নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, যাঁদের সিনেমা মানেই দর্শকের জন্য একটা বিশেষ উপহার, তাঁরা আবারও একটি অসাধারণ গল্প নিয়ে আসছেন। নতুন সিনেমা ‘আমার বস’ মুক্তি পেতে চলেছে ২০২৫ সালের ১৬ মে। বড়দিনের দিনই পরিচালক জুটি এই ঘোষণাটি করে তাঁদের অনুরাগীদের জন্য বড় উপহার দিলেন।
রাখি গুলজারের প্রত্যাবর্তন….
এই সিনেমার অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ হল, বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘রাখি গুলজারের’ দীর্ঘ একুশ বছর পর বাংলা সিনেমায় প্রত্যাবর্তন। শেষবার তাঁকে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘শুভ মহরত’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল। এরপর যদিও গৌতম হালদারের ‘নির্বাণ’-এ অভিনয় করেছিলেন, তবে সেই ছবি খুব বেশি দর্শক দেখতে পাননি কারণ এটি শুধুমাত্র ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মুক্তি পেয়েছিল। এবার ‘আমার বস’ ছবির মাধ্যমে আবারও বাংলা সিনেমার মঞ্চে তিনি ফিরে আসছেন।
গত জানুয়ারিতে কলকাতায় শুটিং করেছেন রাখি গুলজার। শহরের সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তিনি সিনেমার শুটিং উপভোগ করেছেন। শোনা যায়, শুটিং সেটে রাখির এনার্জি ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ভিক্টোরিয়ার সামনে ফুচকা খাওয়া হোক বা ঝরঝরে বাংলা সংলাপ বলা—প্রবীণ এই অভিনেত্রী যেন নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের মতোই পরিশ্রম করেছেন।
গল্প ও সিনেমার আবহ…
.‘আমার বস’-এর গল্প এখনও সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে আসেনি। তবে জানা গিয়েছে, এটি একটি আবেগপ্রবণ গল্প, যা কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক ও মানুষের জীবনে এর প্রভাব নিয়ে নির্মিত। ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি অনুপ্রেরণাদায়ী সম্পর্ক, যা দর্শকের মনে ছাপ ফেলবে। নন্দিতা-শিবপ্রসাদ জুটির সিনেমাগুলি বরাবরই গল্পভিত্তিক এবং সামাজিক বার্তা দেয়। যেমন ‘ইচ্ছে’, ‘বেলা শেষের মতো’ সিনেমাগুলি দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে। তাঁদের প্রতিটি সিনেমাই গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় মুক্তি পেয়ে বক্স অফিসে সফল হয়েছে। এবারও তাঁরা একই ধরনের সাফল্যের আশা করছেন।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশংসা…
এই ছবিটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসা অর্জন করেছে। গোয়া ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটি দেখানো হয়েছে এবং দর্শক ও সমালোচকদের থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। ‘আমার বস’ সেখানে সাতটি আন্তর্জাতিক সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। নন্দিতা-শিবপ্রসাদের সিনেমা মানেই দর্শকদের জন্য একটি বিশেষ উপলক্ষ। তাঁদের বেশিরভাগ ছবিই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে মুক্তি পায় এবং দর্শকেরা পরিবার নিয়ে সিনেমা হলে ভিড় করেন। যদিও গত কয়েক বছরে তাঁদের ছবি পুজোর সময়েও মুক্তি পেয়েছে এবং সেগুলোও সফল হয়েছে, তবে গ্রীষ্মের ছুটির সঙ্গে তাঁদের ছবি যেন সমার্থক হয়ে উঠেছে।
বাংলা সিনেমার নতুন অধ্যায়….
বাংলা সিনেমার জন্য এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত। একদিকে যেমন রাখি গুলজারের প্রত্যাবর্তন এই ছবিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে, অন্যদিকে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। পরিচালনার পাশাপাশি তাঁর অভিনয় দর্শকদের জন্য আরেকটি আকর্ষণ হতে চলেছে।
২০২৫ সালের গ্রীষ্মে ‘আমার বস’ দর্শকদের জন্য একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা হবে বলেই আশা করা যায়। এই ছবির গল্প, অভিনয় —সব মিলিয়ে এটি একটি বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা। নন্দিতা-শিবপ্রসাদ তাঁদের ছবির মাধ্যমে বারবার প্রমাণ করেছেন, বাংলা সিনেমা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং এটি জীবনের গল্প বলে, আবেগকে স্পর্শ করে। ‘আমার বস’ সেই ধারারই আরেকটি সংযোজন। ১৬ মে মুক্তি পাওয়া এই ছবির জন্য দর্শকেরা এখন থেকেই অপেক্ষায় রয়েছেন।