চিকিৎসক রুদ্রজিৎ রায়ের সঙ্গে দ্বিতীয়বার গাঁটছড়া বাঁধলেন অভিনেত্রী মল্লিকা ব্যানার্জি। ১৭ বছরের মেয়ে থাকাকালীন দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন অভিনেত্রী। হবু স্বামীকে বারবার বলেছিলেন আরেকবার ভেবে দেখতে। ১৭ বছরের মেয়েকে নিয়ে নতুন সংসার, শুধু সমাজ নয়, নিজেদের বোঝাপড়াও ঠিকমতো হবে কিনা তা প্রশ্ন হিসেবেই থাকে।
অবশ্য মল্লিকার ১৭ বছরের মেয়েই নাকি মল্লিকাকে রাজি করিয়েছে জীবনটা আবারো নতুন করে শুরু করার জন্য। সমস্ত জড়তা ভাঙতে তাঁর ওই মেয়েই তাঁর পাশে ছিলো। চিকিৎসক রুদ্রজিতের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করলেন মল্লিকা। এর আগে জীবনের বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এসেছেন মল্লিকা। একা হাতে বড় করেছেন মেয়েকে। এবারে জীবনটাকে সহজ করতে পাশে পেলেন আরেকজন মানুষকে।
১৭ বছরের মেয়েসহ আবারো বিয়ের পিঁড়িতে মল্লিকা!
মনের মানুষ খুঁজে পেলেন অভিনেত্রী মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা টেলিভিশনের বেশ জনপ্রিয় মুখ তিনি। তবে বেশিরভাগ সময়ই খলনায়িকার চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে। তবে বাস্তবের মানুষটা কিন্তু একেবারে অন্য রকম। পর্দার চরিত্রের সঙ্গে কিন্তু একেবারেই মিল নেই মল্লিকার। আসর জমাতে ওস্তাদ তিনি, সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে তাঁর। তিন দিন শুটিংয়ে না গেলে সঙ্গে সঙ্গে সহকর্মীরা খোঁজ শুরু করেন তাঁর।
জীবনে যে চারপাশে মানুষের অভাব ছিল তেমনটা একেবারেই নয়। তবে জীবনে বার বার ঠকতে ঠকতে মানুষকে বিশ্বাস করতেই ভয় হতো তাঁর। কাওকে ভরসা করতে ভুলে গিয়েছিলেন মল্লিকা। তবে এবারে তাঁর জীবনের ভেঙে যাওয়া বিশ্বাস ফের জোড়া লাগল। প্রথম বিয়ের পর আবারো বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন মল্লিকা। ১৭ বছরের এক মেয়ের মা তিনি। তবে মেয়ের উৎসাহেই ফের দ্বিতীয় বিয়ে করছেন মল্লিকা। পাত্র চিকিৎসক রুদ্রজিৎ রায়। ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তাঁদের বিয়ে।
অল্প বয়সে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন মল্লিকা। একমাত্র মেয়ের বয়স যখন ৯ সেই সময় স্বামী এসে জানান তিনি পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। সেই থেকে শুরু একার লড়াই। একা হাতে মেয়েকে বড় করেছেন। মেয়ের দায়িত্ব সামাল দিতে গিয়ে নিজের জীবনের দিকে তাকানোর সময় পাননি। তবু মাঝে প্রেম আসে মল্লিকার জীবনে, তিনিও অভিনেতা। কিন্তু বছর খানেকের মধ্যে সেখানেও প্রতারণা। এরপর যেন বিশ্বাস উঠে যায় সম্পর্ক থেকে।
মেয়ে গরিমাই মাকে সাহস জুগিয়েছে নতুন করে জীবন শুরু করতে!
তবে সঙ্গীহীন জীবনে কাওকে তো দরকার। মেয়ে বড় হচ্ছে, কয়েক বছরের মধ্যে তাঁর নিজস্ব জগত হবে। সে কথা ভেবে মনস্থির করেন, ফের চেষ্টা করবেন। মল্লিকা জানান, কোভিডকালে রুদ্রজিতের সঙ্গে দেখা। তাঁর ও মেয়ের চিকিৎসক ছিলেন। পরে অবশ্য একটি অনুষ্ঠানে ঠিকমতো আলাপ হয়। মল্লিকার বলেন, ডাক্তারবাবুর তরফ থেকেই প্রস্তাবটা আসে। তিনি বহু বার না বলেছেন। বলেছেন তাঁকে আবারো ভেবে দেখতে। কারণ একটা বড় মেয়ে নিয়ে বিয়ে করা। মেয়ের যেমন মেনে নেওয়ার ব্যাপারটা থাকে, তেমনই অপর পক্ষের মানুষদের তাঁর মেয়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার রয়েছে।
তবে রুদ্র হাল ছাড়েনি। মল্লিকা বলেন, “ওঁর মধ্যে অসম্ভব ধৈর্য সেটাই সব থেকে বেশি আকর্ষণ করেছে আমাকে। ভরসা ফিরিয়ে দিয়েছে আমার মানুষের প্রতি।’’ তাই বিয়ের মরশুমে এবার সানাই বাজবে মল্লিকার জীবনেও। উঠতি বয়স চলছে মল্লিকার মেয়ের। মোটামুটি সবই বোঝেন এখন তিনি। মায়ের জীবনসঙ্গী মাকে সাহায্য করেছেন মেয়ে গরিমাই। মল্লিকা জানান, তাঁর মেয়ের যখন ১১ বছর বয়স সেই সময় থেকেই সে মল্লিকাকে বলেছিল নতুন করে ভাবার কথা। এখন নাকি রুদ্র আর মেয়েকে কথা বলতে দেখলে কেউ বলবে না যে তিনি মল্লিকার মেয়ে গরিমার নিজের বাবা নয়। বর্তমানে ‘গীতা এলএলবি’ ও ‘দুই শালিক’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন মল্লিকা।