নভজ্যোত সিং সিধু সম্প্রতি তার স্ত্রীর ক্যান্সার থেকে সুস্থ হওয়ার যাত্রা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার স্ত্রীর চিকিৎসায় শুধু আধুনিক চিকিৎসা নয়, একটি বিশেষ ডায়েট প্ল্যানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে, এই দাবির কারণে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।
সিধুর কি বক্তব্য:
সিধু বলেন, তার স্ত্রীকে ক্যান্সার থেকে সুস্থ করতে সার্জারি, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি এবং টার্গেটেড থেরাপি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, তিনি তার স্ত্রীর জন্য একটি বিশেষ ডায়েট প্ল্যান তৈরি করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, এই ডায়েট প্ল্যান আয়ুর্বেদ, নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহসুমির ‘অটোফ্যাজি’ তত্ত্ব এবং ইতিবাচক মনোভাবের উপর ভিত্তি করে তৈরি।
সিধু তার স্ত্রীর ক্যান্সার যাত্রাকে ‘সমবায় প্রক্রিয়া’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, এই ডায়েট আধুনিক চিকিৎসার বিকল্প নয় বরং চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
সিধুর এই দাবির পর মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তারা জানিয়েছে, ক্যান্সার নিরাময়ে ভেষজ উদ্ভিদের কার্যকারিতা প্রমাণ করার জন্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব রয়েছে।
সিধু যদিও বলেছেন, তিনি চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সম্মান করেন এবং তাদের ‘দেবতা’ বলে মনে করেন। তিনি বলেন, তার স্ত্রীর পুরো চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নির্দেশনায় পরিচালিত হয়েছে।
ডায়েট প্ল্যানের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল :
সিধু তার স্ত্রীর ডায়েট প্ল্যানের মধ্যে আয়ুর্বেদের বিভিন্ন উপাদান অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যেমন হলুদ, নিম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। এছাড়া, তিনি বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা গবেষণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, বিশেষ করে অটোফ্যাজি তত্ত্ব থেকে। অটোফ্যাজি এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে শরীর নিজের কোষের বর্জ্য উপাদান পরিষ্কার করে নতুন কোষ তৈরি করে।
সিধু বলেন, তার স্ত্রীর ডায়েট প্ল্যান শুধু শারীরিক সুস্থতার জন্য নয়, মানসিক শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করেছে। তার মতে, ক্যান্সারের মতো বড় রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মানসিক ইতিবাচকতা এবং সংকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সিধুর এই বক্তব্যে অনেকেই তার প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন। সমালোচকদের মতে, ক্যান্সারের মতো রোগের চিকিৎসায় ভেষজ বা ডায়েটের ভূমিকা নিয়ে এখনো যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে যারা প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিশ্বাস করেন, তারা সিধুর বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
নভজ্যোত সিং সিধুর বক্তব্য আমাদের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। যদিও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিই ক্যান্সার নিরাময়ে প্রধান ভূমিকা পালন করে, সঠিক ডায়েট এবং জীবনধারা পরিবর্তন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। তবে, যেকোনো চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সিধুর উদাহরণ আমাদের শেখায়, শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক শক্তি এবং ইতিবাচকতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।