আর জি কর কাণ্ডকে ঘিরে দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ। গতকাল রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে পালন করা হল মানববন্ধন। জমায়েত মিছিলে সামিল হয়েছেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রির বহু তারকা। বিদেশ ভ্রমন সেরে আন্দোলনে পা মিলিয়েছেন অভিনেতা ও সাংসদ দেব। এবার নারী সুরক্ষার কথা বলতে গিয়ে রাজ্যের কন্যাশ্রী এবং রূপশ্রী প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ শাসক দলের সাংসদ দেব
আরজি করের পাশে দেব
প্রসঙ্গত, আর জি কর ঘটনার সময় বান্ধবী রুক্মিণীর সঙ্গে বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন অভিনেতা দেব। গত ১৪ই আগস্ট মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল দেবের নতুন ছবি “খাদান”-এর টিজার। তবে রাজ্যের এই উত্তাল পরিস্থিতিতে সেখান থেকে তার আসন্ন ছবি “খাদান” – এর টিজার মুক্তির ডেট পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের মাধ্যমে। এরপর তাকে আর জি কর প্রসঙ্গে আর কোনো পোস্ট করতে দেখা যায়নি, সেই কারণে নেটিজেনদের চূড়ান্ত কটাক্ষের শিকার হতে হয় অভিনেতাকে। যদিও দেশে ফেরার পরই আর্টিস্ট ফোরামের আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যায় তৃনমূল সাংসদ দেবকে। সকল তারকাদের সঙ্গে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান দেবও।
এরপর তারকা সাংসদ দেব ঘাটালের একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তাকে আর জি কর প্রসঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় । সেই বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই তিনি পশ্চিমবঙ্গের নারীদের উন্নতির জন্য শুরু করা দুটি প্রকল্প কন্যাশ্রী এবং রুপশ্রী সম্বন্ধে বলেন রাজ্যের মেয়েদের সুরক্ষিত না রাখতে পারলে এই সমস্ত প্রকল্পের কোনো ভিত্তি নেই। এমন নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে তিনি তীব্র ধিক্কার জানান। দেবের মতে, এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তিনি বললেন এমন পাশবিক ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। এরপর যাতে আর কোনো মহিলার নাম তিলোত্তমা না রাখতে হয় সেই দিকে নজর দেওয়া উচিত। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছেন আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু বলছেন আবার অপরদিকে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আবার অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কিছু বলছেন। তার মতে এটা একে অপরকে দোষারোপ করার সময় নয় কারণ এটা শুধুমাত্র পশ্চিমবাংলা বা অন্য কোনো রাজ্যের একান্ত সমস্যা নয়। এটা গোটা ভারতবর্ষের সমস্যা।
কন্যাশ্রী , রূপশ্রী নিয়ে তোপ দাগলেন নায়ক
এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তারই সঙ্গে রাজ্যের প্রকল্পগুলি নিয়ে আরো বললেন, কন্যাশ্রী , রূপশ্রী অথবা বেটি বাঁচাও এই সমস্ত প্রকল্পের কোনো মানে আর অবশিষ্ট থাকেনা যদি আমরা আমাদের দেশের নারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হই। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত প্রত্যেকটি রাজ্যের সমস্ত দলগুলিকে নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করে আলোচনা করা। এই সমস্ত নিন্দনীয় ঘটনা কীভাবে আটকানো যাবে অথবা এই প্রসঙ্গে কী করা উচিত অপরাধীদের কেমন শাস্তি দেওয়া হবে সেই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করা দরকার বলে মনে করেন অভিনেতা ও সাংসদ দীপক অধিকারী।
উল্লেখযোগ্য রাজ্যের পক্ষ থেকে বিধানসভায় পাশ করানো হয়েছে অ্যান্টি রেপ বিল “অপরাজিতা”। তবে এই বিল পাশ হলেও স্তব্ধ হয়ে যায়নি প্রতিবাদের ঝড়। আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর আরো একবার রাত দখলের কর্মসূচির ডাক দিয়েছে গোটা রাজ্যবাসী।