বাঙালি জাতি সংস্কৃতিপ্রেমী জাতি। রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে গান, কবিতা, সিনেমা সবই তাঁদের ভালোবাসার বিষয়। তবে বাঙালি একাধারে খাদ্যপ্রেমী ও সিনেপ্রেমী হতেই পারে তবে এই দুই বিষয়কে এক সুতোয় বাঁধার যুক্তি কি? কারণ আছে, সিনেমার পথকে সুপ্রসন্ন করার কথা যখন ভাবেন একজন খাদ্য কোম্পানীর মালিক তখন বিষয় দুটো দিব্যি এক সুতোয় বাঁধা পড়ে যায়।
এখনো বিষয়টা না বুঝে থাকলে সেটি বুঝিয়ে বলা হচ্ছে। এবারে বাঙালির খাদ্যরসিকতার সঙ্গে সিনেমার লেনদেন মিলে গেলো। যদিও রাস্তাটা একটু ঘুরিয়ে, তবু এই মেলবন্ধন বেশ গাঢ় বইকী। বিষয়টা আরেকটু স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলা হচ্ছে, বাংলা ছবিতে বিনিয়োগের পথ সুগম হল। আর সেটাও আদানি উইলমারের ফরচুনের হাত ধরে। কারণ নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রযোজনা সংস্থা উইন্ডোজ-এর সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের জন্যে চুক্তিবদ্ধ হল এই সংস্থা।
বাংলা ছবিতে বিনিয়োগের পথ সুগম হল আদানি উইলমারের ফরচুনের হাত ধরে!
ইন্ডাস্ট্রিতে ২৫ বছর পার করে ফেলেছেন নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখার্জি। এরমধ্যে বড়পর্দা ছোটোপর্দা সবই ছিল। এবার ফরচুন গ্রুপ বাংলার এই পরিচালক জুটির সঙ্গে ২৫ বছরের উদযাপনে সংশ্লিষ্ট প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হল। নন্দিতা-শিবপ্রসাদ যেমন সাধারণ দর্শকের মনের কথা বুঝে সিনেমার গল্প সাজান, সাধারণ মানুষ তাঁদের জীবনের গল্প সিনেমায় ফুটিয়ে তোলেন, তেমনি, জনপ্রিয় ফুড ব্র্যান্ড ফরচুনও একইভাবে সাধারণ বাঙালির রান্নাঘরে নিজের পাকাপোক্ত জায়গা দখল করেছে। শুধু বাঙালি বলা ভুল হবে, তাঁরা জায়গা করেছে গোটা দেখের মানুষের কাছে। স্বাদে গন্ধে মাতিয়ে তুলেছে পুরো দেশবাসীকে। এবার দর্শকদের দারুণ সিনেম্যাটিক ভেঞ্চার্স উপহার দেওয়ার জন্য দুই সংস্থা চুক্তিবদ্ধ হল।
তবে এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও ‘অলীক সুখ’, ‘বেলাশেষে’, ‘প্রাক্তন’, ‘হামি’ থেকে শুরু করে ‘রক্তবীজ’ এর মতো উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার সিনেমাগুলিতে বিনিয়োগ করেছে আদানি। বাংলার গল্প, বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য চুক্তিবদ্ধ এই দুই সংস্থার তরফে যে আগামী দিনেও আরও ভালো সিনেমা উপহার পাওয়া যাবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন দর্শকরা।
চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সাল থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর নন্দিতা-শিবপ্রসাদের প্রযোজনা সংস্থায় ৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে আদানি উইলমারের ফরচুন। অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী, উইন্ডোজের নানা সিনেমায় বিভিন্নভাবে ফরচুন-এর ব্র্যান্ড পজিশনিং করা হবে। সহজ বাংলায় বললে, নন্দিতা-শিবপ্রসাদের বিভিন্ন সিনেমায় ফরচুন-এর উল্লেখ থাকবে। সাধারণত যেটিকে অ্যাডভারটাইজিং বলা হয়।
নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রযোজনা সংস্থা উইন্ডোজ-এর সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের জন্যে চুক্তিবদ্ধ হল এই সংস্থা!
এপ্রসঙ্গে আদানি উইলমার লিমিটেড-এর সিইও জানিয়েছেন, “২৫ বছর ধরে ফরচুন ফুডসকে জনপ্রিয় করে তোলার নেপথ্যে বাঙালিদের অবদান অনস্বীকার্য। এহেন সমর্থন না পেলে এই রজতজয়ন্তী উদযাপন সম্ভব হত না। আমাদের ব্র্যান্ডের দুর্দান্ত বাণিজ্যিক সাফল্যের নেপথ্য পশ্চিমবঙ্গ। নিঃসন্দেহে বাংলার বাজার আমাদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আর উইন্ডোজ-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া আদতে বাংলার প্রতি আমাদের সেই ভালোবাসারই অঙ্গীকার। উইন্ডোজ এবং ফরচুন একসঙ্গে আগামীতে বাংলার রন্ধন সংস্কৃতি সিনেম্যাটিকভাবে তুলে ধরবে।”
উচ্ছ্বসিত শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথা অনুযায়ী “উইন্ডোজ বরাবরই এমন গল্প বলে যার সঙ্গে বাঙালি দর্শকরা একাত্ম হতে পারে। এবং ফরচুন ফুডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার নেপথ্যে সেই দৃষ্টিভঙ্গিটাই কাজ করেছে। আগামীতে বাংলার ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতি তুলে ধরব আমরা একসঙ্গে। আমাদের এই বন্ধুত্ব বাংলা সিনেমার পক্ষেও লাভজনক হবে এবং আরও নতুন পথ সুগম করবে।”