সম্প্রতি, বলিউড অভিনেতা আদিত্য রায় কাপুর করিনা কাপুর খানের জনপ্রিয় টক শো “হোয়াট ওমেন ওয়ান্ট”-এ এসে তার ব্যক্তিগত জীবন এবং সম্পর্কের অবস্থা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। এই শোতে করিনা কাপুর তার রোমান্টিক জীবনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান, যেটি বিশেষত তাদের ভক্তদের মধ্যে কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। করিনা তাকে সরাসরি প্রশ্ন করেন যে, অনেক মহিলাই তার সম্পর্কের স্ট্যাটাস জানতে চায়। এই প্রশ্নের উত্তরে আদিত্য হেসে বলেন, “চিল করাকে কি স্ট্যাটাস বলা যায়?” তার উত্তরটি খুবই হালকা এবং মজাদার ছিল, যা দর্শকদের কাছে সহজেই গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।
তিনি আরও বলেন, “আমি খুবই খারাপ একজন ফোন ইউজার। সারাদিনে হয়তো আমার কাছে ১০০টা মেসেজ আসে, কিন্তু আমার দেখার সময় হয় না। পরে ব্লক করে দি। এই ভাবেই দিন চলছে।” আদিত্যর এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বোঝা যায় যে, তিনি ব্যক্তিগত জীবনে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলতে পছন্দ করেন এবং এই মুহূর্তে তার জীবন নিয়ে বিশেষ কোনো তাড়াহুড়ো বা উদ্বেগ নেই। আদিত্যর এই ধরনের উদাসীন এবং ঠান্ডা মনোভাব তার ব্যক্তিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, যা তার ভক্তদের কাছে বেশ চমকপ্রদ মনে হয়েছে।
অনন্যা পান্ডের সাথে তার সাম্প্রতিক ব্রেকআপ এবং তার আগে শ্রদ্ধা কাপুরের সাথে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর, আদিত্যর লাভ লাইফ নিয়ে আলোচনা অনেকটাই বেশি হয়েছে। করিনা কাপুরের শোতে এসে তিনি এই বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানান যে, অনন্যা এবং তার মধ্যে কোনো ধরনের তিক্ততা নেই এবং তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখনো বজায় রয়েছে। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে তারা শুধুমাত্র খুব ভালো বন্ধু।” এটি তাদের ভক্তদের কাছে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়, যেখানে দুই প্রাক্তন প্রেমিক একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছেন এবং কাজের মাধ্যমে নিজেদের এগিয়ে নিচ্ছেন।
শুধুমাত্র আদিত্য রায় কাপুর নয়, বলিউডের অন্যান্য অনেক তারকার সম্পর্ক এবং ব্রেকআপ নিয়ে ভক্তদের মধ্যে আগ্রহ বরাবরই বেশি থাকে। আদিত্যর সাথে অনন্যা পান্ডের সম্পর্কের অবসান ঘটার পরপরই তাদের কাজের ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। আদিত্য বর্তমানে সারা আলি খানের বিপরীতে অনুরাগ বসু পরিচালিত ‘মেট্রো ইন ডিনো’ সিনেমায় কাজ করছেন, যা একটি রোমান্টিক গল্প নিয়ে তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে, অনন্যা পান্ডে ‘কল মি বে সিজন ২’ শোতে অভিনয় করছেন, যেখানে তিনি বলিউডের সুপারস্টার অক্ষয় কুমার এবং আর মাধবনের সাথে স্ক্রিন শেয়ার করবেন।
করিনা কাপুরের শোতে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলার সময় আদিত্য তার প্রাক্তন সম্পর্কের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি জানান, ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তা ধরে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, আর ব্রেকআপের পর নিজের কাজে মনোনিবেশ করাই তার জন্য মঙ্গলজনক। আদিত্যর বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, তিনি সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে কোনও তিক্ত অনুভূতি পোষণ করেন না, বরং নিজের জীবনের প্রতিটি অভিজ্ঞতা থেকে কিছু না কিছু শিখেছেন। করিনার শোতে তার এই খোলামেলা কথোপকথন প্রমাণ করে যে, তিনি তার জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে শিখেছেন।
আদিত্যর ফোন ব্যবহারের বিষয়টি নিয়েও শোতে মজার ছলে আলোচনা হয়। করিনা যখন তাকে বলেন, “তুমি সবসময়ই চিল করো,” তখন আদিত্য হাসিমুখে জানান যে, তিনি খুবই খারাপ একজন ফোন ইউজার। তিনি মজার ছলে বলেন যে, প্রতিদিন তার কাছে অনেক মেসেজ আসে, কিন্তু তার সেগুলি দেখার সময় হয় না, আর দেখা না হলে তিনি তা ব্লক করে দেন। এটি তার জীবনধারার একটি অংশ, যা তার প্রায়োরিটিকে স্পষ্ট করে তোলে। যদিও তিনি এই প্রসঙ্গটি মজার ছলে বলেছেন, এটি তার ব্যক্তিগত জীবনের নিরাসক্ততা এবং একধরনের সাদামাটা দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক।
তাছাড়া, আদিত্যর কর্মজীবন বর্তমানে অনেকটাই গতিশীল। ‘মেট্রো ইন ডিনো’-এর মতো বড় প্রজেক্টে কাজ করার পাশাপাশি তিনি নিজের অভিনয় ক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছেন। আদিত্য রায় কাপুরের ভক্তরা তাকে পর্দায় দেখতে উদগ্রীব, বিশেষত তার অভিনীত রোমান্টিক চরিত্রগুলোর জন্য। তার বর্তমান একক অবস্থান, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য এবং জীবনের প্রতি সহজ দৃষ্টিভঙ্গি তাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে।
আদিত্য রায় কাপুরের জীবনে এই পরিবর্তন এবং নিরাসক্তির সময়কাল একধরনের স্বাভাবিকতা এনেছে, যা তার কাজ এবং জীবনের প্রতি গভীর মনোযোগ প্রদান করেছে। তার খোলামেলা কথোপকথনের মাধ্যমে তিনি তার ভক্তদের জানাতে সক্ষম হয়েছেন যে, সম্পর্কের ব্যর্থতা জীবনের শেষ নয়, বরং এটি একধরনের শিক্ষা, যা মানুষকে আরও পরিণত করে তোলে।