বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল চিত্রনাট্যকার তিনি। জাভেদ আখতারের সঙ্গে জুটি বেঁধে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে ‘শোলে’র মতো ছবি উপহার দিয়েছেন বলিউড ভাইজানের বাবা, সেলিম খান। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি সেলিম খানের ব্যক্তিগত জীবনও হামেশাই থেকেছে চর্চায়। দু’টো বিয়ে, এক ছাদের তলায় দুই স্ত্রীকে একসঙ্গে নিয়ে থাকেন। সেলিম খানের জীবনকাহিনি যেন ৯০ এর দশকের হিট বলিউড ছবির চিত্রনাট্যর গল্পের মতোই।
সেলিমের জন্মদিনে হাতে হাত রেখে খুশি মনে নাচ করলেন সালমা হেলেন!
তাঁর জন্মদিনে এবার এক হলেন দুই সতীন। ৬০ এর দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হেলেন ও সালমা খান দুই স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন। শোনা যায় মন থেকে এখনও হেলেনকে পুরোপুরি মেনে নিতে পারেননি সলমান আরবাজদের মা, সেলিমের প্রথম স্ত্রী সালমা খান। আর মেনে না নিতে পারাটাই স্বাভাবিক। তবে, একটা বয়সের পর জীবন অতীত ভুলতে চায়। পুরনো সমস্ত তিক্ততা মুছে সকলকে আপন করে কাটাতে চায় জীবন। সেই উপলব্ধিই এবার এলো সালমা খানের জীবনেও।
বাস্তবে তাঁরা দুই সতীন, একই চিত্রনাট্যকারের ঘরনি। এক ছাদের নীচে থাকেন দুজনে। উভয়ের মধ্যে খুব সদ্ভাব, এমন উদাহরণ বলিউড কেন দেখাতে পারবে না বাস্তবও। এবারে বিশেষ দিনের বিশেষ উদ্যাপন পরিস্থিতি করে তুললো আরও সুমধুর। ‘সতীন’ হেলেনের হাতে হাত রেখে এক সঙ্গে নেচে তাঁদের স্বামীর ৮৩তম জন্মদিনকে স্মরণীয় করলেন সলমা খান।
হঠাৎ করেই বাবার নতুন বিয়ে, কেমন প্রভাব পড়েছিল সলমন-আরবাজদের মনে?
শারীরিক চাহিদা থেকে নয়, মানসিকভাবেই হেলেনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলেন সেলিম। এর আগে এক রিয়েলিটি শো’তে তিনি বলেন, ‘ওর হাতে তেমন কাজ ছিল না। হেলেন এমন একটা বয়সে পৌঁছেছিল যেখানে ওর পক্ষে ওই ধরণের চরিত্র পাওয়া মুশকিল হচ্ছিল। এরপর ও আমার দ্বারস্থ হয়, ভালোই চলছিল কাজ’। সেলিমের সুবাদে বেশ কিছু ছবিতে কাজের সুযোগ পান হেলেন। সলমনের বাবা আরও বলেন, ‘ওর তখন অল্প বয়স। আমারও কম বয়স। কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে আমি ওকে সাহায্য করিনি। এরপর আমার প্রতি ওর শ্রদ্ধা আর সম্মান বেড়ে যায়। আসলে এই সম্মানের মধ্যেই তো ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। শ্রদ্ধা না থাকলে কাউকে ভালোবাসা যায় না’।
এক ছাদের নীচে বাস করলেও, সতীনের সঙ্গে তেমন সদ্ভাব নেই সালমার। তবে তাঁর সন্তানদের তরফ থেকে কখনও অসম্মানিত হননি হেলেন। ষাট-সত্তরের দশকের রুপোলি পর্দার নামী খলনায়িকা এবং নর্তকী বরং সলমন থেকে সোহেল, প্রত্যেকের আদরের ও সম্মানের। খান পরিবারের এই মিলমিশ এক অসাধারণ উদাহরণ বলিউডে। তারই টুকরো ঝলক ভিডিয়ো আকারে সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল হলো। সালমা আর হেলেনের মুখেচোখে কোনও বিরক্তি বা হিংসে নেই। বরং তাঁরা মনের সুখে পরস্পরের হাত ধরে নেচে চলেছেন। এই দৃশ্য দেখে বলিউড বলছে, ‘ভাইজান’ অভিনীত ৯০ এর জনপ্রিয় ছবি ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’-এর যেন বাস্তব উদাহরণ এই দৃশ্য।
তবে হেলেনের সঙ্গে বাবার রোম্যান্স এবং বিয়ে, শুরুতে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি সলমন-আরবাজ। শোনা যায় বেশ কয়েকমাস বাবার সঙ্গে কথাও বন্ধ ছিল সলমনের। তবে ধীরে ধীরে খান পরিবারের একজন সদস্য হয়ে ওঠেন হেলেন। আজও সলমনের পরিবারের কোনও ছবি অসম্পূর্ণ ‘হেলেন আন্টি’কে ছাড়া। সৎ মা হেলেনের সঙ্গে দারুণ বন্ডিং সেলিমের ছেলে মেয়েদের।
বাড়ির সকলের জন্মদিনই বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয়। সদ্য উদ্যাপিত হয়েছে সেলিম-সলমার বিবাহবার্ষিকী। সেখানেও হাজির ছিলেন প্রত্যেকে। কেক কেটে, হইহই করে, খানাপিনা সেরে আনন্দে দিনটি কাটিয়েছেন সকলে। তার আগেই গিয়েছে সেলিম খানের জন্মদিন। তখনও তাঁর তিন ছেলে সলমন, আরবাজ, সোহেল নিজেদের মতো করে বাবাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে সেলিমের জন্মদিন উদ্যাপনে উপস্থিত থাকতে পারেননি তাঁর বড় ছেলে। তিনি প্রয়াত কংগ্রেস নেতা বাবা সিদ্দিকীর ছেলে জিশান জিয়াউদ্দিন সিদ্দিকীকে নিয়ে দেশের বাইরে। বদলে সেই ফাঁক ভরেছেন ছোট ছেলে সোহেল। তিনি মায়ের সঙ্গে নেচেছেন খুশি মনে।