Movie Theater Tollywood

আমার অভিনয় বিকাও হতে পারে, তবে ভুল করেও আমায় কিনতে আসবেন না…’, দৃঢ় কন্ঠে বললেন ‘বিনোদিনী’ রুক্মিণী

‘বিনোদিনী,একটি নটীর উপাখ্যান’ সিনেমাটি বাংলা মঞ্চাভিনয়ের ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় চরিত্র বিনোদিনী দাসীর জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত। ১৮৫৭ সালে জন্ম নেওয়া বিনোদিনী, যাকে ‘নটি বিনোদিনী’ হিসেবেও সম্বোধন করা হয়, তিনি বাংলা থিয়েটারের একজন পথিকৃৎ হিসেবে আজও পরিচিত। রামকমল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত এই ছবিতে বিনোদিনীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুক্মিণী মৈত্র, যিনি প্রথমবার এই ঐতিহাসিক চরিত্রে সকলের সামনে আসার সুযোগ পেয়েছেন। সিনেমার টিজার প্রকাশিত হতেই দর্শকরা ভীষণভাবে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন, বিশেষত রুক্মিণী মৈত্রর অভিনয় এবং চরিত্রটির শক্তিশালী উপস্থাপনা নিয়ে।

থিয়েটারের প্রতি বিনোদিনীর ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের গল্প

বিনোদিনীর জীবনের প্রধান অনুপ্রেরণা এবং আত্মত্যাগের মূলে ছিল থিয়েটারের প্রতি তার নিখাদ ভালোবাসা। থিয়েটারকে তিনি “পুজো” হিসেবে দেখতেন, কিন্তু সমাজের বিভিন্ন দ্বন্দ্ব এবং শ্রেণিগত মানসিকতার কারণে তাঁকে বারবার বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছিল। বিনোদিনী ছিলেন অসম্ভব প্রতিভাবান এবং তার অভিনয়ের দক্ষতা দিয়ে তিনি সকলকে মুগ্ধ করেছিলেন। তবে, সমাজ তাকে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি, কারণ তিনি বারবণিতা পরিবেশ থেকে উঠে এসেছিলেন। বিনোদিনী মাত্র ১২ বছরেই মঞ্চাভিনয়ে প্রবেশ করেন এবং খুব শীঘ্রই বাংলা থিয়েটারে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক প্রতারিত হওয়ার কাহিনি। এই প্রতারণার অংশ ছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষের মতো ব্যক্তিত্ব, যিনি বিনোদিনীর অভিনয়জীবনের গুরু ছিলেন।

বিনোদিনীর সংগ্রামমুখর জীবন কেমন ছিল?

সিনেমার টিজারে, গিরিশচন্দ্র ঘোষের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। গিরিশ ঘোষ একসময় গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। থিয়েটারের মালিক প্রতাপচাঁদ জহুরির সাথে বনিবনা না হওয়ায়, তিনি নতুন একটি থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় বিনোদিনী ও গুর্মুখ রায়ের সাথে এক জটিল সম্পর্কের জাল তৈরি হয়। গুর্মুখ রায় নামক এক মারোয়াড়ি যুবক বিনোদিনীকে রক্ষিতা হিসেবে পাওয়ার শর্তে থিয়েটার প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ দিতে সম্মত হন। বিনোদিনী এই শর্তে রাজি হয়ে গিরিশ ঘোষের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিডন স্ট্রিটে একটি থিয়েটার ভবনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। কিন্তু পরে বিনোদিনীকে প্রতারণার শিকার হতে হয়। তার ইচ্ছে ছিল থিয়েটারটির নাম হবে ‘বি থিয়েটার’, কিন্তু শেষে তার নাম হয় স্টার থিয়েটার। এরপর গুর্মুখ রায়ও তাকে ছেড়ে চলে যান, যা বিনোদিনীর জীবনে নতুন একটি আঘাত হিসেবে নেমে আসে।

টিজারে রাহুল বোসকে দেখা গিয়েছে রাঙাবাবুর ভূমিকায়, যা বিনোদিনীর জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়াও মীর অভিনয় করেছেন গুর্মুখ রায়ের চরিত্রে, এবং কুমার বাহাদুরের ভূমিকায় রয়েছেন ওম সাহানি। পুরো সিনেমা জুড়ে বিনোদিনীর বলিষ্ঠ এবং দৃঢ়চেতা মানসিকতার গল্প উঠে এসেছে। থিয়েটারজগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি সমস্ত বাঁধা এবং প্রতারণা সহ্য করেছিলেন। তাকে বারবার বলতে শোনা যায়, “এই থিয়েটারকে আমি পুজো করি।”

সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সৌরেন্দ্র ও সৌম্যজিৎ, যারা দৃশ্যগুলির আবেগময়তার সাথে সুরের একটি চমৎকার সংমিশ্রণ করেছেন। দীপাবলিতে প্রকাশিত টিজারটি ইতিমধ্যেই অনেককে আবেগপ্রবণ করেছে। বিনোদিনীর জীবন এবং সংগ্রামের গল্পটি অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা এই সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের কাছে আরও নিবিড়ভাবে পৌঁছাবে।

Avatar

Diyasha

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Welcome to Xplorent Media, where every click brings the colourful worlds of Bollywood and Tollywood  to life. 

Our Company

Get Latest Updates and big deals

    Come along and discover the wonders of television, films, and celebrity culture like never before!

    Xplorent Media @2024. All Rights Reserved.