এ. আর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুর বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা চমকে দিয়েছে দেশবাসীকে। ২৯ বছর একসঙ্গে সংসার করার পর তাঁদের এই সিদ্ধান্ত। অনেকেরই বিশ্বাস হচ্ছে না এমনটা হতে পারে। ডিভোর্স নিয়ে নিজের মনের কথাও তুলে ধরেছেন এ. আর রহমান। ইচ্ছে থাকা সত্বেও ৩০ বছর পার করতে পারলেন না বলেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সুরকার।
এবার তাঁদের দুই মেয়ে খাতিজা ও রহিমার প্রতিক্রিয়া নজর কেড়েছে সকলের। সকলেই এই পোস্ট দেখে বিস্মিত। বাবা-মায়ের ডিভোর্স প্রসঙ্গে কী বললেন দুই কন্যা? এ. আর রহমান এবং সায়রা বানু মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিবৃতি জারি করেছিলেন। যেখানে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করেছিলাম যে আমরা ৩০ বছর পূর্ণ করব। কিন্তু, তার আগেই সব কিছু শেষ। এমনকী ভাঙা হৃদয়ের ভারে ভগবানের সিংহাসনও কেঁপে উঠবে। আমরা এই অবস্থায়ও জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের গোপনীয়তার সম্মান করুন। খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।’
কি বললেন সুরসম্রাটের দুই মেয়ে?
গায়ক এ.আর রহমানের মেয়ে রহিমা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন পোস্ট লিখেছেন। তাঁর বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য তাঁর যন্ত্রণা এই পোস্টে ভীষণ ভাবে স্পষ্ট। বাবা এ.আর রহমানের পোস্ট শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করবেন।’
এ ছাড়াও গায়ক কন্যা খাতিজা ও রহিমা লিখেছেন, ‘বিষয়টির প্রতি সম্মান ও গোপনীয়তা বজায় রাখলে আমরা খুবই খুশি হব। এই কঠিন সময়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’ খাতিজা আরও লিখেছেন, ‘আমরা এই কঠিন সময়ে আমাদের গোপনীয়তা বজায় রাখার অনুরোধ করছি।’
এ ছাড়াও এ. আর রহমান ও সায়রা বানুর ছেলে আমিনও গোপনীয়তা রক্ষার আবেদন করেন দেশবাসীর কাছে। উল্লেখ্য, এ. আর রহমান ও সায়রা বানু ১৯৯৫ সালে বিয়ে করেন। দীর্ঘ ২৯ বছর পর নানা তিক্ততায় এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সায়রার আইনজীবী। তবে কী কারণে তাঁদের এই সিদ্ধান্ত, তা এখনও জানা যায়নি।
কি কারণে ২৯ বছরের দাম্পত্যে ভাঙন ধরলো?
রহমানের বিচ্ছেদের জন্য তাঁর সহকর্মী মোহিনী দে’কে দাবী করছেন অনেকে। সকলের ধারণা মোহিনীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে মজেছেন রহমান। তবে সে আশঙ্কা যে একেবারেই ভিত্তিহীন তা জানান রহমানের আইনজীবী। বাঙালি মেয়ে মোহিনী কেন তাঁর বৈবাহিক জীবনের ইতি টানলেন তার কারণ এখনো জানা যায় নি।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ. আর রহমানের আইনজীবী বন্দনা শাহ বলেন, ‘এই দুটি ঘটনার মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। সায়রা ও এ.আর রহমান নিজেরাই ভেবে-চিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ বন্দনা আরও জানান, এ.আর রহমান এবং সায়রা বানু এখনও কোনও আর্থিক চুক্তিতে পৌঁছাননি। তবে তাঁদের মধ্যে সুসম্পর্ক আজীবন বজায় থাকবে।
সায়রার আইনজীবী বলেন, ডিভোর্স তাঁদের দু’জনের জন্যই অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি সিদ্ধান্ত। বন্দনার কথায়, ‘যখন কারও বিয়ে ভেঙে যায় তখন সেটি অনেক কষ্টের মধ্যে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় কখনওই কেউ খুব আনন্দ পায় না। বিবাহ বিচ্ছেদ কোনও আনন্দের অনুষ্ঠান তো নয়। বিয়ের পর অনেক চড়াই-উতরাই এসেছে সায়রার জীবনে। তার থেকেই এই সিদ্ধান্ত।’
বন্দনা আরও জানান, বিবাহ বিচ্ছেদের আসল কারণ বলতে তিনি রাজি নন। তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, ‘রহমান একজন অত্যন্ত প্রোটেক্টিভ স্বামী ছিলেন। তবে সম্পর্ক ভাঙার পিছনে তো নিশ্চয়ই কোনও কারণ থাকে। একজন আইনজীবী হিসাবে সেটা জানলেও আমি আলোচনা করতে পারব না। তাঁরা দু’জনেই একে অপরের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে সম্পর্ক ঠিক রাখতে চান।’