অভিকা মালাকার,জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী, যিনি সম্প্রতি শিলিগুড়ির ছোটবেলার স্মৃতির কথা শেয়ার করেছেন। অভিকা ছোটবেলায় শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে একটি যৌথ পরিবারে বড় হয়েছিলেন। এই এলাকাটিতে তার বেড়ে ওঠা ছিল একেবারে স্বপ্নের মতো। তিনি বলেছিলেন, “আমার বাড়ি ছিল এক ধরনের পরিবার, যেখানে সবাই একে অপরের সাথে মিলে মিশে থাকতাম। পাড়া, পরিবারের মতোই ছিল। সবাই একে অপরকে ভালোবাসত এবং সাহায্য করত।”
সপ্তাহে প্রায়ই পিকনিক হতো। ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে সবুজ প্রকৃতির মাঝে ভাই-বোনেরা মিলে আনন্দ করতেন। অভিকা জানান, তার বাড়ি থেকে দার্জিলিং মাত্র দুই ঘণ্টার ড্রাইভ, কিন্তু জীবনে মাত্র একবারই তিনি সেখানে গেছেন। এ কথা শুনে সবাই অবাক হয়। তবে তিনি মিরিকে অনেকবার গেছেন। তার কথায়, “উত্তরবঙ্গের জীবনটাই আলাদা।” তিনি মনে করেন, উত্তরবঙ্গের পরিবেশ ও প্রকৃতি মানুষকে এক অন্যরকম শান্তি দেয়।
তোমাদের রাণী ধারাবাহিকের পর বাড়ির টানে ফেরা…
একদিনের একটি স্মৃতির কথা শেয়ার করতে গিয়ে অভিকা বলেন, ধারাবাহিক ‘তোমাদের রাণী’ শেষ হওয়ার পর তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন, একটা লং ড্রাইভে যাবেন। গাড়ি করে বেরিয়ে পড়লেন, আর যখন গাড়ি থামল, দেখলেন তারা কার্শিয়াং পৌঁছে গেছেন। এসব ছোট ছোট মুহূর্তই তার কাছে খুব আনন্দের।
মুম্বাইয়ের ব্যস্ত জীবনে পাহাড়ের টান….
অভিকা উত্তরবঙ্গের প্রতি নিজের গভীর ভালোবাসার কথা বলেছেন। তিনি জানান, তার জায়গা নিয়ে যেমন আবেগ রয়েছে, তেমনই তার সাফল্যের পর এলাকার মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তা তাকে আপ্লুত করে। তিনি বলেন, “নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করি। এখন আমার জন্য আমার কাছের মানুষরা গর্ববোধ করেন।” ধারাবাহিক ‘তোমাদের রাণী’-তে কাজ করার সময় কলকাতায় থাকতে হয়েছিল তাকে। কাজের ব্যস্ততায় তখন বাড়ি যেতে পারতেন না। নিজের জায়গা থেকে দূরে থাকার জন্য একটা চাপা কষ্ট কাজ করত তার মধ্যে। ধারাবাহিক শেষ হতেই তিনি ছুটে চলে যান তার প্রিয় পাহাড়ে। এখন মুম্বাইয়ে নতুন কাজ নিয়ে তিনি ভীষণ এক্সাইটেড। তবে নিজের জায়গা, প্রিয় মানুষ আর পাহাড়ি পরিবেশকে খুব মিস করেন।
প্রিয় শহর ও মানুষের জন্য অভিকার আবেগঘন বার্তা…..
তিনি আফসোস করে বলেন, “এখন ইচ্ছে হলেও ছুটে যেতে পারব না। তবে দূর থেকেই চাইব, ভালো থেকো আমার শহর, ভালো থেকো প্রিয় পাহাড়-নদী। দেখা হবে তাড়াতাড়ি।” অভিকার এই গল্পগুলো থেকে বোঝা যায়, তার শিকড়ের প্রতি তার ভালোবাসা কতটা গভীর। শহরের ব্যস্ততা, কাজের চাপ, সবকিছু ছাপিয়ে তার মনে এখনো পাহাড়ি পরিবেশের প্রশান্তি আর পরিবারের সঙ্গের মুহূর্তগুলোই সবচেয়ে প্রিয়।
উত্তরবঙ্গের প্রকৃতি তার জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে। তার জীবনযাত্রা ও গল্পগুলো অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। নিজের শিকড়ের প্রতি ভালোবাসা, জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তের আনন্দ এবং সাফল্য পাওয়ার পরও নিজের এলাকাকে ভুলে না যাওয়ার শিক্ষা তিনি তার জীবনের মাধ্যমে আমাদের দিয়েছেন। অভিকা মনে করেন, যত দূরেই থাকুন না কেন, নিজের জায়গা আর শিকড় কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়।