রণিতা দাস, যিনি টলিউডে “বাহা” নামে পরিচিত, বাংলা ধারাবাহিকের জগতে একটি উজ্জ্বল তারকা ছিলেন। তাঁর অভিনয় ক্ষমতা এবং চিত্তাকর্ষক চেহারা তাকে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। ‘ইষ্টি কুটুম’ ধারাবাহিকে ঋষি কৌশিকের বিপরীতে তাঁর অভিনয় ছিল দর্শকদের মধ্যে বিশেষভাবে প্রশংসিত। ধারাবাহিকটি ২০১১ সালে স্টার জলসায় সম্প্রচারিত হয় এবং দর্শকের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
বাহা ও অর্চির কাহিনি দর্শকদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছিল। অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি শুধুমাত্র টেলিভিশনের দর্শকদের মন নয়, বরং পুরো টলিপাড়ার মনও জয় করেছিলেন। তিনি তাঁর দক্ষতা, অভিনয়শৈলী এবং চরিত্রে নিখুঁত আবেগ প্রকাশের জন্য পরিচিত ছিলেন। তাঁর অভিনয় যেন জীবন্ত ছিল, যা দর্শকদের কাছে খুবই প্রভাবশালী মনে হত।
কেন হঠাৎ করে অবসর নেন অভিনেত্রী??
কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি অভিনয় থেকে অবসরে চলে যান, যা দর্শকদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। অভিনয়ের সময় তিনি শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন, বিশেষ করে তাঁর মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড ব্যথা এবং ওজন বৃদ্ধির কারণে তাঁকে কাজ ছেড়ে দিতে হয়। তিনি জানান, “আমি শারীরিক অসুস্থতার কারণে ধারাবাহিকটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম।”
সেই সময় এই বিষয়টি নিয়ে অনেক গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। কিছু মহলে বলা হয়েছিল যে তাঁর জনপ্রিয়তার জন্য তিনি আত্মমগ্ন হয়ে পড়েছিলেন এবং বেশ কিছু লোকের মতে, তিনি জেদের বশে ধারাবাহিক ছেড়েছিলেন। যদিও পরে তিনি অসুস্থতার কারণেই কাজ থেকে সরে গেছেন, তবে এই সমস্ত গুঞ্জনগুলো টলিপাড়ায় বেশ আলোচনা তৈরি করেছিল।
রণিতা জানান যে,
তাঁর শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি আরও কাজ করতে পারেননি। “যদি আমি ওইভাবে কাজ করতে থাকতাম, তাহলে হয়তো গুরুতর বিপদে পড়তে হত,” তিনি বলেন।
অভিনয়ের বাইরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় রয়েছেন। তিনি প্রায়ই নিজের ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেন, যা দর্শকদের সঙ্গে তাঁর সংযোগ বজায় রাখে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তিনি কিছু সিনেমায় কাজ করেছেন, কিন্তু ছোটপর্দায় ফিরে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই।
অবশেষে, টলিপাড়ার দর্শকরা এখনও রণিতা দাসকে মনে রেখেছেন এবং তাঁর অভিনয়ের জন্য তাঁকে স্মরণ করেন। তাঁর অভিনয় শিল্পে অনন্য অবদান এবং টেলিভিশনের সোনালী দিনগুলোর একটি অংশ হয়ে থাকবেন তিনি। দর্শকরা আশা করেন, একদিন হয়তো আবার তাঁকে ছোটপর্দায় দেখার সুযোগ পাবেন।
এভাবেই রণিতা দাসের গল্প, যা শুধু একটি শিল্পীর কাহিনি নয়, বরং একটি মানুষের সংগ্রামের গল্প। অভিনয় এবং অসুস্থতা, উভয় ক্ষেত্রেই তিনি যে সংকল্প এবং জেদের পরিচয় দিয়েছেন, সেটি বর্তমান প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।