একসময় বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন ফারদিন খান। তবে প্রায় ১৪ বছর বড় পর্দা তথা মিডিয়া থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন অভিনেতা ফারদিন খান। খুব সম্ভবত নিজের দুই সন্তানের মৃত্যুই তাঁর গায়েব হবার কারণ। পুত্রশোকে দীর্ঘদিন ডিপ্রেশনে ছিলেন ফারদিন। দীর্ঘ লড়াই শেষে আবার মিডিয়ায় ফিরলেন সঞ্জয় লীলা বনশালির হাত ধরে। বনশালির অটিটি প্লাটফর্মে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হীরামান্ডি’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। এরপর অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ‘খেল খেল মে’ ছবিতেও দেখা গেছে তাঁকে।
তবে তিনি নতুন করে জীবন ও কেরিয়ার সাজালেও সমালোচনা কিন্তু পিছু ছাড়েনি তাঁর। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। স্ত্রী নাতাশা মাধবানির সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ নিয়ে গুঞ্জন তুঙ্গে। সম্প্রতি এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফারদিন জানান, সন্তানদের থেকে দূরে থাকাটা একেবারেই সহজ নয়।
একসময়ের জনপ্রিয় পরিচালক ও অভিনেতা ফিরোজ খানের পুত্র ফারদিন খান। মা ছিলেন সুন্দরী খান। বাবা ফিরোজ খানও ভালোবাসায় ভেঙে দিয়েছিলেন ২০ বছরের সংসার। ২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর নাতাশার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন ফারদিন। নাতাশার বাবা ময়ূর মাধবানি ভারতীয় বংশোদ্ভূত উগান্ডার ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও শিল্পপতি। মা একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মুমতাজ।
এখন ফারদিন ও নাতাশার এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তাঁদের বড় মেয়ের নাম ডায়ানি ইসাবেলা খান এবং ছেলে আজারিয়াস ফারদিন খান। শোনা গেছে মোটামুটি তিন বছর ধরেই আলাদা থাকছেন ফারদিন ও নাতাশা। দুই সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে একাই থাকছেন নাতাশা।
ফারদিনের ১৯ বছরের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। স্ত্রী নাতাশার সঙ্গে দাম্পত্য বিচ্ছেদ হয়েছে অনেকদিন। স্ত্রী নাতাশা এখন সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে স্থায়ী নিবাস গড়েছেন। তবে স্বাভাবিকভাবেই বাচ্চাদের বেশ মিস করেন ফারদিন। নাতাশার সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে এখনো খোলামেলা কিছু বলেননি অভিনেতা। এই বিষয়ে বেশি জলঘোলা তাঁর পছন্দ না হলেও, সন্তানদের নিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছে।
এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে ফারদিন বলেছেন, তাঁর পক্ষে বাচ্চাদের থেকে এমন দূরে থাকা খুব একটা সহজ নয়। বাচ্চারা কেনো তাঁর থেকে দূরে আছে সেই বিষয়ে কথা বলতে অমত প্রকাশ করেন ফারদিন। ফারদিন তাঁর বাচ্চাদের ভীষণ মিস করেন। অভিনেতা জানান, প্রায় দেড় মাস পরপরই সে তাঁর বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং প্রতিদিন নিয়ম মেনে ভিডিয়ো কলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।
ফারদিন বলেন, বাচ্চাদের প্রতিদিনের জীবন যাপন, তাঁদের বড় হয়ে উঠতে দেখা, তাঁদের জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো বিভিন্ন কিছু তিনি মিস করেন। সন্তানের জীবনে বাবার ভূমিকা পালন করতে না পারাটা তিনি মিস করেন। এমনকি তাঁর বাচ্চারা যেসব ছবি আঁকে, সেই শিল্পকর্মগুলি তিনি তাঁর মুম্বাইয়ের বাড়ির দেয়ালে বাঁধিয়ে রেখেছেন। আমি তাদের আলিঙ্গন, তাদের চুম্বনটা মিস করি। ফারদিন জানান মূলত এখন তিনি তাঁর মনকে ব্যস্ত রাখার জন্য কাজ করছেন। তাঁর বাচ্চারা যখনই মুম্বাই আসে, ফারদিন তাঁর সমস্ত কাজ বাতিল করে নিজের ২৪ ঘণ্টা সময় ওদের সঙ্গে কাটান।
১৯৯৮ সালে ‘প্রেম আগন’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন ফারদিন। এরপর জঙ্গল, প্যায়ার তুনে কেয়া কিয়া, খুশি, ভূত, জানাশিন, দেব, ফিদা, নো এন্ট্রি, এক খিলাড়ি এক হাসিনা, হে বেবির মতো বহু সফল হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ২০১০ সালে তাঁর রোমান্টিক-কমেডি ছবি ‘দুলহা মিল গেয়া’র পর অভিনয় থেকে তিনি সরে আসেন। চলতি বছর সঞ্জয় লীলা বনসালির হীরামন্ডি ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে আবার বড়পর্দায় ফেরেন অভিনেতা। এবারে ‘ডেভিল: দ্য হিরো’ ছবির মাধ্যমে কন্নড় ছবির জগতে প্রবেশ করবেন অভিনেতা। ছবিটিতে রচনা রাই, মহেশ মঞ্জরেকর, যিশু সেনগুপ্তর মতো অনেকেই মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবিটি চলতি বছর ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা আছে।
প্রতিবেদন : প্রিয়াংকা সরকার