র্যাচেল গুপ্তার ‘মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল’ ২০২৪ এ জয় তাঁর জীবনের এবং দেশের জন্য একটি বড় মাইলফলক। মাত্র ২০ বছর বয়সে, র্যাচেল তার আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব, প্রতিভা এবং চমৎকার উপস্থিতির মাধ্যমে বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় ৭০টিরও বেশি দেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে র্যাচেলের জয় ভারতীয়দের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতা এমন একটি মঞ্চ, যেখানে প্রতিযোগীরা শুধুমাত্র সৌন্দর্যের ভিত্তিতে নয়, বরং বিশ্বশান্তি, সামাজিক সমস্যা এবং আত্মসম্মানজনিত বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নিজেদের উপস্থাপন করেন।
এই প্রতিযোগিতায় র্যাচেল বিশেষভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করেন তার করুণাময় ও যুক্তিসম্মত উত্তর এবং উপস্থিতির জন্য। তার প্রতিটি উত্তর তার গভীর চিন্তাশীলতা এবং বিশ্ব সমস্যাগুলির প্রতি তাঁর সজাগ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। শুধু তাই নয়, তাঁর উপস্থিতি এমন ছিল, যা তার স্বাভাবিক ক্যারিশমা এবং দক্ষতা প্রতিফলিত করে। র্যাচেলের এই অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে শীর্ষ পাঁচ প্রতিযোগীর তালিকায় স্থান করে দেয়, যেখানে তিনি ব্রাজিল, ফিলিপাইন, মায়ানমার, এবং ফ্রান্সের প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অবশেষে, চূড়ান্ত রাউন্ডে র্যাচেল ফিলিপাইনের সিজে ওপিয়াজাকে পরাজিত করে মুকুটটি জিতে নেন।
র্যাচেলের বিজয় কেবল একটি ব্যক্তিগত অর্জন নয়….
এটি ভারতীয়দের জন্য গর্বের বিষয়। এটি এমন একটি মুহূর্ত, যা প্রমাণ করে যে প্রতিভা এবং মেধা থাকলে, সমস্ত সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করা যায়। ভারত দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় একটি শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে, এবং র্যাচেলের এই জয় সেই ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর জয় ভারতীয় যুবতীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা, যারা বড় স্বপ্ন দেখতে চান এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চান।
র্যাচেলের এই যাত্রা কি আদেও সহজ ছিল?
মুকুট জেতার জন্য তাঁকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে, নিজেকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হয়েছে। মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনালের মঞ্চে তিনি যখন তার মতামত প্রকাশ করেন, তখন সেটা শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না; এটা ছিল একজন বিশ্ব নাগরিকের মতামত, যিনি শোষণমুক্ত, শান্তিপূর্ণ, এবং সমতা ভিত্তিক বিশ্ব দেখতে চান। তিনি প্রতিযোগিতার থিম, ‘স্টপ দ্য ওয়ার অ্যান্ড ভায়োলেন্স’ এর প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন জানান এবং বিশ্ব শান্তি প্রচারের জন্য তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
র্যাচেলের এই সফলতা তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং সমর্থকদের জন্য বিশেষভাবে গর্বের। তার প্রশিক্ষক এবং মেন্টররাও তার সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তারা তার প্রতিভা চেনাতে সাহায্য করেছেন এবং তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এই সকল প্রচেষ্টা একত্রিত হয়ে র্যাচেলকে সেই উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে, যা তাকে বিশ্বের সামনে পরিচিত করেছে।
র্যাচেল গুপ্তার জয় কেবল একটি মুকুটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি তার আত্মবিশ্বাস এবং প্রচেষ্টার ফসল। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। ভবিষ্যতে, র্যাচেলের লক্ষ্য হল বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রকল্পে নিজেকে যুক্ত করা এবং তাঁর অবস্থান থেকে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। তার জয়ের ফলে, অনেক ভারতীয় মেয়েরা অনুপ্রাণিত হবে তাদের নিজস্ব ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রাখার জন্য এবং বড় স্বপ্ন দেখার সাহস অর্জন করবে।