নাতি বড় ডাক্তার, তবু বুড়ো ঠাম্মাকে ইনজেকশন দেওয়া যাচ্ছে না। বাচ্চাদের মতো বায়না করছেন ঠাম্মা। এরপর বাড়িতে আগমন ঘটে এক নার্সের। মুহূর্তেই সেরে ফেলেন ঠাম্মাকে ইনজেকশন দেবার কাজ। ডাক্তরবাবুকে আবার ভালো থাকার মন্ত্র শেখায়।এইরকম গল্প দেখিয়েই প্রমো বেরোয় নতুন ধারাবাহিক ‘আনন্দীর’। গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে জি বাংলায় শুরু হয় নতুন এই ধারাবাহিক। ধারাবাহিকে আবার জুটি বেঁধেছেন ছোটোপর্দার জনপ্রিয় মুখ অন্বেষা হাজরা ও ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়। এই কদিনেই বেশ সাফল্যের পথে এগিয়েছে এই ধারাবাহিক। টিআরপির শীর্ষস্থানটাও এবার আনন্দী’র দখলে থাকবে বলেই ধারণা করা যাচ্ছে।
ধারাবাহিক আনন্দী
বাংলা ধারাবাহিকের কিছুটা একই ভাবধারার গল্প নিয়েই এগোচ্ছে এই ধারাবাহিক। নায়িকা সবার মনের দুঃখ দূর করছে, নায়ককে ভালবাসতে শেখাচ্ছে, ঘরে বাইরে সবজায়গায় দশভূজা এই গল্পেই বাঁধা পড়তে পারে আনন্দীও। কিন্তু তার পরেও দর্শকরা এই গল্পকে দিচ্ছেন প্রচুর ভালোবাসা। তার প্রথম কারণ তো অবশ্যই নায়ক নায়িকার জুটি। তবে দ্বিতীয় কারণ হলো, একই ভাবধারার গল্পকেই পরিচালক কিছুটা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছেন। সেই উপস্থাপনার প্রেমে পড়েছে দর্শক। এর আগে জি বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ ধারাবাহিকে একসাথে জুটি বেঁধেছিলেন অন্বেষা-ঋত্বিক। ১২ এপ্রিল ২০২১ থেকে শুরু হয়েছিল এই ধারাবাহিক। সাত্যকি উর্মির গল্প মন জিতেছিল দর্শকদের। প্রচলিত ভাবধারা থেকে বেরিয়ে এসে কিছুটা ভিন্ন ধারার গল্প দেখানো হয়েছিল এই ধারাবাহিকে। বাড়ির বউ মানেই যে তাকে দশভূজা হতে হবে সেই গল্পের বাইরে এসে গল্প সাজানো হয়েছিল।
ঊর্মির সরলতা সঙ্গে টুকাইবাবুর প্রতি তাঁর ভালোবাসা বিশ্বাসে মন জিতেছিল দর্শকদের। ধারাবাহিক শেষ হওয়াতে তাই ভক্তদের একটু মন খারাপ ছিলো বৈ কি। আবারো এই জুটিকে একসঙ্গে পর্দায় দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন দর্শক ভক্তরা। শেষমেষ অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। জি বাংলাতেই আবার শুরু হয়েছে অন্বেষা ঋত্বিকের নতুন ধারাবাহিক ‘আনন্দী’। তবে এই ধারাবাহিক শুরু হতে না হতেই যেন মাত দিলো বাকি ধারাবাহিকের। এই ধারাবাহিকের জন্য খুব কম সময়েই শেষ হয়ে গেল আরেক জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’। ছোট্ট মিষ্টি মিহির অভিনয় আর গল্প মিলিয়ে এই ধারাবাহিকও কিন্তু দর্শকদের বেশ পছন্দের তালিকায় ছিল। তবে খুব বেশি দিন মেয়াদ হয় নি এই ধারাবাহিকের। ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’র স্লটেই শুরু হলো নতুন ধারাবাহিক আনন্দী। আনন্দী যেভাবে এতো কম সময়েই জিতে নিয়েছে দর্শকদের মন তাতে বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে টিআরপির দৌড়ে অন্য ধারাবাহিককে বেশ ভালই মাত দেবে এই ধারাবাহিক। জি বাংলার অন্য ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা একটু হলেও কি হুমকির মুখে?আনন্দী ধারাবাহিকে খলনায়িকার ভূমিকায় দেখা যেতে পারে সৃজনী মিত্র কে। ইতিমধ্যেই ধারাবাহিকে তাঁকে দেখা গেছে। নায়কের বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। মনে মনে নায়ককে ভালোওবাসেন। পরবর্তীতে তাকে নেগেটিভ চরিত্রে দেখা যাবে কিনা জানতে চাইলে সংবাদমাধ্যমকে অভিনেত্রী জানান, তিতির (সৃজনীর চরিত্রের নাম) এমনিতে বেশ ভালো মেয়ে তবে ভালোবাসার মানুষের সাথে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারে না ঠিক। তাঁর এই মন্তব্য ভবিষ্যতে তাঁর নেগেটিভ চরিত্রকেই ইঙ্গিত করে। ধারাবাহিকে নার্সের ভূমিকায় অভিনয় করছেন অন্বেষা। এর আগে বেশ কিছু ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে এমনকি বড়পর্দায়ও অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর মিষ্টি অভিনয় বরাবরই মন জিতেছে দর্শকের। এর আগে তাঁকে বেশ অবুঝ আহ্লাদী চরিত্রে দেখা গেলেও এবারে তাঁর চরিত্র বেশ দায়িত্বপরায়ন। বাড়িতে অসুস্থ বাবার দেখভাল সাথে নিজের জীবনের লড়াই চলছে। অন্যদিকে কাজের প্রতিও যথেষ্ট দায়িত্ববান সে।
ঠাম্মার দেখভালের যে দায়িত্ব সে নিয়েছে তা যেন ঠিকমতো পালন করতে পারেন সেইদিকেই নজর তাঁর। তাঁর এই ব্যক্তিত্ব ভালো লাগে নায়ক আদিদেব লাহিড়ীর। অভিনেতা ঋত্বিক মুখোপাধ্যায় এই চরিত্রে অভিনয় করছেন। তিনি নিজেও অত্যন্ত দায়িত্ববান একজন ডাক্তারের চরিত্রে অভিনয় করছেন। নিজের কাজকে সবথেকে বেশি ভালোবাসেন এবং গুরুত্ব দেন তিনি। এই কারণেই কাজের প্রতি দায়িত্ববান আনন্দীকে ভালবেসে ফেলবেন তিনি। গল্পের মোড় সেদিকে ঘুরবে বলেই আশা করছেন দর্শক।এ ছাড়াও লাহিড়ী বাড়ির অন্যান্য সমস্যাতেও ঢাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে আনন্দী। বিশেষত আদিদেবের মায়ের বিষয়ে। আদিদেবকেও শেখাচ্ছে কিকরে মায়ের সম্মান রক্ষা করতে হয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয়। এভাবেই আনন্দীকে ভালবেসে ফেলেছে লাহিড়ী বাড়ির সকলে। মিষ্টি কথার পাঁচন এই ধারাবাহিকটি দর্শকের মন জিতছে সমস্ত দিকথেকে। সকলের ভালোবাসায় এবার টিআরপির শীর্ষস্থান দখল করবে কী আনন্দী? তার উত্তর দেবে সময়।
প্রতিবেদন : প্রিয়াংকা সরকার