অরিজিৎ সিং একজন বিশ্বখ্যাত গায়ক, কিন্তু তার জীবনযাপন সত্যিই অবাক করার মতো সাধারণ। যদিও তিনি কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন এবং তাঁর গানের সুরে লাখ লাখ মানুষ মুগ্ধ হয়, তবুও তিনি নিজের জীবন অত্যন্ত সাধারণভাবে কাটান। অরিজিৎ সিংয়ের জীবনযাপন দেখে অনেকেই বলেন, “অরিজিৎ এতটাই অর্থবান যে আমার মত ১০০ জনকে খেয়ে ফেলতে পারে”, অর্থাৎ তিনি এমন একজন মানুষ, যিনি সম্পদের দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকলেও কখনও সময় নষ্ট করেন না এবং জীবনের প্রতি তাঁর যে দৃষ্টিভঙ্গি, তা আমাদের শেখার মতো।
এটা সত্যিই বিস্ময়কর যে, তিনি বিখ্যাত হওয়ার পরেও সাধারণ জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন। একবার একটি শো শেষে, অরিজিৎ সিং তার গাড়ি আসতে দেরি হওয়ায় একটি অটো রিকশা নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। যেখানে অনেক তারকা নিজেদের গাড়িতে চলাফেরা করতে পছন্দ করেন, সেখানে অরিজিৎ সিংয়ের মতো একজন বিশ্বখ্যাত গায়ক এমন সাধারণ উপায়ে চলাফেরা করেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন, যে আপনি যদি সঠিক পথে চলেন, তবে সম্পদ বা খ্যাতি আপনার চরিত্রকে বদলাতে পারে না।
ইক্কা এবং রাফতার, যারা জনপ্রিয় র্যাপার, তাদের কথা থেকে জানা যায় যে, অরিজিৎ সিংয়ের মধ্যে একজন “মাটির মানুষ” থাকার গুণ রয়েছে। তাঁরা বলেন যে, অরিজিৎ সিং এমন একজন ব্যক্তি, যিনি তার খ্যাতি সত্ত্বেও নিজের প্রাকৃতিক স্বভাব বজায় রেখেছেন। ইক্কা জানিয়েছেন যে, অরিজিৎ সিং কখনও সময় নষ্ট করেন না, তিনি সম্পূর্ণভাবে কাজে মনোনিবেশ করেন এবং তিনি তার পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছেন।
গানের বাদশা অরিজিৎ সিংয়ের মাটির মানুষ হয়ে ওঠার গল্প…..
অরিজিৎ সিংয়ের এই সাধারণ জীবনযাপন শুধু তার অনুরাগীদের কাছে নয়, সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে এক ধরনের প্রেরণা। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে, একজন মানুষ যদি সৎ, বিনয়ী এবং কঠোর পরিশ্রমী হয়, তাহলে তার জীবনে খ্যাতি এবং সম্পদ আসবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আপনি নিজের চরিত্র পরিবর্তন করবেন বা অহংকার করবেন। বরং, আপনি যদি মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সাধারণ থাকেন, তবে সবার কাছে আপনিই সবচেয়ে বড়।
অরিজিৎ সিং এমন একজন শিল্পী, যিনি বিয়ে বা পার্টির মতো অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে পছন্দ করেন না। তিনি একবার বলেছিলেন যে, তিনি নিজের সময় এবং জীবনকে আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছুতে ব্যয় করতে চান, যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো বা নিজেদের পরিবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। এটি আবার প্রমাণ করে, অরিজিৎ সিং কখনও খ্যাতির কাছে মাথা নত করেননি, বরং তিনি সবসময় সাধারণ জীবনযাপনকেই গুরুত্ব দিয়েছেন।
বাদশা এবং অরিজিৎ সিংয়ের সম্পর্কও অনেক সুন্দর। থাইল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে তারা একসঙ্গে পারফর্ম করেছিলেন। সেখানে, অরিজিৎ সিং বাদশাকে যথাযোগ্য সম্মান জানিয়েছিলেন, এবং তাঁদের মধ্যে একটি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে উঠেছে। বাদশাও একবার অরিজিতের বাড়িতে গিয়েছিলেন, যা প্রমাণ করে যে, দুই শিল্পীর মধ্যে একটি গভীর বন্ধুত্ব এবং শ্রদ্ধার সম্পর্ক রয়েছে।
অরিজিৎ সিং আমাদের শিখিয়েছেন যে, খ্যাতি বা অর্থ দিয়ে মানুষের চরিত্র পরিবর্তন হয় না। বরং, সৎ, সাধারণ এবং পরিশ্রমী হওয়ার মাধ্যমে মানুষকে আরও শ্রদ্ধাশীল এবং আদর্শ হতে সাহায্য করে। অরিজিৎ সিং এর জীবনযাপন একদিকে যেমন তার অনুরাগীদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, তেমনি এটি আমাদের সবাইকে প্রেরণা দেয় যে, পৃথিবীটার প্রতি সৎ মনোভাব এবং বিনয়ী মনোভাব রাখতে হবে।