তারকা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের বলা বেফাঁস মন্তব্যের কারণে চারিদিকে ছড়িয়ে পরেছে নিন্দার ঝড়। ক্ষমা চেয়েও কোনো লাভ হয়নি। কাঞ্চনের বলা মন্তব্য ঝড়ের গতিতে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতেই একের পর এক কটাক্ষের শিকার হতে হয় অভিনেতাকে। সমাজমাধ্যমে পোস্টের মাধ্যমে তৃণমূল বিধায়কের বলা এমন বক্তব্যের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন চলচ্চিত্র জগতের তারই বন্ধু তথা সহকর্মীরা। কেউ পোস্ট করে লিখেছেন ” ঘাটা মল্লিক, চাটা মল্লিক” আবার কেউ পোস্ট করে তাকে ধিক্কার জানিয়েছেন। এবার প্রতিবাদ জানালেন মানসী সিনহা।
ঠিক কী বলেছিলেন কাঞ্চন মল্লিক
আর জি কর কাণ্ডের জেরে এমন উত্তাল পরিস্থিতিতে যেখানে সকলে বিচার চাওয়ার আশায় প্রতিনিয়ত জমায়েত হচ্ছেন শহরের নানান জায়গায় সেই অবস্থায় শাসক দলের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার, সরকারি কর্মচারী এবং সিনেমা কর্মীদের নিশানা করে বেশকিছু মন্তব্য করে বসেন। তার মতে সরকারি কর্মচারী যারা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা তাদের বোনাস ছেড়ে দেবেন তো? এমনকি যারা সরকারি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তারা তাদের পুরস্কার ফেরত দেবেন তো? আর তারপরই শুরু হয় প্রতিবাদের ঝড়।
বন্ধু বিদায়
কাঞ্চন মল্লিকের বহুদিনের সহকর্মী এবং বন্ধু সুদীপ্তা চক্রবর্তী সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে তার বলা বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে ঘোষণা করেন যে তিনি কাঞ্চন মল্লিককে ত্যাগ করলেন। শুধু তাই নয় নাট্যকর্মী সুজন নীল মুখোপাধ্যায় ফেসবুকের পাতায় পোস্ট করে ঘোষনা করে দেন যে তিনি আর কাঞ্চন মল্লিক “মাগন রাজার পালা” নামক যে নাটকটিতে অভিনয় করতেন সেটির শো আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে। তিনি তার সহকর্মীর এমন মন্তব্যে ভীষন ভাবে আঘাত পেয়েছেন সেই কারণেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে প্রতিবাদ শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার পাতাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। কাঞ্চন মল্লিক পুরস্কার ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গে যে মন্তব্যটি করেছেন সেই মন্তব্যের কারণে অপমানিত বোধ করে নাট্যকর্মী চন্দন সেন এবং বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের পুরস্কার ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেন। এমনকি অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী সরকারের তরফ থেকে পাওয়া বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
কাঞ্চন মল্লিক কে বিদায় মানসীর
এবার তারকা বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হলেন অভিনেত্রী এবং পরিচালক মানসী সিনহা। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধু তালিকা থেকে একেবারে “পত্রপাঠ” বিদায় জানিয়েছেন কাঞ্চন মল্লিককে। তার সঙ্গে চন্দন সেন এবং বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। মানসী সিনহা পোস্ট করে জানান , “কাঞ্চন মল্লিক এতদিন বন্ধু তালিকায় ছিলেন বলে, কাল থেকে বড়ই মুষড়ে ছিলুম। আজ চন্দন সেন এবং বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় পিঠ চাপড়ে বলে উঠলেন,হাল ছেড়ো না বন্ধু! কালকেই বন্ধু তালিকা থেকে এক ধাক্কায় বার করে দিয়েছি কাঞ্চনকে। চন্দনদা আর বিপ্লব সেই তালিকায় বর্তমান বলে, আজ ভারি গর্ব হচ্ছে।” এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে সবার লেখা কমেন্টে প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ইমোজি দিতে দেখা যায় কাঞ্চন মল্লিকের প্রাক্তন স্ত্রী পিঙ্কিকে। অর্থাৎ তিনিও যে মানসী সিনহার এই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করছেন তা স্পষ্ট ধারণা করা যায়।
প্রসঙ্গত এই বিতর্কের মাঝেই ক্ষমা চাইতে দেখা যায় তৃণমূল বিধায়ককে। এমনকি তার বর্তমান স্ত্রী শ্রীময়ী তার বলা এই মন্তব্যগুলিকে “স্লিপ টং” আখ্যা দিয়েছেন। তবে এই ক্ষমা চাওয়ার মধ্যেও অনেকে রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন।