এ দুনিয়াতে ১০ নম্বর মানেই কিছু বিশেষ কিছু অন্যরকম আর স্পেশাল। আর বাংলার বিশেষ কিছু হলো গান। গানের বিশেষত্ব বাংলা ব্যান্ড। আর বিশেষ ব্যান্ডের বিশেষ কিছু নিয়েই আসছে ‘চন্দ্রবিন্দু’র দশম অ্যালবাম ‘টালোবাসা’। প্রায় ১২-১৩ বছর বাদে আসছে তাঁদের নতুন অ্যালবাম।
তাঁদের নতুন এই অ্যালবামের সঙ্গেই তাঁরা ফিরিয়ে আনছেন এলপি রেকর্ড। চন্দ্রবিন্দুর নতুন অ্যালবামের সবথেকে বড় চমক এটাই। আইটিউনস, স্পটিফাইয়ের যুগে তাঁরা আনতে চলেছেন আস্ত অ্যালবাম। তাঁদের এই কাজে নব্বইয়ের নস্টালজিয়া ফিরবে। সেই নস্টালজিয়া ফেরাতেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে চলেছে ‘চন্দ্রবিন্দু’। এবারে ব্রহ্মাই সম্ভবত জানতেন চন্দ্রবিন্দুর না বলা কম্মটি।
এক যুগ বাদে সারপ্রাইজ ‘চন্দ্রবিন্দু’র। এক যুগ বাদে এই নতুন অ্যালবাম বের করা প্রসঙ্গে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, একটা সময় ছিল যখন বছর বছর তাঁদের অ্যালবাম বেরত। সেইসময় তাঁদের দু’চোখ জুড়ে স্বপ্ন ছিল, একদিন দশখানা অরিজিনাল অ্যালবাম বের হবে। তাঁদের প্রথম ক্যাসেট বেরিয়েছিল ১৯৯৭ সালে। তার ২৭ বছর পর চন্দ্রবিন্দু সত্যিই দশম অ্যালবাম বার করতে যাচ্ছে।
আসছে চন্দ্রবিন্দুর দশমতম অ্যালবাম
রেকর্ডের আকারে নতুন অ্যালবাম প্রকাশের ভাবনা উপল সেনগুপ্তর। অনিন্দ্য জানালেন, একটা ব্যাপারে বেশ দ্বন্দে পড়েছিলেন তাঁরা। একটি অ্যালবাম বেরবে সেখানে শুধুই আইটিউনস আর স্পটিফাই’তে গান শোনা যাবে কিন্তু হাতে নেওয়া যাবে না, নতুন গানের গন্ধ শোঁকা যাবে না তাই হয় নাকি? তখনই নাকি বুদ্ধি দিয়েছিল উপল, বলেছিলেন রেকর্ড বের করার ধারণা। এমন অসাধারণ প্রস্তাবে সম্মতি দেন বাকিরাও। বন্ধুরাও নাকি এগিয়ে এসেছে নানান দেশ-মহাদেশ থেকে। চন্দ্রবিন্দুর ১০ নম্বর অ্যালবাম মুক্তি পাবে নতুন এক রূপে। তাঁদের ক্যাসেট থেকে এই রেকর্ডে হাঁটার দীর্ঘ পথ চলাগুলো খুব উত্তাল ও উত্তাপময় ছিল।
উপল সেনগুপ্ত বললেন, এত বছর পর আবার রেকর্ড! ভীষণ উত্তেজিত তিনি। রেকর্ড তো প্রায় উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে পুরনো ব্যান্ডের রেকর্ডগুলো আবার ফিরে আসছে, নতুন ব্যান্ডগুলোও ভিনাইলে প্রিন্ট করাচ্ছে। এবিষয়ে উপলকে কেউ একজন আইডিয়াটা দিয়েছিল। তিনি বলেন, শুধু ভারত জুড়েই কোথাও এভাবে প্রিন্ট হয় না। ইংল্যান্ড বা চিনে করাতে হবে প্রিন্টটা। খরচটাও পড়বে অনেকটা বেশি।
কিন্তু এবার যেহেতু ‘চন্দ্রবিন্দু’ তেরো বছর পর, একেবারে নিজেদের উদ্যোগে অ্যালবামটা বের করছে, সেখানে আর খরচের হাত নিয়ে কিপ্টেমো করা উচিত নয়। তিনি বিভিন্নভাবে খোঁজ করতে করতে অস্ট্রেলিয়ার এক বন্ধুর সূত্রে একটা ব্যবস্থা করেছেন। রেকর্ড তৈরির যন্ত্রতে তাঁদের ‘টালোবাসা’ বেরোচ্ছে।চন্দ্রবিন্দু কিন্তু অনেককিছুই প্রথমবার করেছে। বাংলা ব্যান্ড হিসেবে প্রথম আমেরিকায় যাওয়া, প্রথমবার বিদেশে গিয়ে মাস্টারিং করা, প্রথম বিদেশি র্যাপারের সঙ্গে কোলাবরেটও প্রথম তাঁরাই করেছিল। ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র এত বছর পর এলপি আবার ফিরিয়ে আনছে সেই ‘চন্দ্রবিন্দু’-ই।
‘টালোবাসা’ অ্যালবামের ভাবনার জন্ম
অনিন্দ্য আরও বলছেন, অ্যালবাম বের করার ভাবনাটা তাঁদের বহুদিন ধরেই ছিল। কিন্তু সকলেরই বিভিন্ন ব্যস্ততায় সেটি আর হয়ে উঠছিল না। আর এই দীর্ঘবিরতির জন্য শ্রোতাদের কাছে তাঁরা একান্ত ক্ষমাপ্রার্থী। তবে এইসময়ে দাঁড়িয়ে নতুন বাংলা অরিজিনাল গান বের করতে পেরে তাঁরা আপ্লুত। তাঁদের আসন্ন রেকর্ডটা নিয়ে মানুষের মধ্যে কাজ করছে ব্যাপক উন্মাদনা। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ রেকর্ড বুকিং হয়ে গিয়েছে। অন্যদেশ থেকে প্রকাশিত লিমিটেড এডিশন ৩৫০টি রেকর্ড পাওয়া যাবে অগ্রিম বুকিং এর ভিত্তিতে। জেন জি’র ভালোবাসার যুগে আসছে ‘টালোবাসা’।