একাধিকবার শীর্ষ খবরে এসেছেন সুপারস্টার আমির খানের ভাই অভিনেতা ফয়সাল খান। ২০০০ সালের পর বলিউডকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। ২০০০ সালে ‘মেলা’ সিনেমাতে অভিনয়ের পর বলিউড থেকে বিদেয় নেন তিনি। সিনেমাটি অসফল হলেও সেখানে ফয়সালের অভিনয় বেশ প্রশংসা কুড়োয়।
তারকা হয়েও সাধারণ জীবন যাপন
তবে ব্যক্তি জীবনে মানুষ হিসেবে অত্যন্ত সফল একজন মানুষ ফয়সাল। তাঁর সাধাসিধে জীবন যাপন তাঁকে মনুষ্যত্বের চরম শিখরে পৌঁছে দেয়। এর আগে কখনো বৃষ্টির আগের মরশুমে লিচু কিনতে গিয়ে বা কখনো ঘর সাজানোর জন্য ফুল কিনতে গিয়ে ক্যামেরা বন্দী হয়েছেন ফয়সাল। লিচু বিক্রেতার সঙ্গে তাঁর গল্প করার ধরন মন জিতেছে ভক্তদের। ফুল কিনতে গিয়ে সেই ফুলওয়ালির জন্মদিন ছিল বলে নিজে দাঁড়িয়ে তাঁকে দিয়ে কেক কাটিয়ে জন্মদিন উদযাপন করেন ফয়সাল। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর এই নিবিড় সম্পর্ক বরাবরই ভালোবাসেন নেটিজেনরা।
নিজের জন্য সবজি বাজার করছেন ফয়সাল, বাড়ি গিয়ে নিজের রান্নাও নিজেই করবেন
এবারে আমির খানের ভাই ফয়সাল খান ধরা দিলেন রাস্তার হকারদের কাছ থেকে সবজি কিনতে গিয়ে। এক সাংবাদিক তাঁকে রাস্তার ফেরিওয়ালার থেকে সবজি কিনতে দেখে সেই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন। ভিডিয়োতে তাঁকে বলতে শোনা যায় জলদি সবজি প্যাক করে দিতে, তাঁকে বাড়ি গিয়ে রান্না করতে হবে। ভিডিয়োতে সাংবাদিকের সঙ্গেও বেশ খোশমেজাজে উৎফুল্লভাবে কথা বলতে দেখা যায় ফয়সালকে।
ফয়সাল রাস্তাতেও বেরিয়েছিলেন খুব সাধারণ ভাবে। তাঁর পরনে ছিল একটি নীল শার্ট এবং জিন্স। তাঁর নম্র আচরণ, আলাপের ধরন দেখে বোঝা দায় যে তিনি গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের মানুষ। ফয়সালই হয়তো প্রথম যে একজন সেলিব্রিটি হওয়া সত্বেও রাস্তার ফেরিওয়ালার কাছ থেকে সবজি কিনছেন।
ফয়সাল খান নিজে জানান যে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সবকিছুই নিজে পরিচালনা করেন। তিনি আরও বলেন, তিনি তাঁর সমস্ত কাজ নিজেই করেন যেমন, নিজেই গাড়ি চালান, জীবনের দৈনন্দিন কাজ বা নিজের যত্ন নেওয়া সবটাই নিজে করেন। তাঁর প্রতিদিনের রান্নাও নাকি তিনি নিজে করেন।
ফয়সাল খানের বলিউডে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু বৈচিত্র্যময় কেরিয়ার ছিল। তিনি তিন বছর বয়সে তাঁর চাচা নাসির হোসেনের ১৯৬৯ সালের চলচ্চিত্র ‘পেয়ার কা মৌসুমে’ তরুণ শশী কাপুরের চরিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন। ১৯৮৮ সালে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ দিয়ে তাঁর প্রাপ্তবয়স্ক আত্মপ্রকাশ ঘটে। সেখানে তিনি খলনায়কের ভূমিকায় ছিলেন।
এরপরে তিনি তাঁর বাবার ১৯৯০ সালের চলচ্চিত্র ‘তুম মেরে হো’তে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন এবং ‘মাধহোস’ (১৯৯৪) চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। তবে চলচ্চিত্রটির ব্যর্থতার কারণে তাকে পাঁচ বছরের বিরতি নিতে হয়।
এরপর ২০০০ সালে ‘মেলা’, কিছুদিন টিভি তে কাজ এবং একটি দীর্ঘ বিরতির পর তিনি ২০১৭ সালে ডেঞ্জারের সঙ্গে অভিনয়ে ফিরে আসেন, যা মুক্তি পায়নি। এরপর ২০২১ সালে ‘ফ্যাক্টরি’ সিনেমার মধ্যদিয়ে তাঁর পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। সিনেমাটিতে তিনি একটি গানও গেয়েছিলেন। ২০২২ সালে ‘ওপ্পান্দা’ সিনেমার মধ্যদিয়ে কন্নড় সিনেমায় প্রবেশ করেন ফয়সাল।
এরআগে তিনি অভিযোগ করেছিলেন কীভাবে দাদা আমির-সহ পরিবারের সবাই, তাঁর উপরে অত্যাচার চালিয়েছিল। ফয়সালের দাবি ছিল, তাঁকে ঘরবন্দি করে রেখেছিল আমির আর ঘোষণা করে দিয়েছিল তিনি মানসিকভাবে সুস্থ নন। অভিনেতা আরও জানিয়েছিলেন যে কোনও কাগজে তাঁর সই করার অধিকারও কেড়ে নিয়েছিল আমির। কেড়ে নিয়েছিল ফোন। তবে বর্তমানে দুই ভাইয়ের সম্পর্ক আবার জোড়া লেগেছে।