বলিউডের সুপারস্টার সলমান খান সম্প্রতি বান্দ্রার একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন, আর সেই মুহূর্তটি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। সলমানের মতো তারকার উপস্থিতি বরাবরই জনসাধারণ এবং গণমাধ্যমের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। তবে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে তার চারপাশে নেওয়া নিরাপত্তার বিষয়টি।
সলমান খানের সাধারণ পোশাক, কিন্তু নজরকাড়া উপস্থিতি…
ভোট দেওয়ার দিন সলমানকে দেখা যায় বেশ সাধারণ পোশাকে। তিনি পড়েছিলেন একটি টি-শার্ট এবং নীল রঙের ডেনিম প্যান্ট। মাথায় কালো টুপি আর চোখে সানগ্লাস পরে সলমান গাড়ি থেকে নেমে সরাসরি ভোট কেন্দ্রে চলে যান। পুরো ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল। ভোট দিয়ে বেরিয়ে তিনি বাইরে দাঁড়ানো ভক্তদের উদ্দেশে হাত নাড়েন এবং ফ্লাইং কিস দেন। ভক্তরা আনন্দে মেতে ওঠেন এবং তার এক ঝলক দেখার জন্য যেন মুখিয়ে ছিলেন। এই ভোট কেন্দ্রটি ছিল সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত, যা এই ঘটনাকে আরও অনন্য করে তুলেছে।
সলমান খানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। তাকে ঘিরে রেখেছিল ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তিগত বডিগার্ড। শুধু তাই নয়, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আকাশে উড়ছিল অত্যাধুনিক ড্রোন। এতটাই শক্তিশালী ছিল এই ব্যবস্থা যে একটি মাছি পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করতে পারত না। এমন নিরাপত্তা সাধারণত সেলিব্রিটিদের ক্ষেত্রে কমই দেখা যায়।
প্রাণনাশের হুমকির মধ্যেও দায়িত্বশীল নাগরিক সলমান খান..
এত কড়া নিরাপত্তার কারণ সলমান খানের জীবনে আসা বিভিন্ন হুমকির ঘটনা। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাবা সিদ্দিকি নিহত হওয়ার পর থেকে সলমান প্রায়ই প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন। সম্প্রতি হায়দরাবাদে ‘সিকান্দার’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন আবারও তিনি এমন একটি হুমকি পান। এই পরিস্থিতিতে তার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
সলমানের দীর্ঘদিনের দেহরক্ষী শেরা তার নিরাপত্তা দলের দায়িত্বে রয়েছেন। দলে যুক্ত করা হয়েছে প্রাক্তন আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের। এছাড়া হায়দরাবাদ এবং মুম্বাই পুলিশের একটি বিশেষ টিমও সলমানকে সুরক্ষা দিচ্ছে। সবমিলিয়ে, তার নিরাপত্তায় কাজ করছে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ জনের একটি দল। এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সলমানের পরিবার এবং ভক্তদের জন্য একটি বড় সান্ত্বনা, কারণ এর মাধ্যমে তার জীবনের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে।
সলমান খানের জনপ্রিয়তা এবং তাকে ঘিরে মানুষের ভালোবাসা প্রতিদিন যেন নতুনভাবে প্রকাশ পায়। তার এক ঝলক দেখার জন্য হাজার হাজার ভক্ত অপেক্ষা করেন। তবে, একজন তারকা হওয়ার পাশাপাশি তার জীবনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, সেটাও আমাদের ভাবতে বাধ্য করে। জনপ্রিয়তা যেমন ভালোবাসা নিয়ে আসে, তেমনই আনে হুমকি আর ঝুঁকিও।
এই ঘটনা থেকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়—ভোট দেওয়া শুধু একজন সাধারণ মানুষের দায়িত্ব নয়, তারকারাও এই দায়িত্ব পালন করতে পিছপা হন না। সলমান খানের মতো একজন সুপারস্টারের ভোট দিতে আসা সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে পারে।
সবশেষে, সলমান খানের উপস্থিতি যেমন ভোট কেন্দ্রকে আলোচিত করেছে, তেমনি তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জীবনের নানা দিক নিয়েও মানুষকে নতুন করে ভাবিয়েছে। তার প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা এবং তার জীবনের প্রতি সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের শিখিয়ে দেয় যে সাফল্যের সঙ্গে আসে অনেক বড় দায়িত্ব।