অভিনেতা এবং পরিচালক সব্যসাচী চৌধুরী তাঁর নতুন শর্ট ফিল্ম ‘নিষ্পত্তি’ নিয়ে বেশ উত্তেজিত। এই শর্ট ফিল্মটি কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (KIFF) ইন্ডিয়ান শর্ট ফিল্মস বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য মনোনীত হয়েছে। সব্যসাচী চৌধুরী নিজে এর পরিচালনা ও গল্প লিখেছেন, এবং ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন আরও কয়েকজন শিল্পী, যেমন পায়েল দে, সোমিশুভ্র গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌম্য মুখোপাধ্যায়।
সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় কেমন ছিল ‘নিষ্পত্তি’ ছবির মূল চরিত্রে….
ছবিটির গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে একজন পুরুষ, সত্যপ্রকাশ চক্রবর্তী, যিনি সারা জীবন নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে গেছেন। তাঁর আত্মদম্ভ, উচ্চতর ভাবনা এবং একগুঁয়ে মনোভাবের কারণে তাঁর পরিবার ভেঙে যায়। ছবির মূল গল্পটা বলতে গেলে জীবনের শেষ দিনগুলোর পটভূমিতে। সত্যপ্রকাশ একদিন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পান। বহুদিন পর তাঁর পুরোনো এক বন্ধু ফিরে আসে এবং তাকে এক মিনিট সময় দেয়, যাতে সে তার জীবনে কিছু পরিবর্তন আনতে পারে। সত্যপ্রকাশ এই এক মিনিটের সময়ে কী পরিবর্তন আনেন এবং সে কীভাবে নিজেকে বদলায়, তা নিয়ে ছবির গল্প আবর্তিত হয়। ছবিটির দৈর্ঘ্য মাত্র ১৯ মিনিট, কিন্তু এতে জীবনের বড় ধরনের শিক্ষা দেয়া হয়েছে।
‘নিষ্পত্তি’ ফিল্মের প্রস্তুতি ও নির্মাণ নিয়ে সব্যসাচী চৌধুরীর আলোচনা….
এই শর্ট ফিল্মের প্রস্তুতি ও নির্মাণ নিয়ে সব্যসাচী চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের একটি চ্যানেল আছে, ‘ন্যাড়া ছাদের গপ্পো’, যেখানে আমরা অডিও স্টোরি বানিয়ে ইউটিউবে প্রকাশ করি। এক–দেড় বছর ধরে আমরা এই কাজ করছি। শখের কাজ হিসেবে শুরু করলেও, পরে সিদ্ধান্ত নিলাম ভিজ্যুয়াল কিছু তৈরি করি। সেই ভাবনা থেকেই এই শর্ট ফিল্মটি বানানো।’’ ছবির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে আরও বলেন, ‘‘এই কাজটা শুরু করার সময়, আমরা মনে করেছিলাম ছোট কাজ করব। তবে এবার ‘কিফ’-এ সিলেক্ট হওয়াটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’’
কিফে মনোনয়ন পাওয়ার পর নতুন প্রকল্পের দিকে নজর….
ছবির প্রধান চরিত্র সত্যপ্রকাশ চক্রবর্তী চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুমন্ত মুখোপাধ্যায়। এই চরিত্রটি এমন একজন পুরুষের, যার পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়েছে তাঁর নানা সমস্যার কারণে। একদিন, মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছানোর পর, সে পুরোনো বন্ধুর দেখা পায় এবং তার জীবনে কিছু পরিবর্তন আনতে চায়। ছবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন রূপম সিংহ এবং মৃদুল এম মজুমদার। ছবির শুটিংয়ের সময় সব্যসাচী তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে বেশ উপভোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে এই শিল্পীদের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। সবাই দারুণ কাজ করেছেন।’’
সব্যসাচী আরও জানান, টেলিভিশনে দীর্ঘদিন কাজ না করার পর, এখন তিনি চলচ্চিত্র এবং ওয়েব সিরিজ নিয়ে অনেক কিছু ভাবছেন। ‘‘এখনই আমি মেগা ধারাবাহিকে কাজ করছি না, কারণ তাতে অন্য কাজ করার সময় পাওয়া যায় না,’’ বলেন তিনি। তবে, ডিসেম্বরে তাঁর নতুন ছবি ‘রাপ্পা রায়’ মুক্তি পাবে, এবং তিনি আরও একটি ওয়েব সিরিজ়ের কাজ করছেন, যা ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হবে।
ছবিটি ‘কিফ’-এ সিলেক্ট হওয়া যে তাঁদের জন্য বিশেষ কিছু, তা সবাই মেনে নিয়েছেন। পায়েল দে বলেন, ‘‘আমরা অনেক আশা নিয়ে ছবিটি বানিয়েছি। এত কষ্ট করে কাজ করলেও, আশা করি দর্শকরা ছবিটি ভালোভাবে গ্রহণ করবেন।’’ আর সব্যসাচী বলেন, ‘‘এটি আমাদের জন্য এক ধরনের ‘উপরি পাওনা’। আমরা পরের বছর আরও একটি শর্ট ফিল্ম বানানোর পরিকল্পনা করেছি, তবে তা অন্য কোনো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পাঠানো হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের ইচ্ছে আছে, আগামী বছর বড় কিছু কাজ করব, যাতে আরো ভালোভাবে কিছু তৈরি করা যায়।’’
তাদের পরবর্তী প্রোজেক্টের মধ্যে ৫ পর্বের একটি ওয়েব সিরিজও রয়েছে, যা ইউটিউব এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাবে। এই কাজগুলোর মাধ্যমে সব্যসাচী এবং তাঁর টিম নতুন এক যাত্রা শুরু করেছেন, যেখানে তারা আরও বড় আঙ্গিকে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন।