমেষেই বিক্রি হচ্ছে টিকিট। অনুরাগীদের এই উন্মাদনা যেন বিফলে না যায়, তার খেয়াল রাখছেন দেব। বৃহস্পতিবার প্রযোজক-অভিনেতা জনসমক্ষে নিজেই ঘোষণা করেছেন, ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ কথা। দর্শক-অনুরাগীদের কাছে নিজে অনুরোধ করেছেন, “কাছের সিনেমা হলে খাদান না দেখতে না পেলেই যেন তাঁকে জানানো হয়। তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন।”
‘খাদান’কে ঘিরে বাংলায় উন্মাদনার শেষ নেই। বাংলায় মাঝরাতে শোয়ের এই উন্মাদনার নেপথ্যের মানুষটি হলেন বাংলার সুপারস্টার দেব। এরআগে সারা বাংলার ঘুরে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার প্রচার সফর করেন টলিউড সুপারস্টার। আর সেই প্রচারে যে তিনি বেজায় সফল, সেটা বেশ ভালোই বোঝা গেল।
এ ঘটনার পর ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করলেন দেব। ভিডিয়োতে ভক্তদের উদ্দেশে দেব বলেছেন, “ওপেনিংয়েই এমন উন্মাদনা দেখে আমি ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি। ৬ কোটি বাজেটের সিনেমা সফল হলে পরবর্তীতে ১০ কোটি টাকা বাজেটের বাংলা ছবি বানানোর সাহস পাব। আর এই সাফল্যের গোটা কৃতীত্বটাই আপনাদের সকলের।” ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে একটুও কসুর করেননি দেব।
বাংলার বুকে এক অসামান্য ইতিহাস গড়লেন, টলিউড সুপারস্টার। তারজন্য সুপারস্টার দেবকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়। এখানেই শেষ নয়, লুচি-মাংস, ক্ষীরকদম খাওয়ানোর জন্য দেবের কাছে আবদারও রেখেছেন তিনি। ওপেনিংয়ে খাদানের ঝোড়ো ব্যাটিং দেখে বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে বড়দিনের বক্স অফিস কাঁপিয়ে দেবে ‘খাদান’।
‘খাদানে’র ট্রেলারে দেব-যিশু জুটির ম্যাজিক দেখেই ইতিমধ্যেই আপ্লুত দর্শক। এরআগে বুধবার রিলিজের ৪৮ ঘণ্টা আগে অগ্রীম বুকিং শুরু করতে না পারায় বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন দেব। সমাজমাধ্যমে তাঁর পোস্টে উপচে পড়ছে সেই ক্ষোভ। তবে এরপর সিনেমার অগ্রীম বুকিংই শুধু নয়, নির্দিষ্ট সংখ্যক শো পাওয়া নিয়েও অভিনেতা-প্রযোজক লড়েছেন। এবারে অ্যাডভান্স বুকিংয়ে বাংলা সিনেমা প্রেমীদের ‘খাদান’-প্রীতি দেখে সেই ক্ষোভের আগুন ঠান্ডা হয়েছে।