অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের একক অভিনীত নাটক ‘মাই নেম ইজ জান’ সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। এই থিয়েটার শো মুম্বইয়ের বিখ্যাত বাল গান্ধর্ব রঙ্গ মন্দির অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হয়, যেখানে তিনি বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী গওহর জানের জীবন ও সংগ্রামের কাহিনি ফুটিয়ে তোলেন।
ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও সংস্কৃতির দুনিয়ায় অবদান রাখা গওহর জান ছিলেন সেই সময়ের এক বিখ্যাত এবং অগ্রণী সঙ্গীতশিল্পী। তাঁর জীবন কাহিনির ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই নাটকটি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে এবং সমসাময়িক থিয়েটারপ্রেমীদের মুগ্ধতা কেড়ে নিয়েছে।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতি শো’টির বিশেষত্ব কি ছিল?
তিনি এই শোয়ের দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন, যেটি ছিল তাঁর বউমা অর্পিতার একক অভিনীত শো। প্রবীণ এই অভিনেতা এবং তাঁর দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বলিউড ক্যারিয়ার থাকা সত্ত্বেও, থিয়েটারের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং অর্পিতার প্রতিভার প্রতি তাঁর সমর্থন একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। নাটক শেষে তিনি অর্পিতার অভিনয়ের প্রশংসা করতে দ্বিধা করেননি এবং তাঁর অভিনয়কে “ওয়ান ম্যান আর্মি” হিসাবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, অর্পিতার এই প্রচেষ্টা ভারতের নাম উজ্জ্বল করবে এবং তাঁর অভিনয়ের দাপট দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়েছে।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় মূলত বলিউডে তাঁর কর্মজীবন প্রতিষ্ঠিত করলেও, একসময় পরিবারের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তাঁর প্রথম স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁদের দুই সন্তান প্রসেনজিৎ ও পল্লবীর সঙ্গে সম্পর্কেও কিছুটা চিড় ধরে। অনেক বছর পর প্রসেনজিতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেও পল্লবীর সঙ্গে সেই দূরত্ব এখনো রয়ে গেছে বলে জানা যায়। অর্পিতার সঙ্গে প্রসেনজিতের বিয়ের পর তাঁর পরিবারের সঙ্গে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের যোগাযোগ আবার নতুন করে স্থাপিত হয়। অর্পিতার মধ্যস্থতাতেই বাবা-ছেলের সম্পর্কটি ফের উষ্ণতা ফিরে পায়।
নাটক ‘মাই নেম ইজ জান’-এ গওহর জানের জীবনী তুলে ধরার প্রয়াসটি অনেকাংশেই থিয়েটারের প্রতি সাধারণ মানুষের আকর্ষণকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। আজকের ডিজিটাল যুগে যেখানে সিনেমা, ওটিটি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি মানুষের মনোযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে এই ধরনের থিয়েটার প্রদর্শনীর মাধ্যমে পুরনো ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। শুধু দর্শকদের মনে নয়, সমালোচকদের কাছেও এই নাটকটি প্রশংসিত হয়েছে এবং অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় দক্ষতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতে,
অর্পিতা তাঁর একক অভিনয়ের মাধ্যমে গওহর জানের সংগ্রাম এবং সাফল্যের গল্প যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তা সত্যিই বিরল। ভারতের সঙ্গীত এবং সংস্কৃতির সঙ্গে গওহর জানের অবদানের এই শ্রদ্ধার্ঘ্য থিয়েটারের দর্শকদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।