হুমায়ুন আহমেদের গল্পে অভিনয় করবেন মহানায়ক মিঠুন চক্রবর্তী। পরিচালক তাঁর জন্য সাজিয়েছেন বাংলাদেশের গপ্প। আজও দর্শকের মন জুড়ে আছে ‘সহজ পাঠের গপ্পো’ সিনেমার জাদু। জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছিল পরিচালক মানসমুকুল পালের এই ছবি। তিনিই এবার বাংলাদেশের গল্পে মিঠুন চক্রবর্তীর মেলবন্ধন ঘটাবেন।
‘সহজ পাঠের গপ্পো’র পর বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি বড়পর্দায় তুলে ধরতে চেয়েছিলেন পরিচালক। নানা কারণে সেই কাজ শুরু করা হয়নি। তা বলে হাল ছাড়ার পাত্র মানস একদমই নন। সেই স্বপ্ন চোখে নিয়েই আবার নিজের প্রিয় নায়ক মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে নতুন ছবির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মানস।
মিঠুনের বিপরীতে অভিনয় করবেন বাংলাদেশের নায়িকা আফসানা মিমি
সঙ্গে রয়েছে আরও চমক। মিঠুনের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যাবে বাংলাদেশের নায়িকা আফসানা মিমিকে। হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে পরিচালক লিখবেন এই সিনেমার চিত্রনাট্য। যত শীঘ্র সম্ভব এই কাজ সারতে তিনি এবার পাড়ি দিচ্ছেন বাংলাদেশ।
অনেকেই হয়তো জানেন, নিজের সিনেমার চিত্রনাট্য নিজেই লেখেন মানস। কিন্তু এবার তা লেখার আগে বাংলাদেশ যেতে হবে কেন? সংবাদমাধ্যমের করা এই প্রশ্ন শুনেই পরিচালকের জবাব, “আসলে হুমায়ুন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের অনেক জায়গার উল্লেখ থাকবে। সেই কারণেই ঢাকা, কিশোরগঞ্জ-সহ একাধিক ঐতিহ্যবাহী জায়গায় যাওয়ার কথা। যদি জায়গাগুলো দেখা থাকে তবেই তার সঠিক উপলব্ধি আমার মধ্যে থাকবে। আর আমি চিত্রনাট্য সেভাবে লিখতে পারব।”
চিত্রনাট্য লিখতে বাংলাদেশ পাড়ি দিচ্ছেন পরিচালক মানসমুকুল
আগামী সপ্তাহেই বাংলাদেশে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মানস। উপন্যাসে যেসব জায়গার সন্ধান তিনি পেয়েছেন, নিজে চোখে সেসব দেখে তা ফুটিয়ে তুলতেই বাংলাদেশ যাচ্ছেন তিনি। সেখানে গিয়ে তাঁর আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে। ওপার বাংলার বেশ জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফসানা মিমি। যৌবনে ভক্তরা তাঁর জন্য যেমন পাগল ছিলো, ৫৫ বছরে এসে সেই পাগলামিতে ভাটা পড়েনি একটুও।
তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ‘চিত্রা নদীর পারে’ সিনেমা দেখা পর থেকেই মিমির বেশ অনুরাগী মানস। ‘নদীর নাম মধুমতী’, ‘প্রিয়তমেষু’র মতো ছবিও রয়েছে অভিনেত্রীর ঝুলিতে। তবে গণ অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে এখন দেশ চালাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। এই পরিস্থিতিতে সেদেশে গিয়ে শুটিং করা কতটা সম্ভবপর হবে সেই নিয়ে রয়েছে দ্বিধা।
তবে সংবাদ মাধ্যমের করা এই প্রশ্নের উত্তরেও মানস জানান, তিনি পারবেন। এমনটাই বিশ্বাস আছে মানসের। তিনি বলেন, “আমি এখন সবে চিত্রনাট্য লেখার কাজে হাত দিচ্ছি। তার আগে আমার তিনটি ছবির লাইন-আপ রয়েছে। সেই কাজ শেষ করেই এই নতুন কাজ শুরু করতে পারব। ততদিনে শুটিং নিশ্চয়ই করতে পারব সেখানে”, বললেন পরিচালক।
উল্লেখ্য, ‘সহজ পাঠের গপ্পো’র সাফল্যের পর কলকাতার প্রায় প্রত্যেকটা প্রযোজনা সংস্থা থেকেই ছবি তৈরি করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন মানস। তবে পরিচালকের পাখির চোখ দীনেশ গুপ্তর বায়োপিক। বার বার বাধা এসেছে। শুধু টাকার জন্য নয়, কখনও প্রকৃতির সঙ্গে, কখনও আবার নিয়তির সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে মানসকে।
২০২০ সালেই শুটিং শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু শুটিংয়ের ঠিক চার দিন আগেই বিপত্তি। সারা দেশে লকডাউন। সমস্ত কিছু ওলটপালট হয়ে যায়। মানসের এই ছবিতেই কিংবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ের কথা ছিল। কিন্তু করোনা কালেই প্রাণ হারালেন বাঙালির প্রিয় অভিনেতা। তবে আজও দীনেশ গুপ্তর গল্প বড়পর্দায় তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর মানস।
সেই সঙ্গে নতুন কাজগুলোও চালিয়ে যাচ্ছেন সমান্তরালভাবে। মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে নতুন ছবির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন পরিচালক মানসমুকুল পাল। এবার মিঠুনের বিপরীতে দেখা যাবে বাংলাদেশের নায়িকা আফসানা মিমিকে। হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে পরিচালক লিখবেন চিত্রনাট্য।