১৯৯৪ সালে ঐশ্বর্য রাই যখন মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন, তখন তার সৌন্দর্য, আত্মবিশ্বাস এবং উপস্থিতি তাকে অন্য প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। বিচারকদের তিনি বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছিলেন একটি প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে। ঐশ্বর্যকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “একজন মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার জন্য কোন গুণগুলো থাকা উচিত?” ঐশ্বর্য রাই এই প্রশ্নের উত্তরে যা বলেছিলেন তা কেবল তাঁর চিন্তাধারার পরিচয় নয়, বরং একজন সত্যিকারের মানবিক ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন।
ঐশ্বর্য রাইয়ের অসামান্য জবাব,,
ঐশ্বর্য বলেছিলেন, “যিনি মিস ওয়ার্ল্ড হবেন, তার উচিত সমাজের জন্য তার সহানুভূতি এবং মানবিক গুণাবলির প্রমাণ দেয়া। তাকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং যে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ রয়েছে, তাদের প্রতি বিশেষ সহানুভূতি থাকা উচিত। মিস ওয়ার্ল্ড শুধু উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষদের জন্য নন; বরং তিনি এমন একজন হওয়া উচিত যিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য ভাবেন, সবার প্রতি তার সমান দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং তাকে প্রতিটি মানুষের জন্য কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। সত্যিকারের একজন মানুষ হতে হবে তাকে। শুধু একজন সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বিজয়ী নন, বরং প্রকৃত অর্থে একজন ‘বিশ্বসুন্দরী’ হওয়ার জন্য তাকে হৃদয় দিয়ে মানবতার সেবা করতে হবে।”
কজন সত্যিকারের বিশ্বসুন্দরী কীভাবে হয়ে ওঠেন,
এই উত্তরটি বিচারকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। ঐশ্বর্যের উত্তর কেবল প্রতিযোগিতার জন্যই ছিল না, বরং এটি ছিল মানবতার প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা ও দায়বদ্ধতার প্রকাশ। তাঁর এই উত্তরের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক নয়, বরং একজন মানুষের চিন্তা, সহমর্মিতা এবং দৃষ্টিভঙ্গিতেও তা প্রতিফলিত হয়। ঐশ্বর্য দেখিয়েছিলেন যে, একজন প্রকৃত বিশ্বসুন্দরী তখনই হওয়া সম্ভব যখন তার মধ্যে মানবিক গুণাবলি থাকে যা কেবল নিজের জন্য নয়, বরং সবার জন্য কাজ করার মনোভাব নিয়ে আসে।
ঐশ্বর্যের মিস ওয়ার্ল্ড জেতা শুধু তার জন্যই নয়, বরং সমগ্র ভারতের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয়, যিনি এই খেতাব অর্জন করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে ভারতকে বিশ্বের দরবারে একটি বিশেষ স্থানে পৌঁছে দেন। ঐশ্বর্যের এই সাফল্যের পর, ভারতীয় নারীদের জন্য আরও বড় বড় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার ও নিজেকে প্রমাণ করার পথ উন্মুক্ত হয়।
১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড জেতার পর থেকে ঐশ্বর্য শুধু চলচ্চিত্র জগতেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। তিনি তার মেধা এবং মানবিক গুণাবলির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে তিনি সত্যিই একজন ‘বিশ্বসুন্দরী’।