রানী মুখার্জি এবং কাজল কয়েক দশক ধরে বোম্বেতে নিজেদের কাজের সূত্রে বসবাস করছেন কিন্তু বাংলার সাথে তাদের সংযোগ এখনও নিবিড়। প্রতি বছর এই দুই বোন দুর্গাপূজা উৎসবে মেতে ওঠেন । বাংলার বাইরে দিল্লি, মুম্বই সহ আরও নানান শহরে ধুমধাম করে পালন করা হয় দুর্গাপুজো। যত দিন যাচ্ছে, পুজোর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। মুম্বইয়ে শহরে যে সমস্ত দুর্গাপুজো হয় সেসব পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হলো মুখার্জি বাড়ির পুজো।যেখানে প্রথম দিন থেকে পুজোয় সামিল হন বলি তারকা কাজল থেকে রানি মুখার্জি।
রানীর পুজো
মুখার্জি বাড়ির পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানেই যেন ধরা পড়ে এক টুকরো বাংলা। বিভিন্ন ধরনের দোকান যেমন বসে, তেমনই খাওয়া-দাওয়ার বিশেষ আয়োজনও করা হয়। এছাড়া পুজোর ভোগ তো রয়েছেই। ফলে মুম্বইয়ে প্রবাসী বাঙালিদের কাছে মুখার্জি বাড়ির পুজো এক অন্য মাত্রা রাখে। তার সঙ্গে উপরি পাওনা কাজল – রাণীর দর্শন। পুজোর ক’দিন রানির সাজে থাকে সাবেকিয়ানা।পুজোর ক’দিন রানি বাঙালি বৌয়ের সাজে সাজতেই পছন্দ করেন। হাতে শাঁখা-পলা, মাথায় চওড়া করে সিঁদুর। খোঁপায় ফুলের মালা। বছরের এই ক’দিন রানির সাজে বাঙালিয়ানা ছাপ স্পষ্ট থাকে। বছরের অন্য সময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও পুজোয় অঞ্জলি দেওয়া থেকে দর্শনার্থীদের মধ্যে ভোগ বিতরণ— দুর্গাপুজোর পাঁচ দিন একেবারেই বাড়ির মেয়ের ভূমিকায় থাকেন রানি।প্রসঙ্গত, অভিনেত্রী কাজলের ঠাকুরদা শশধর মুখার্জী ও রানীর ঠাকুরদা দুই ভাই , গোড়া থেকেই তারা সিনেমার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুখার্জী বাড়ির এই বিখ্যাত পুজো উদযাপন করা হয় তাঁদের ‘ ফিল্মিস্তান’ নামক বিশাল স্টুডিওতে।এই পুজোটি রানী মুখার্জ্জির বাড়ির পুজো হিসেবে বিখ্যাত।
সেই সঙ্গে পুজোয় থাকেন কাজল ও অজয় দেবগণ। আসলে কাজল সম্পর্কে রাণীর তুতোবোন। স্বাভাবিক ভাবে থাকেন কাজলের মা তনুজাও। বম্বে সর্বজনীন দুর্গাপূজার শুরু ১৯৪৭ সালে। মুম্বইয়ের প্রবাসী বাঙালিদের কাছে এই পুজো ঐতিহ্য ও আবেগের মিশ্রণ। অমিতাভ, অভিষেক বচ্চন, জয়া বচ্চন থেকে ঋত্বিক রোশন, রণবীর কাপুর অনেকেই নিয়ম করে উপস্থিত হন এই পুজোয়। শুধু পুজোয় আসাই নয়, অনেক তারকাই নিজেরা হাত লাগান পুজোর কাজে। এই পুজোয় তারকাদের উপস্থিতিও বেশ চোখে পড়ে। মুখার্জি বাড়ির পুজোয় রীতি মেনে দেবীর বোধন থেকে শুরু করে সন্ধিপুজো, সিঁদুর খেলা সবই হয়। চারদিন ধরে ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। বলিউডের বিখ্যাত সেলিব্রিটিরা ছাড়াও মুম্বাই প্রবাসী বাঙালিরা ও মুম্বাইয়ের সাধারণ মানুষও ভিড় করেন পুজো দেখতে।হাজির থাকেন ‘মুখার্জি’ বাড়ির ভাইবোনেরা , রানি, তানিশা, সর্বানী সহ অন্যান্যরা।পুজোর দিনগুলো তাঁদের কাছে পারিবারিক পুনর্মিলন। সারা বছর ব্যস্ততা থাকে। দিদি-বোন, ভাইদের সঙ্গে দেখাই প্রায় হয় না। তবে ষষ্ঠী থেকে দশমী সকলে প্যান্ডেলে উপস্থিত থেকে পুজোয় অংশ নেন। দর্শনার্থীদের ভোগ বিতরণ করেন রানি-কাজলরা। এটাই তাঁদের বাড়ির রীতি।