এ আর রহমান এবং তার স্ত্রী সায়রা বানু সম্প্রতি তাদের ২৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। এই খবরে বলিউডে এবং তার ভক্তদের মাঝে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। তাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা আসে একটি আবেগঘন টুইটের মাধ্যমে, যেখানে রহমান লেখেন, “আমরা ভেবেছিলাম আমাদের সম্পর্ক গ্র্যান্ড ত্রিশে (৩০ বছরের বিবাহিত জীবন) পৌঁছাবে, কিন্তু সবকিছুরই একটি শেষ আছে। এই ভাঙনের মধ্যেও আমরা অর্থ খুঁজছি।”
এ আর রহমানের বিবাহবিচ্ছেদ
এ আর রহমান এবং সায়রা বানু ১৯৯৫ সালে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্ক সবসময়ই গোপনীয়তার মধ্যে ছিল, এবং তাঁরা খুব কমই জনসম্মুখে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনের আলোচনা করতেন। তবে এই বিচ্ছেদের কারণ সম্পর্কে সরাসরি কিছু না বললেও, রহমান তাঁদের ভক্তদের কাছে গোপনীয়তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অনুরোধ করেছেন। তিনি জানান, এই কঠিন সময়ে তারা একে অপরের প্রতি বন্ধুত্ব এবং সম্মান বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মোহিনী দে এবং তাঁর স্বামীর বিচ্ছেদ
এ আর রহমানের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর, তার ব্যান্ডের সদস্য এবং খ্যাতিমান বংশীবাদক মোহিনী দে তাঁর স্বামী মার্ক হার্টসুচের সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর দেন। মোহিনী এবং মার্ক যৌথভাবে একটি বিবৃতি দিয়ে তাঁদের বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেন। তারা জানান, দুজনের মধ্যেই একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া হয়েছে এবং ভিন্ন পথে যাওয়াই তাদের জীবনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে তারা এটাও উল্লেখ করেছেন যে, পেশাগত জীবনে তারা একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবেন।
মোহিনী দে ১১ বছর বয়সে তার সংগীতজীবন শুরু করেন এবং দ্রুতই খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি লুই ব্যাঙ্কসের তত্ত্বাবধানে শিখেছেন এবং জাকির হুসেন, স্টিভ ভাই-এর মতো কিংবদন্তি শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। এছাড়া এ আর রহমানের ব্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি ‘কোক স্টুডিও’ এবং ‘উইন্ড অফ চেঞ্জ’-এর মতো প্রজেক্টে কাজ করেছেন।
ভক্তদের প্রতিক্রিয়া
এই দু’টি বিচ্ছেদ বলিউড এবং সংগীতজগতে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছে। এ আর রহমানের ভক্তরা তার এই আবেগঘন পোস্টে সমবেদনা জানিয়েছেন এবং তাঁর গোপনীয়তার প্রতি সম্মান দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোহিনী দে এবং মার্কের ভক্তরাও তাদের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন।
গোপনীয়তা এবং সমর্থনের আহ্বান
রহমান এবং মোহিনী দুজনেই তাঁদের ভক্তদের কাছে অনুরোধ করেছেন যেন তাঁরা এই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখান। তাঁরা বলেছেন, কঠিন সময়ে তাদের সমর্থন এবং ইতিবাচক মনোভাব তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, জীবন কখনো কখনো অপ্রত্যাশিত পথে এগিয়ে যায়। এটি শুধুমাত্র একজন শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন নয়, তার ভক্তদের কাছেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। এ আর রহমান এবং মোহিনী দে ভবিষ্যতে তাদের কাজ এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে আমাদের অনুপ্রাণিত করবেন, এমন আশা করা যায়।