জি বাংলা চ্যানেলের অন্যতম জনপ্রিয় সঙ্গীত রিয়ালিটি শো হল ‘ সারেগামাপা’। বেশ অনেকদিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে এই শোয়ের নতুন সিজন। এবারে বিচারকদের আসনে ইমন , অন্তরা মিত্র,শান্তনু মৈত্র,জোজো, কৌশিকী চক্রবর্তী, রাঘব চ্যাটার্জী প্রভৃতি স্বনামধন্য গায়ক এবং গায়িকারা রয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই শো টিআরপি তালিকায় নিজের স্থান বজায় করে নিয়েছে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে সারেগামা নিয়ে শুরু হয়েছে বিভিন্ন বিতর্ক। এবার এই রিয়ালিটি শোয়ের মঞ্চে নাট্যশিল্পী গৌতম হালদারের বেণীমাধব উপস্থাপনাকে কটাক্ষ করলেন দর্শকরা। দুদিন আগে জি বাংলা চ্যানেলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নাট্যকর্মী গৌতম হালদারের বেনীমাধব কবিতার উপস্থাপনা আপলোড করা হয়। আর তারপরেই সেই ভিডিয়ো ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
নেটিজেনদের কটাক্ষ
মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই ভিডিয়োর ভিউস মিলিয়ানের ঘর ছাড়িয়ে যায়। কমেন্ট বক্সে একের পর এক কটু মন্তব্য ধেয়ে আসে গৌতম হালদারের এই উপস্থাপনাকে ঘিরে। এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে কেউ লিখলেন , ” মোটেও ভালো লাগেনি।এর থেকে লোপামুদ্রা মিত্রের গানটি চোখবন্ধ করে শোনা অনেক ভালো।আপনি বড়োমাপের শিল্পী কিন্তু দয়া করে এভাবে আর আবৃত্তি বা গান করবেনা।অসুস্থ বোধ হয় আমাদের।একজন স্কুলে পড়া মেয়ে এভাবে কদাকার অভিব্যক্তি করে নিজেকে প্রকাশ করে কিনা জানিনা,’আমার বাবা দোকানে কাজ করে’ কথাটা এভাবে কেন বলতে হয় আপনাকে জানিনা। কে জানে,আপনার আমার সমাজ,চেতনা,ভালোবাসা, প্রেম বোধহয় আলাদা,এক্কেবারে ভিন্ন।” আবার অন্য একজন ব্যবহারকারীকে লিখতে দেখা গেল , “আজ অব্দি এই কবতাটি যতবার ই শুনেছি খুব দুঃখ পেয়েছি কিন্তু আজ ওনার এইভাবে পাঠ করার দৌলতে প্রথমবার একটু হেসেছিলাম এটা শুনে, তাইজন্য ওনাকে অনেক ধন্যবাদ”।
গৌতম হালদারের পক্ষে পলাশ
তবে নাট্য শিল্পী গৌতম হালদারের পক্ষে দাঁড়ালেন অন্য আরেকজন নাট্য শিল্পী পলাশ অধিকারী। তিনি লিখলেন, “টিভির মঞ্চে উনি নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন না ঠিকই। ওনার ম্যানারিজম এর সাথে যারা পরিচিত নন তারা জানেন না, উনি বাংলা থিয়েটারের মঞ্চে বটবৃক্ষ, প্রবাদপ্রতিম, কিংবদন্তী হয়ে থেকে যাবেন। জানলে অবাক হবেন আপনাদের বহু পছন্দের অভিনেতা, যাঁরা মঞ্চ থেকে এসেছেন, তাঁদের উনি শিক্ষক, অনুপ্রেরণা। যাঁরা এখানে ওনাকে দেখে হাসাহাসি করছেন ওনাকে নিয়ে কটুকথা বলছেন অথচ, মঞ্চে ওনার মেঘনাদবধ কাব্য, সোজন বাদিয়া’র ঘাট, মেফিস্টো, গোত্রহীন, ফেরিওয়ালার মৃত্যু ইত্যাদি থিয়েটার এবং ‘কাব্যে গানে’ (এই পারফরম্যান্স সেটারই অংশ) দেখেননি, এটুকু জানাতেই পারি যে, ওনাকে মঞ্চে এইসব প্রযোজনায় না দেখাটা, এই প্রজন্মের সত্যিকারের সংস্কৃতি রসিক বাঙালি হলে আপনাদের চরম দূর্ভাগ্য বলে জানবেন ।
আশা করি, যাঁরা প্রকৃতই চেনেন ওনাকে তারাও আমার সাথে একমত হবেন। যাই হোক উনি সারা পৃথিবীর অনেকের কাছে এক বাঙালি হিসেবে বিরাট সম্মানীয়, বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে ওনার নাম সোনা দিয়ে লেখা থাকবে। সুতরাং এমন একজন কিংবদন্তি’র, সব বাঙালির কাছ থেকে অনেক টা শ্রদ্ধা প্রাপ্য। একটু সহানুভূতি রাখবেন আশা করি। দুমদাম কাউকে অপমান করার আগে ওনার উচ্চতাটা একবার যাচাই করবেন”।
তবে এটাই প্রথমবার নয় এর আগেও এই সিজনের সারেগামাপা অনুষ্ঠানকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সঠিকভাবে নাকি শেখাতে পারছেন না বিচারকরা সেই দায়ে কয়েকদিন আগে রীতিমতো কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় গায়িকা অন্তরা মিত্রকে। এছাড়াও কটাক্ষের শিকার হয়েছেন সংগীতশিল্পী ইমন।