বাঙালি সঙ্গে সিনেমার টান হয়তো একটু বেশি। টলিউড বলিউড সাউথ ইন্ডিয়ান থেকে শুরু করে বিদেশী সিনেমার প্রতি তাদের নেশা অফুরন্ত। জীবনের আনন্দ উদযাপনের একটি মাধ্যম হলো সিনেমা দেখা। দুর্গাপুজোর প্ল্যানিং এর সিনেমা দেখাও লিস্টে থাকতেই হবে। থাকেও। তাই প্রযোজক, পরিচালকরা চেষ্টা করেন পুজোর সময় একটি করে ভালো সিনেমা বাঙালিদের উপহার দিতে। নতুন পোশাক সাজগোজের পাশাপাশি এটা যেন উপরি পাওনা। পুজোর উপহার এইবার দূর্গা পুজোতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় এর পরিচালনায় গত ৮ই অক্টোবর মুক্তি পেয়েছে “বহুরূপী” ছবিটি। মুক্তির প্রথম দিনেই প্রায় ১০ হাজার টিকিটের প্রিবুকিং হয়েছিলো। এছাড়াও পুজোর বাকি দিন গুলিতেও দর্শকের আসন ফাঁকা ছিল না। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয় সারা ভারত জুড়ে “উইন্ডোজ প্রোডাকশন” এর ব্যানারে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। শিবপ্রসাদ মুখার্জী, কৌশনী মুখার্জীর পাশাপাশি আবির চট্টোপাধ্যায় ও ঋতাভরী চক্রবর্তী জুটির অনবদ্য অভিনয় মন কেড়েছে অনুরাগী থেকে সমালোচক সকলেরই। বেশ ভালো সাড়া ফেলেছে ছবিটি।৪ কোটি টাকার বাজেটে তৈরী সিনেমাটি বক্স অফিসে আয় করেছে ১৭ কোটি টাকা। এই বছরের সবথেকে বড় বাংলা ব্লকবাস্টার এর তকমা পেয়েছে বহুরূপী। একই সঙ্গে সর্বকালের তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী বাংলা ছবি হিসাবে স্থান করেছে বাংলার সেরা কিছু ছবির তালিকায়।
১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ঘটে যাওয়া পর পর কিছু ঘটনা নিয়ে তৈরী হয়েছে ছবিটি। নন্দিতা রায় নিপুণ ভবে প্রতিটা ঘটনাকে সাজিয়ে পুরো গল্পটি বুনেছেন। দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার রায়পুর গ্রামের ব্যাঙ্ক ডাকাতির অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে ছবিটি বানানোর জন্য। পুষ্পা ঝড়েও অটুটডিসেম্বর মাসে ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমা পুষ্পা ২। বিরাট সাফল্য, প্রশংসা পেয়েছে ছবিটি। এক কথায় দেশ জুড়ে এখন পুষ্পা জ্বর চলছে। ছবির প্রতিটি গান হিট হয়েছে আগেই। কিন্তু এই জ্বরের মধ্যেও এখনও মাথাচাড়া দিয়ে বাজার করে চলেছে বহুরূপী।
বাংলা সিনেমার জয় বোধ হয় এখানেই। এতো বড়ো বাজেটের সিনেমার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে এখনও নিজের রেশ ধরে রেখেছে নন্দিতা রায়ের গল্পটি। সমাজ মাধ্যমের যুগেও শিল্পীর কাজকে মুল্য দিতে ভোলেনি বাঙালি। আশা করা যায় এই জয় ধরে রাখবে টলি ইন্ডাস্ট্রি। সমর্থন করে যাবে বঙ্গবাসী।