Celeb Lifestyle Song

ফোঁটা দিয়েও যমের দুয়ারে কাঁটা পড়েনি! ভাইফোঁটায় বড় সিদ্ধান্ত হৈমন্তী শুক্লার!

ভাইবোনেদের কাছে ভাইফোঁটার দিনটা সবসময়ই বিশেষ। বলা যায়, বছরের এই একটা দিনের জন্য পথ চেয়ে থাকেন অনেকেই। ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় আর ১০ টা মানুষের মতোই প্রতি বছর এই রীতি পালন করেন কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। নিজের তিন ভাই ছাড়াও শিল্পী ওস্তাদ রাশিদ খান প্রতি বছর আসতেন তাঁর কাছে, ভাইফোঁটা নিতে। এ বছর সব আছে, শুধু আদরের ভাই রাশিদ নেই। আজও মন থেকে মেনে নিতে পারেন না হৈমন্তী। তাই রাশিদ ছাড়া প্রথম ভাইফোঁটায় নিলেন বড় সিদ্ধান্ত।

রাশিদকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে এল হৈমন্তী শুক্লার

ভাইফোঁটার কথা শুনে এক মুহূর্ত থেমে হৈমন্তী বললেন, রাশিদের মৃত্যুর পর এটি প্রথম বছর ভাইফোঁটা। হৈমন্তী শুক্লা বলেন রাশিদ জি তাঁকে বড্ড ভালোবাসত। একেবারে মায়ের মতো। তাই এ বার তিনি কিছুতেই ভাইফোঁটা পালন করবেন না। কিছুতেই করতে পারবেন না। রাশিদের জন্য এবছর ভাইফোঁটা বন্ধের কথা তিন ভাইকে জানিয়ে দিয়েছেন শিল্পী। ভাইরাও বুঝেছেন দিদির কষ্টটা। হৈমন্তী শুক্লার কথায়, এতে হয়তো কারও কিছু যাবে আসবে না। কিন্তু তাঁর ভিতরের কষ্টটা তিনি বোঝাতে পারছেন না কাউকে। রাশিদ কে আলাদা করে ভাবেননি কখনও। কোনা দিন আলাদা করে আমন্ত্রণ করতে হতো না তাঁকে। তবে রাশিদ ঠিকই আশা করে থাকতেন। হৈমন্তী শুক্লা তাঁকে ফোন না করলেও অনেক সময় তিনি চলে এসেছেন ফোঁটা নিতে।

ভাইফোঁটার দিন রাশিদের পথ চেয়ে বসে থাকতেন হৈমন্তী

একটু দেরি হলেই ফোন করে খোঁজ নিতেন ভাইয়ের। কতক্ষনে আসবে সে? গায়িকার কথায়, তাঁর ফোন পেয়েই যেন নড়েচড়ে বসতেন রাশিদ। এই তো পথেই আছি দিদি, বলেই একগাল হাসি দিতেন। ভাইফোঁটার সময়টায় হৈমন্তী তাই খুব মিস করছেন ভাইকে। বড় দিদি তিনি, তাই যন্ত্রণাও বেশি হচ্ছে। এ বছর ভাইফোঁটায় তাঁর চারিদিক অন্ধকার।

হৈমন্তীর থেকে প্রতিবছর ভাইফোঁটা নিতেন রাশিদ।বিপুল খ্যাতি সত্ত্বেও মাটির মানুষ রাশিদের সঙ্গ হৈমন্তীর খুব ভাল লাগত। দেখা হলেই তাঁকে পান বানিয়ে দিতেন রাশিদ। রাশিদের ছেলেমেয়েরা হৈমন্তিকে পিসি বলে ডাকে। রাশিদের সঙ্গে তাঁর শুধুই গানের সম্পর্ক, এমন নয়। তাঁদের সম্পর্ক পারিবারিক। প্রতি বছর ভাইফোঁটা নিতেন তাঁর থেকে। তাঁর কাছে গানের আবদার করতেন, গান শোনাতেন নিজে, গান নিয়ে গভীর ভাবনার কথা বলতেন। একবুক কষ্ট নিয়ে জানান তাঁকে ‘বুড়ি’ বলে ডাকার একটা মিষ্টি ছেলে চলে গেল।

হৈমন্তী শুক্লা আরও বলেন, বাংলা ভাষা খুব ভালবাসতেন রাশিদ। বাংলায় গাইতে চাইতেন নিজেও। যখন পরিচয় ছিল না, তখনও রাশিদের কণ্ঠমাধুর্যে পাগল ছিলেন হৈমন্তী। পরিচয় ঘটামাত্র অচিরে তা নিবিড় হয়ে ওঠে। এত প্রাণোচ্ছ্বল মানুষ দুনিয়াতে বেশ বিরল। শাস্ত্রীয় গানে অমন বিপুল খ্যাতির পরেও মাটির মানুষ ছিলেন রাশিদ।

রাশিদের গান শুনতে গিয়ে কখনও লাফিয়ে উঠেছেন, কখনও অঝোরে কেঁদেছেন।রাশিদ গাইতে গাইতে সেসব লক্ষ্যও করতেন।পরে মজা করে বলতেন ‘তুমি কী করছিলে জানো? এই রকম করছিলে! ওই রকম করছিলে!’ অবাক হয়ে হৈমন্তী ভাবতেন, দু’টো মানুষ কি এক? যে গাইছিল আর যে কথা বলছে এ ভাবে? পরে তাঁর মনে হতো অমন স্বভাব না হলে কি আর এমন শিল্পী হয়।

অনেকবার বহু জায়গায় তাঁরা একসঙ্গে গিয়েছেন। সারা পথ শুধু গানের কথা হতো তাঁদের। হৈমন্তীর বাবা পণ্ডিত হরিহর শুক্লার কথা হতো। শেষে ভারী গলায় ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করেন যে, কি প্রয়োজন ছিল এত তাড়াতাড়ি রাশিদকে নিজের কাছে টেনে নেওয়ার? ভাইফোঁটা দিয়েও তো তাঁর শেষরক্ষা হলো না। যমের দুয়ারে কাঁটা তো পড়লো না।

Priyanka Sarkar

Priyanka Sarkar

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Welcome to Xplorent Media, where every click brings the colourful worlds of Bollywood and Tollywood  to life. 

Our Company

Get Latest Updates and big deals

    Come along and discover the wonders of television, films, and celebrity culture like never before!

    Xplorent Media @2024. All Rights Reserved.