বাংলার মাটিতে নারীশক্তির অর্চনা করা হয় বরাবর। নারীকে মা রূপে পুজো করেন বাঙালি। কখনও মা লক্ষ্মীর মতো শান্ত হয়ে সন্তানের মনোবাসনা পূরন করেন, দেখভাল করেন আবার কখনও বা রনচণ্ডী রূপে দুষ্টের হাত থেকে রক্ষা করেন নিজের সন্তানদের।
তবে সেযুগে দেবী চৌধুরানী একসঙ্গে দুইই করেছিলেন। গরীব দুঃখীদের কষ্ট দুর্দশা যেমন দূর করতেন তেমনিই অত্যাচারী ব্রিটিশ সরকার ও তাঁদের তোষামোদকারী জমিদারদের থেকে রক্ষাও করতেন তাঁদের। বাংলার চিরায়িত সেই সত্য কাহিনী এবার আসতে চলেছে বড়পর্দায়। শুভ্রজিৎ মিত্রের পরিচালনায় দেবী চৌধুরানীর ভূমিকায় অভিনয় করবেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।
ঘোষণা হলো দেবী চৌধুরানীর মুক্তির তারিখ
গত বছর থেকেই এই ছবি মুক্তি নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা। তবে নির্মাতারা কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। আর এবার বুধবার সাড়ম্বরে ঘোষণা হল এই ছবির মুক্তির তারিখ। ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরাণীর রণক্ষেত্রের রূপের সঙ্গে সামনে এলো সিনেমার নতুন পোস্টার। কবে মুক্তি পাচ্ছে ‘দেবী চৌধুরানী’?’
দেবী চৌধুরানী’র নয়া পোস্টারে দেখা গেল, ধুলো উড়িয়ে ধেয়ে আসছে দস্যুদল। পোস্টারে আছেন ভবানী পাঠক। হাতে তীর-ধনুক আর দুচোখে যেন আগুন ঝরছে। একদম নয়ারূপে নয়া পোস্টারে হাজির হলেন শ্রাবন্তী। সঙ্গে ভবানী পাঠকের চরিত্রে আছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আসছে অসহায় নিপীড়িত মানুষের রানীমা’র গল্প।
বাংলার মাটিতে নারীর হাতে তরোবারি কোনো অবাক হওয়ার বিষয় নয়। মা দুর্গা থেকে মা কালী সকলকেই বাঙালি এই রূপেই পুজো করেন। দেবী চৌধুরানী যেন সেই আদর্শেই জীবন গড়েছিলেন। সিনেমা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই জোর চর্চা চলছে শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘দেবী চৌধুরানী’র। ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যাবে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে। অন্যদিকে ‘ভবানী পাঠক’-এর চরিত্রে দেখা যাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে।
ব্রিটিশ দমনে একসঙ্গে পর্দায় আসছেন শ্রাবন্তী প্রসেনজিৎ
বুধবার মুক্তি পেলো ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবির একটি নতুন পোস্টার। সেই পোস্টারে যুদ্ধং দেহী মূর্তিতে দেখা গেল শ্রাবন্তীকে। টকটকে রক্তলাল রঙের কাপড় পরে খোলা চুলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। দুচোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে। আরও দেখা গেল রক্তাম্বরের সঙ্গে তাঁর রুদ্রাক্ষের অলঙ্কার। এছাড়াও তাঁর কপালে লেপা শ্বেতচন্দনের উপর রক্তবর্ণ টীকা। কোমরবন্ধতে খাপে ঢাকা তরবারি। ওদিকে, একহাতে ধনুক, অন্যহাতে খোলা তরবারি নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ‘দেবী চৌধুরানী’।
আর দেবী চৌধুরানীর একদম পাশেই দেখা যাচ্ছে ‘ভবানী পাঠক’কে। কাঁধ ছাপিনো, অবিন্যস্ত চুলের সঙ্গে একমুখ কাঁচাপাকা দাড়িতে প্রসেনজিতের এই লুক এক মুহূর্তের জন্য মনে করাতে পারে তাঁর ‘মনের মানুষ’ সিনেমার ‘লালন ফকির’ চরিত্রকে। তবে কপালে বড় করে রক্তটীকা কাঁটা রয়েছে তাঁরও। সঙ্গে চোখের মধ্যে আছে শান্তভাবের সঙ্গে ধূর্ততার আভাস। তাঁর চোখের এই চাহনীই, তাঁকে ‘মনের মানুষ’-এর থেকে এক মুহূর্তে আলাদা করে তোলে। ‘ভবানী পাঠক’ রূপে দর্শক দেখতে পায় নয়া এক প্রসেনজিৎকে।
পোস্টারে আরও দেখা যাচ্ছে, পড়ন্ত বিকেলের আলোয় এক বিরাট জাহাজ ভাসছে উত্তাল সমুদ্রে। জাহাজ যে ব্রিটিশ সরকারের তা স্পষ্ট, জাহাজের মাস্তুলে উড়তে থাকা ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা থেকে। কিভাবে ব্রিটিশদের থেকে দেশের সম্পদ রক্ষা করতেন রাণীমা সেগল্প হয়তো দেখানো হবে। এছাড়াও দেখা গিয়েছে ‘দেবী চৌধুরাণীর দলের দস্যুদের। দল বেঁধে ধুলো উড়িয়ে শত্রু দমনে এগিয়ে আসছে তাঁরা। পোস্টার প্রকাশের পাশাপাশি নির্মাতাদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হল আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫-এর ১লা মে বড়পর্দায় মুক্তি পাবে এই ছবি।