দক্ষিণী সিনেমা ইন্ড্রাস্টিতে এখন চলছে তুলকালাম কান্ড। ঘটনার সুত্রপাত দক্ষিণী অভিনেত্রী নয়নতারার নতুন সিনেমার ট্রেইলার ঘিরে। ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেয়ারি টেল’ একটি ডকুমেন্টারি সিনেমা। তথ্যচিত্রটি পরিচালনা করেছেন নয়নতারার স্বামী ভিগনেশ শিবন। এই তথ্যচিত্র নিয়েই দাক্ষিণ ভারতে শুরু হয়েছে তুলকালাম কাণ্ড।
অনেকদিন হলোই সম্মুখ সমরে নেমেছেন দক্ষিণী তারকা ধনুষ ও নয়নতারা। অনুমতি ছাড়া ধনুষ প্রযোজিত প্রায় ১০ বছর আগের সিনেমা ‘নানুম রাউডি ধান’ সিনেমার ফুটেজ নিজের তথ্যচিত্রে ব্যবহার করেছেন নয়নতারা। এমনই অভিযোগ ধনুষ এনেছেন নয়নতারার বিরুদ্ধে।
অপরদিকে নায়িকার দাবি তিনি একাধিকবার অনুমতি চেয়েও পাননি। এবারে তথ্যচিত্রের ট্রেইলার সামনে আসতে এই বিষয়ে সরব হয়েছেন ধনুষ। বিষয়টি নিয়ে নয়নতারা ও তাঁর স্বামী ভিগনেশকে আগেই ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের নোটিস পাঠিয়েছিলেন ধনুষ। এবার তারকা দম্পতির বিরুদ্ধে আরও বড়সড় পদক্ষেপ নিলেন ধনুষ।
নয়নতারা ও ভিগনেশের বিরুদ্ধে এবার বড় পদক্ষেপ ধনুষের
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেয়ারি টেল’। তথ্যচিত্রের অভিনেত্রীর দাবী, এই তথ্যচিত্রের জন্য ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া তামিল সিনেমা ‘নানুম রাউডি ধান’-এর ৩ সেকেন্ডের ঝলক ব্যবহার করার অনুমতি তিনি চেয়েছিলেন। যদিও এই সিনেমাতে নয়নতারা নিজে অভিনয় করেছেন তবুও তিনি ধনুষের অনুমতি প্রার্থী ছিলেন। কারণ ধনুষ ছবিটির প্রযোজক। কিন্তু দিনের পর দিন এই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন ধনুষ। তবে ট্রেইলার সামনে আসতেই আচমকা ১০ কোটি টাকার আইনি নোটিস পাঠালেন ধনুষ।
এই ঘটনা তো কিছুটা পুরোনো। চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো এবারে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন দক্ষিণী অভিনেতা-প্রযোজক ধনুষ। এরআগেই ধনুষের কর্মকাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় সোচ্চার হন নয়নতারা। যাতে ধনুষকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, এই খারাপ কাজে ধনুষের চরিত্র ফাঁস হয়ে গেলো। যে ব্যক্তিত্ব ধনুষ পর্দায় তুলে ধরেন সেটির অর্ধেকও তাঁর ব্যক্তিত্বে নেই। তিনি পর্দায় যা বলেন তা নিজে অনুশীলন করেন না। নয়নতারার কথায় তাঁর এবং তাঁর সঙ্গীর সাথে তো একেবারেই না।
নয়নতারার এই পোস্ট নিয়ে সোশাল মিডিয়া বা কোনও সংবাদমাধ্যমে এখনও অবধি ধনুষ কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে অভিনেতার আইনজীবী আগেই আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এবারে সেই হুঁশিয়ারির নেপথ্যে পদক্ষেপও নিয়ে নিলেন ধনুষ। তাঁর আইনজীবীই মাদ্রাজ হাই কোর্টে ধনুষ ও তাঁর প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে মামলাটি করেছেন নয়নতারা ও তাঁর স্বামী ভিগনেশ শিবন তাঁদের প্রযোজনা সংস্থা রাউডি পিকচার্স প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। বুধবারই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে এবং বিচারপতি নয়নতারা-ভিগনেশদের জবাব জানতে চেয়েছেন বলেই খবর।
সিনেমার প্রযোজক বলেই কি সর্বেসর্বা ধনুষ?
প্রযোজক বলেই কি সম্রাট হয়ে গিয়েছেন, শিল্পীর জীবন কি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন ধনুষ? শিল্পীর স্বাধীনতা কি কেড়ে নিচ্ছেন, সেটের সকলের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন। এসবের অধিকার কি তাঁর আদৌ আছে, প্রশ্ন তুলেছেন নয়নতারা। সম্রাটের পছন্দ নয় বলে, পান থেকে চুন খসলেও আইনি খাঁড়া নেমে আসতে পারে বলে কটাক্ষও করেছেন তিনি। ১০ বছরেরও বেশি সময় আগে মুক্তি পাওয়া ছবি নিয়ে কেউ নীচে নামতে পারেন, তা নয়নতারার কল্পনাতীত বলে মন্তব্য করেন নয়নতারা।
সিনেমাতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করলেও সেই সিনেমার অপর অধিকার নেই তাঁর নিজেরই। ধনুষের তরফের ১০ কোটির আইনি নোটিশ পাবার পর তাঁর বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় গত রবিবার একটি খোলা চিঠি লিখেছেন নয়নতারা। সেখানে ধনুষের বিরুদ্ধে ভালোমন্দ মিলিয়ে বহু অপ্রিয় সত্য উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে অবাক করা বিষয় হলো নায়িকার এই পোস্টে সহমত জানিয়েছেন ধনুশের অন্য সহঅভিনেত্রীরাও। সেই তালিকায় রয়েছে পার্বতী থিরুভোথু, অনুপমা, পরমেশ্বর, শ্রুতি হাসান, ঐশ্বর্য লক্ষী সহ একাধিক অভিনেত্রী।