গত ৪ঠা ডিসেম্বর ‘পুষ্পা ২’-র প্রিমিয়ারে হায়দ্রাবাদের ‘সন্ধ্যা’ প্রেক্ষাগৃহে হয়েছিল ব্যাপক লোক সমাগম। ‘পুষ্পা ২’ এর প্রিমিয়ারের পাশাপাশি সেদিন প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত ছিলেন ছবির নায়ক আল্লু অর্জুন নিজে। পছন্দের তারকাকে দেখার আগ্রহে দর্শক থেকে অনুরাগী সকলে যেন হুড়োহুড়ি কাণ্ড বাঁধিয়ে দেয়। আর এসবের মাঝেই ঘটে যায় এক অঘটন।
সেদিন ছেলেকে নিয়ে প্রিমিয়ারে এসেছিলেন ৩৯ বছর বয়সি রেবতী। সেদিন অতো হুড়োহুড়ির ভেতর ভিড়ে তাঁর পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ততক্ষণাৎ ওই স্থানেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রেবতী নামে ওই মহিলার। রক্ষে পায়নি তাঁর আট বছর বয়সের ছেলেও। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। প্রাণে বেঁচে আছে বাচ্চাটি এই কম কি। ঘটনাটিতে গুরুতর জখম ও আহত হন প্রিমিয়ারে আসা আরও বেশ কয়েকজন। ঘটনাস্থলে উপযুক্ত নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ তোলেন মৃতার পরিবার।
একই দিনে গ্রেপ্তার থেকে শুনানি হয়ে জামিন পেলেন দক্ষিণী অভিনেতা আল্লু অর্জুন!
এরপরই ওই প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ, আল্লু এবং তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টিমের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার ভিত্তিতেই গত শুক্রবার অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ওই একই দিন তাঁর সালিশি থেকে শুনানি সবই হয়ে যায়। একদিনেই গ্রেপ্তার হয়ে ছাড়াও পেয়ে গেছেন তিনি। প্রিয় অভিনেতার গ্রেপ্তারিতে বেজায় চটেছিলেন তাঁর ভক্তরা। অন্যদিকে তৎক্ষণাৎ তাঁর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা খালাস হওয়াতেও কথা উঠছে বিভিন্নভাবে।
শুক্রবার সকালে বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আল্লু অর্জুনকে। হায়দ্রাবাদের ‘সন্ধ্যা’ প্রেক্ষাগৃহে ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’-এর প্রিমিয়ারে উপচে পড়েছিল মানুষের ঢল। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক মহিলার। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয় আল্লুর বিরুদ্ধে। এরপর শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করা হয় দক্ষিণী তারকাকে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই অল্লুকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয় তেলঙ্গানা হাই কোর্ট। এ বার এই ঘটনায় মুখ খুললেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত।
আল্লু অর্জুন ও সন্ধ্যা প্রেক্ষাগৃহ কাণ্ডে মুখ খুললেন কঙ্গনা রানাওয়াত!
কঙ্গনার বলেছেন, যা ঘটেছে, তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তবে এই ঘটনায় প্রত্যেকেরই দায়বদ্ধতা রয়েছে। সাংসদ এবং অভিনেত্রী বলেছেন, খুব দুঃখজনক ঘটনা এটি। তবে নিজেকে আল্লু অর্জুনজির বড় সমর্থক বলেছেন কঙ্গনা। সঙ্গে এটাও বলেছেন, কিছু ক্ষেত্রে আল্লুর নাকি দৃষ্টান্ত তৈরি করা উচিত। তিনি জামিন পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তিনি উচ্চ স্তরের মানুষ বলেই কোনও ফলাফল ভোগ করতে হবে না, এমন যেন না হয়। মানুষের জীবনের কিন্তু দাম দেওয়া যায় না। কঙ্গনার মতে ক্ষমতা ও প্রভাবশালী মানুষ বলেই এতো সহজে ছাড়া পেয়েছেন দক্ষিণী সুপারস্টার।
সমাজে যাঁদের প্রভাব রয়েছে, তাঁদের চলার পথে আরও সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করেন কঙ্গনা। একথা অপ্রিয় সত্যিও বটে। প্রভাব প্রতিপত্তির জেরে তাঁরা সহজেই ঝামেলা এড়িয়ে যায় ঠিক, তবে তাঁদের উচিত নয় এহেন ঝামেলা জীবনে ডেকে আনা। ধূমপানের বিজ্ঞাপন হোক বা প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়া ভিড়ের ঘটনা, কোনও ভাবেই কেউ দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না বলে তাঁর মত। তাঁর কথায়, “প্রেক্ষাগৃহে ওঁরা উপস্থিত ছিলেন। তাই প্রত্যেকেরই দায়বদ্ধতা রয়েছে।”