রাজ কাপুরের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কাপুর পরিবার এক বিশেষ উদযাপনের আয়োজন করে, যা বলিউডে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ের পিভিআর ইনফিনিটি মলে এই অনুষ্ঠানে বলিউডের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
রাজ কাপুর এবং তাঁর অবদান:
রাজ কাপুর ভারতীয় সিনেমার এক যুগান্তকারী ব্যক্তিত্ব। তাঁকে বলা হয় “দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান”। তাঁর চলচ্চিত্রগুলো শুধু বিনোদন নয়, সামাজিক বার্তা দিয়েও মানুষকে মুগ্ধ করত। ‘শ্রী ৪২০’, ‘আওয়ারা’, এবং ‘মেরা নাম জোকার’-এর মতো চলচ্চিত্রগুলো ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান ধরে রেখেছে।
উদযাপনের বিশেষত্ব:
এই উপলক্ষে “রাজ কাপুর ১০০” নামের একটি চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করা হয়। এই উৎসবটি আর.কে. ফিল্মস, ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন এবং জাতীয় চলচ্চিত্র সংরক্ষণাগারের সহযোগিতায় আয়োজিত হয়। এই উৎসবে তাঁর দশটি আইকনিক চলচ্চিত্র ভারতের ৪০টি শহর এবং ১৩৫টি সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়। টিকিটের মূল্য ছিল মাত্র ₹১০০, যাতে সাধারণ মানুষ সহজে এই উৎসবের অংশ হতে পারে। এতে ‘আগ’, ‘ববি’, এবং ‘মেরা নাম জোকার’-এর মতো সিনেমাগুলো পুনরায় প্রেক্ষাগৃহে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের রঙিন মুহূর্ত:
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ কাপুরের পরিবারের সদস্য করিনা কাপুর খান, রণবীর কাপুর এবং কারিশমা কাপুর। এছাড়া বলিউডের অন্যান্য তারকা যেমন আলিয়া ভাট, আমির খান, হৃতিক রোশন, এবং বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রেখা তাঁদের উপস্থিতি দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরও বিশেষ করে তুলেছিলেন। এছাড়া করণ জোহর এবং রাজকুমার হিরানির মতো পরিচালকরাও এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য কি ছিল :
রাজ কাপুরের এই উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল তাঁর কর্ম ও অবদানকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। চলচ্চিত্র শিল্পে তাঁর সামাজিক বার্তা এবং শৈল্পিকতার গুরুত্ব বোঝানোই ছিল এর লক্ষ্য।রাজ কাপুরের সিনেমাগুলোতে বারবার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা এবং তাঁদের সংগ্রামের কথা উঠে এসেছে।
উদাহরণস্বরূপ, ‘শ্রী ৪২০’ সিনেমায় দেখা যায় সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং সমাজে পরিবর্তনের প্রয়োজন। বর্তমান সময়েও রাজ কাপুরের কাজ বলিউড এবং ভারতীয় সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলে। তাঁর সিনেমাগুলো যেমন ভারতীয় সমাজকে প্রতিফলিত করে, তেমনি ভবিষ্যৎ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য দিশা নির্দেশ করে। রাজ কাপুরের শতবর্ষ উদযাপন শুধু এক ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো নয়, এটি ছিল ভারতীয় সিনেমার প্রতি ভালোবাসার এক গভীর প্রকাশ। তাঁর কাজ এবং দর্শন প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।