মঙ্গলবার সকাল থেকেই টলিপাড়ায় বেশ শোরগোল পড়েছে। বাঙালির ঝুলিতে আবারো গর্ব করার মতো পুরস্কার আসতে চলেছে হয়তো। এর আগেও অস্কার জিতেছেন বাঙালি পরিচালক সত্যজিৎ রায়। এবারে জানা গেলো ইমন চক্রবর্তীর নতুন জয়ের কথা। না না এখনো তিনি অস্কার জেতেননি। তবে শোনা গিয়েছিল, আসন্ন অস্কারে নাকি মনোনয়ন পেয়েছেন ইমন চক্রবর্তী এবং সুরকার বিক্রম ঘোষ। শোনা গিয়েছিল, অস্কার মঞ্চে সেরা মৌলিক গানের তালিকায় ৮৯টি গানের মধ্যে রয়েছে সঙ্গীত পরিচালক সায়নের সুরে তৈরি ‘ইতি মা’ গান।
অস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে ইমনের গান ‘ইতি মা’। ইন্দিরা ধর মুখার্জি পরিচালিত ছবি ‘পুতুল’-এর এই গানটি গেয়েছেন ইমন চক্রবর্তী। শিশু দিবসের উপলক্ষে এই গান মুক্তি পেয়েছিল ১৪ নভেম্বর। এর পাশাপাশি এই তালিকায় আরও জায়গা করে নিয়েছিল ‘ব্যান্ড অফ মহারাজা’ ছবির বিক্রম ঘোষের সুরে ‘ইশক ওয়ালা ডাকু’ গানটি। স্বাভাবিকভাবেই, সমাজমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিজেদের এই আনন্দ ব্যক্ত করেন দুই বাঙালি শিল্পী। তবে ভালোর সঙ্গে খারাপ তো থাকবেই। এবার তাঁদের এই ‘ অস্কার মনোনয়ন’ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুললেন জনপ্রিয় বাঙালি পরিচালক সুমন ঘোষ!
অস্কার মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সুমন ঘোষ!
সমাজমাধ্যমে ছোট্ট একটি পোস্ট লিখেছেন ‘কাবুলীওয়ালা’ ছবির পরিচালক। লেখা ছোট্ট হলেও প্রশ্নটি তাঁর সরাসরি- “আদৌ কি অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছে এই দুটো গান? আমরা কি নিশ্চিত এই ব্যাপারে? এই দুটো গান তো সবে ঝাড়াই-বাছাইপর্বে রয়েছে! এটুকুই। এখনও মনোনয়ন পায়নি। এমনি মনোনয়ন পর্বের ভোটাভুটিও শুরু হয়নি। শর্টলিস্ট তো ঘোষণা হবে ১৭ ডিসেম্বর। তবে হ্যাঁ, ইমন ও বিক্রমদার কাজ যদি মনোনয়ন পায় অস্কারে খুব খুশি হব। কারণ আমি ইমনের গানের ভক্ত এবং বিক্রমদা আমার সহকর্মী।” এই মন্তব্য করার পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমদের খোঁচাও দিয়েছেন সঠিক খবর যাচাই করার প্রক্রিয়া নিয়ে।
সুমনের পোস্টের জবাবে কি বললেন বিক্রম ও ইমন?
সুমন ঘোষের করা এই পোস্টে বেশ আতে ঘা লাগে ইমনের। এহেন পোস্টের পরেই মুখ খুলেছেন বিক্রম। সংবাদমাধ্যম তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বললেন, “এটা ঠিকই যে আমার গান এখনও অস্কার মনোনয়ন পায়নি। বাছাইপর্বে রয়েছে। কিন্তু ভুললে চলবে না আমার গান রয়েছে অস্কারের মনোনয়ন পাওয়ার অ্যাডভান্সড লিস্টে! হলিউডের বড় বড় ছবির সুর, গান পৌঁছতে পারেনি যেখানে, সেখানে আমাদের একটা এই ছোট কাজ পেরেছে। কিন্তু ওই যে, হিংসুটে বাঙালি!
একটু ভাল করে দেখলেই বোঝা যাবে এই গান ৬-৭ হাজার গানের মধ্যে থেকে বাছাই করে ৮৯টি গানের মধ্যে বিবেচিত হয়েছে। আর কে কে নেই এই তালিকায়? এলটন জন যেমন আছেন, তেমন ‘ডিউন’-এর মতো ছবির গানও! তাহলেই বলুন, এটা কি ছোটখাটো ব্যপার? আমার গান যদি এঁদের গানের সঙ্গে এক তালিকায় জায়গা করে নিয়ে থাকে তাহলে তার তো একটা গুরুত্ব আছে! আর হ্যাঁ, এই বিভাগটি সুরকারদের। এটা সুমন ঠিক বলেছে। ইমন খুবই দারুণ গেয়েছেন, ভাল গান। কিন্তু উনি এই বাছাইপর্বে নেই। একটা উদাহরণ দিলে বোঝাতে সহজ হবে। ‘জয় হো’ গানটির জন্য কি সুখবিন্দর সিং মনোনয়ন পেয়েছিলেন না কি এআর রহমান? অস্কারটা কে পেয়েছিল রহমান না সুখবিন্দর? আবার বলছি, সুমনের এ কথা ঠিক যে আমার গান এখনও অস্কার মনোনয়নে জায়গা করে নেয়নি। কিন্তু এটাও তো ঠিক এই পর্ব থেকেই অস্কার মনোনয়নের জন্য গান বাছাই করা হবে। এই জায়গাতেও কটা লোক পৌঁছতে পারেন?”
সংবাদমাধ্যম যোগাযোগ করেছিলেন ইমনের সঙ্গেও। তিনি কিন্তু বিক্রমের মতো মাথা ঠাণ্ডা করে জবাব দেননি। বরং ইমন চক্রবর্তী সুমন ঘোষের পোস্টের জবাবে খানিক কটাক্ষের সুরেই কথা বলেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “বাহ্! এই না হলে বাঙালি। অবাক হচ্ছিলাম কেউ এখনও কিছু বলছে না কেন? এই তো এবার বললেন!” সুমন ঘোষের কথায় ইমন যে বেশ গোঁসা করেছেন তা ভালোই বোঝা যাচ্ছে।