ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী, সম্প্রতি তার মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোকের মধ্যে রয়েছেন। তার মা, নন্দিতা সেনগুপ্ত, দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যা নিয়ে ভুগছিলেন। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নন্দিতার বয়স ছিল প্রায় ৭৬ বছর। তার মৃত্যুর খবর শুনে ঋতুপর্ণা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং বর্তমানে তিনি এই কঠিন সময়ে তার পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় কিছুটা হলেও সামলাচ্ছেন।
মায়ের মৃত্যুতে গভীরভাবে প্রভাবিত ঋতুপর্ণা …
নন্দিতা সেনগুপ্ত বেশ কিছু দিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। ডায়ালিসিস চলছে, এবং একাধিক শারীরিক জটিলতার কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল। এই সময়ের মধ্যে ঋতুপর্ণা তার মাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য সর্বক্ষণ পাশে ছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মায়ের অবস্থা অত্যন্ত সংকটপূর্ণ ছিল এবং ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। ঋতুপর্ণা তার মায়ের প্রতি এতটাই নির্ভরশীল ছিলেন যে, তার মায়ের সুস্থতা তার জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত শনিবার তার মা চলে যাওয়ায়, তিনি যে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন, সেটা খুব স্বাভাবিক।
ঋতুপর্ণার পাশে এই সময় তার ভাই এবং আপ্তসহায়ক শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় ছিলেন। এছাড়া, ঋতুপর্ণার স্বামী সঞ্জয় চক্রবর্তী এবং মেয়ে ঋষণা সিঙ্গাপুরে থাকলেও, তারা এই কঠিন সময়ে কলকাতার দিকে রওনা দিয়েছেন। সঞ্জয়, ঋষণা ও ঋতুপর্ণার ভাই সবাই মায়ের শেষকৃত্যে অংশ নিতে শহরে ফিরছেন। যদিও ঋতুপর্ণার ছেলে অঙ্কন তার পড়াশোনার জন্য বস্টনে রয়েছে এবং শোকের মধ্যেও তার ভিডিও কলের মাধ্যমে দিদাকে শেষবার দেখে নেওয়ার সুযোগ হয়েছে।
ঋতুপর্ণার জন্য এই মুহূর্তটি অত্যন্ত কঠিন। তার মা তার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ছিলেন এবং মা হারানোর শোক থেকে তিনি এখনও পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেননি। তার সহকর্মী এবং পরিবারের সদস্যরা তাকে যথাসম্ভব সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে, শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় জানান, ঋতুপর্ণা মায়ের মৃত্যুর পর একেবারে নিরব হয়ে গেছেন। কথার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। মায়ের মৃত্যু তার জীবনে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, যা তিনি সহজে সামলাতে পারছেন না।
এদিকে, ঋতুপর্ণা তার মায়ের জন্য সবসময়ই এক বিরাট সহায়ক শক্তি ছিলেন। শাশুড়ির গুরুতর অসুস্থতার খবর পেয়ে, সঞ্জয় কলকাতায় উড়াল দিয়েছিলেন এবং সেই সময় ঋতুপর্ণার ভাইও সঙ্গে ছিলেন। ঋতুপর্ণা জানতেন যে, মা সঠিকভাবে সুস্থ না হলে তার জীবনের অর্থ অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে। মা এবং ঋতুপর্ণার সম্পর্ক ছিল একেবারে অনন্য, এবং তাদের মধ্যে ছিল এক গভীর বন্ধন, যা মায়ের মৃত্যুতে একেবারে ভেঙে পড়েছে।
ঋতুপর্ণার পাশে পরিবারের সদস্যরা, শোকের পরিবেশ…
নন্দিতা সেনগুপ্তর শেষকৃত্য কালীঘাট শ্মশানে সম্পন্ন হবে। তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা মাকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে চাইছেন। ঋতুপর্ণা এবং তার পরিবার এখন এই কঠিন সময় পার করতে যাচ্ছে, তবে আশার কথা এই যে, তারা একে অপরের পাশে আছেন এবং শোকের মধ্যে একে অপরকে সহায়তা করছেন।