বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হল অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তীর। খুব বেশি ধারাবাহিকে দেখা যায় না তাঁকে। ধারাবাহিকের থেকে বেশি ডেইলি লাইফ ব্লগ করেই পরিচিত সায়ক। তবে ধারাবাহিকে কাজ করা প্রায় সকলেরই স্বপ্ন থাকে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা চরিত্রে, তাঁর প্রোডাকশনে একবার কাজ করবেন। সায়কের সেই স্বপ্নই এবার পূরণ হতে চলেছে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করবেন বলে কেরিয়ারের শুরুর দিন থেকে অপেক্ষা করেছেন। তবে খুব সহজে টার্গেটে পৌঁছতে পারেননি। তবে এতদিন বাদে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে অভিনেতা ও ইউটিউবারের।
শুধুই ছোটপর্দার অভিনয় নয়, তাঁর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও বিপুল জনপ্রিয় সায়ক। প্রতিদিনের জীবনের নানা খুঁটিনাটি তিনি ভাগ করে নেন দর্শকের সঙ্গে। এ বার স্টার জলসার নতুন ধারাবাহিক ‘চিরসখা’য় দেখা যাবে অভিনেতাকে। যে ধারাবাহিকে প্রথমবার জুটি বাঁধতে চলেছেন সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও অপরাজিতা ঘোষ দাস।
নতুন ধারাবাহিকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সায়ক; সঙ্গে চলছে ব্লগিং জোরকদমে-
নতুন ধারাবাহিকে তাঁর চরিত্র নিয়ে খুব বেশি কিছু এখনই বলতে পারেন নি অভিনেতা। তবে জানান, ধারাবাহিকের প্রতিটি ক্ষেত্রে নাকি রয়েছে জোরদার চমক। একেবারে অন্যরকম রূপে দেখা যাবে তাঁকে। যা এর আগে কখনও দেখেননি দর্শক। তবে একেবারেই পারিবারিক একটি গল্প। বেশ হাসিখুশি একটি ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে সায়ককে। যিনি বাড়িতে পা রাখলেই আনন্দের পরিবেশ তৈরি হয়। তবে চরিত্রটা কী, সেটা আপাতত সারপ্রাইজ় হিসেবেই রাখলেন অভিনেতা।
এরমধ্যেই ধারাবাহিকের শুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে। জোরকদমে কাজ করছেন সায়ক আর কাজ করে আনন্দও পাচ্ছেন অভিনেতা। নিজের থেকে এত অভিজ্ঞ-সিনিয়র সব অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রয়েছেন এই ধারাবাহিকে। প্রতিদিন তাঁদের থেকে নতুন নউন শিখছেন। অপরাজিতার ব্যাপারে সায়ক বলেন, তাঁকে এখনও সেই ছোটবেলায় দেখা চরিত্র ‘হিয়া’ বলেই চেনেন তিনি। তবে তাঁর মনেই হচ্ছে না তিনি ওই হাউজ়ে নতুন কাজ করছেন। সকলে এত ভালোভাবে তার সঙ্গে মিশছেন যে তিনি আপ্লুত। সঙ্গে পরিচালক দিগন্ত সিনহার ব্যাপক প্রশংসা করেন অভিনেতা। তিনি তুলনাতীত মানুষ বলে জানান তিনি।
এক সময় নাকি ডেইলি ভ্লগিংয়ের কারণে খুব বেশি কাজের অফার মিলত না সায়কের। অফার এলেও পারিশ্রমিক ছিল ভীষণ কম। সেসবের কারণ সায়কের এখনও অজানা, তবে দিনের শেষে শিল্পী তো চাইবেই শিল্পের কদর হোক, তাই আর বেশি দূর কথা এগোতেন না তিনি।
কীভাবে এলো লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের সুযোগ?
তবে, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার এই সুযোগ তাঁর জীবনে স্বপ্নের মতো। তিনি নাকি একবার লীনার ক্যাফেতে গিয়ে একটা ভ্লগ করেছিলেন। আর লীনা সেদিন নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সায়ক নাকি লীনাকে দেখেই ছুটে গিয়ে বলেছিলেন ‘তুমি কি জানো আমি তোমায় ২০১০ সাল থেকে মেসেজ করেছি। দিদি একটা কাজ দাও, তোমার সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’ সায়কের মুখে একথা শুনে নাকি বেশ অবাক হয়েছিলেন লীনা। তখন তাঁকে নিজের ফোন থেকে মেসেজ খুঁজে বের করে দেখান সায়ক।
তবে খুব সহজে রাজি হননি লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। সায়ককে শর্ত দিয়েছিলেন, অডিশন দিতে হবে। অভিনেতাও সঙ্গে সঙ্গে রাজি হন। শুধু লেখিকাকে বলেন, ‘দিদিকে বলেছিলাম শুধু অডিশনের সুযোগটুকু দিও। কথা রেখেছেন তিনি। একদিন ডাকেন। তিন রাউন্ড অডিশন হয়। ফাইনালি সুযোগটা পাওয়া। আসলে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি সম্মানের জায়গা থেকেই একটা ভয় আছে মনের ভিতর। যেটা খুব কম মানুষের প্রতিই আমার রয়েছে।’ তবে এরপর ধারাবাহিকে কাজের জন্য ব্লগের কাজ বন্ধ রাখবেন না অভিনেতা। মানুষের ভালবাসা ফিরিয়ে দেওয়ার সাধ্য তাঁর নেই বলেই জানান তিনি।