একের পর এক বিতর্কে নাম জড়াচ্ছে শিল্পা শেট্টির। এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট তাঁর স্বামী রাজ কুন্দ্রার ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। সে ঘটনার এক মাসের বেশি পেরোয় নি এখনো। অভিনেত্রীর নিজের নামে কেনা বিলাসবহুল বান্দ্রার ফ্ল্যাটও হাতছাড়া হয়েছে। এতোসব ঝামেলা ও আইনি জটের মাঝেই এবার পর্ন কাণ্ড নিয়ে নতুন করে বিপাকে পড়লেন শিল্পার স্বামী রাজ কুন্দ্রা।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার বেশ সকালে এই দম্পতির বাড়িতে হানা দেয় ইডি। মুম্বই এবং উত্তরপ্রদেশের ১৫টি এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটের তদন্তকারীরা। বাদ যায়নি রাজ কুন্দ্রা-সহ সংশ্লিষ্ট মামলায় জড়িত বাকিদের বাসস্থানও।
কেনো আবারো বিপাকে পড়লেন রাজ কুন্দ্রা?
‘হটশটস’ নামে এক প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাপ খোলার জন্য বছর খানেক আগেই হাজতবাস অবধি হয়েছিল রাজের। পাক্কা দু মাস জেলে কাটিয়ে তার পর জামিন পেয়েছিলেন তিনি। সেই স্মৃতিকে অতীতের খাতায় ফেলে রেখে যখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন রাজ-শিল্পা। তখনই ফের বিপাকে পড়লেন দম্পতি। দুয়ারে হলো ইডির হানা।
আইপিএল বেটিং ও নীলছবি মামলায় রাজ কুন্দ্রার নাম উঠে এসেছিল আগেই। এরপর ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বিটকয়েন পঞ্জি স্ক্যামের আর্থিক তছরুপ মামলাতেও নাম জড়িয়েছে রাজ কুন্দ্রার। তার জেরে স্থাবর-অস্থাবর সব মিলিয়ে রাজ-শিল্পার প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। এর মধ্যে কিন্তু বাদ যায়নি জুহুর সমুদ্রমুখী বিলাসবহুল বাংলোও। এই বাংলো ছিলো অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির নামে কেনা।
তালিকা এখানেই শেষ হচ্ছে না। এই তালিকায় জুহুর পাশাপাশি তারকাদম্পতির পুণের এক প্রাসাদ ন্যায় বাংলোও রয়েছে। এরআগে রাজ কুন্দ্রার নামে কিছু ইক্যুয়িটি শেয়ারও বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি পুলিশের কাছে ভ্যারিয়েবল টেক প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। অমিত ভরদ্বাজ, বিবেক ভরদ্বাজ, সিম্পি ভরদ্বাজ, মহেন্দ্র ভরদ্বাজ-সহ আরও বেশ কয়েক জনের নাম উঠে আসে অভিযুক্ত হিসেবে। বিটকয়েনে বিনিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা তোলেন অভিযুক্তরা। শুধুমাত্র ২০১৭ সালেই ৬,৬০০ কোটি টাকা তোলা হয়েছিল বলে জানা যায়। যাঁদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়, তাঁদের প্রতি মাসে বিটকয়েনে ১০ শতাংশ টাকা রিটার্ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।
ক্রিপ্টো সম্পত্তি গড়ে তোলার লোভে অনেকেই টাকা ঢালেন ওই সংস্থায়। কিন্তু ওই সংস্থা সকলকে ঠকানোয় একাধিক মামলা দায়ের হয়। আর এই মামলার তদন্তে নেমেই রাজের সঙ্গে ওই সংস্থার সংযোগ খুঁজে পায় ইডি। জানা গিয়েছে, অমিত ভরদ্বাজের থেকে ২৮৫টি বিটকয়েন পেয়েছিলেন রাজ। ইডি সূত্রে খবর, গোটা দুর্নীতি চক্রের মাথা ছিলেন অমিত। নিরীহ মানুষকে টোপ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছিলেন তিনি।
একের পর এক মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন রাজ,
সেই বিটকয়েনই পরে রাজের কাছে যায়, বর্তমানে যার বাজারদর প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। সেই প্রেক্ষিতেই রাজের ৯৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। হাজার কোটির দুর্নিতি, ইডির মামলা, যাবতীয় আইনি জটের মাঝেই গত আগস্ট মাসে তিন কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ির কিনে ফের চর্চার শিরোনামে এসেছিলেন রাজ কুন্দ্রা এবং শিল্পা শেট্টি।