বাংলার কাজ তাকে বরাবরই মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ছবি ‘নায়ক’ খুবই ভালো লেগেছে তাঁর। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুযোগ পেলে বাংলায় কাজও করতে চান এই অভিনেতা। কথা হচ্ছে বর্তমানে জনপ্রিয় অভিনেতা রাজীব সিদ্ধার্থের। সম্প্রতি রাজীব সিদ্ধার্থের দুটি কাজ একই দিনে রিলিজ করলো ওটিটিতে।
রাজীব প্রসঙ্গে
চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ওটিটিতে মুক্তি পায় রাজীবের দুটি কাজ। ‘ লাভ-সিতারা ‘ ও ‘ হানিমুন ফটোগ্রাফার ‘। ‘লাভ-সিতারা’-তে রাজীব সিদ্ধার্থের বিপরীতে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী শোভিতা ধুলিপালা। হিন্দি ও মালায়লাম দুই ভাষাতেই মুক্তি পেয়েছে তাঁদের এই ছবি। অন্যদিকে ‘ হানিমুন ফটোগ্রাফা’- রে রাজীবের সঙ্গে কাজ করেছেন আশা নেগী, সাহিল সালাথিয়া, অপেক্ষা পৌরাল ও অনেকে। ‘ লাভ-সিতারা ‘ ও ‘ হানিমুন ফটোগ্রাফা’-রে কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে রাজীব বলেন, ” ‘লাভ-সিতারা’ ও ‘হনিমুন ফটোগ্রাফার’-এ আমার চরিত্র দুটো সম্পূর্ণ অন্যরকম”। একই দিনে মুক্তি পেলো অভিনেতার দুটি কাজ সেই অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘একজন অভিনেতা তখনই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যখন তাঁকে সম্পূর্ণ আলাদা দুটি চরিত্রে দেখা যায়। ‘লাভ-সিতারা’ ও ‘হনিমুন ফটোগ্রাফার’-এ আমার চরিত্র দুটো সম্পূর্ণ আলাদা।
একটিতে আমি ভীষণ অনুভূতিশীল একটা মানুষ, একজন ভদ্রলোকও বটে। আর অন্যটিতে আমি একেবারেই একটি নেগেটিভ চরিত্র। অনেক সময় অভিনেতারা টাইপকাস্ট হয়ে যান। তখন একই রকমের চরিত্রের অফার আসতে থাকে। তবে আমি খুব ভাগ্যবান যে আমার কাছে সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন চরিত্রের অফার এসেছে। আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি দুটি চরিত্রকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে ফুটিয়ে তোলার। আর এই দুটি কাজই একই দিনে মুক্তি পেল। এটাই দর্শকদের জন্য চমক হবে কীভাবে একটা মানুষ সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটো চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন”।
এর আগে ওটিটি তে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তাঁর ‘ফোর মোর শর্টস প্লিজ’, ‘হান্ড্রেড’, ‘আশ্রম’ এর মতো একাধিক ছবি ও ওয়েব সিরিজ। তাঁর কাজ বেশ প্রশংসা পেয়েছে দর্শকমহলে। এবারে তাঁর নতুন দুটি কাজে সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি চরিত্রে দেখা গিয়েছে রাজীবকে। দুটি প্রোজেক্টে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতাও ছিল ভিন্ন।
দুটি সম্পূর্ণ আলাদা চরিত্রে নিজেকে দক্ষ ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য অভিনেতা নিয়েছিলেন বিভিন্ন প্রস্তুতি? রাজীব জানান, ‘লাভ-সিতারা’ ছবিতে তাঁর চরিত্র একজন হোটেলের রাঁধুনির। তিনি বলেন, “হোটেলের শেফরা যখন রান্নাঘরে কাজ করেন, তখন তাঁদের মধ্যে অদ্ভুত একটা জেদ, আত্মবিশ্বাস কাজ করে। মনে হয় এটা তাঁদের জায়গা। আমি প্রায় মাস দুয়েক মতো আমি একটা হোটেলের কিচেনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। কীভাবে রান্না করেন, কীভাবে সবজি কাটা হয় সমস্ত লক্ষ করতাম। এতটাই মিলে মিশে গিয়েছিলাম যে আমিও হোটেলের অতিথিদের থেকে অর্ডার নিতাম। তারপর কিচেনে গিয়ে বলতাম যে কোন টেবিলে কোন অর্ডার হবে।”
সহঅভিনেত্রী শোভিতা ধুলিপালার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজীব বলেন, “কোনও কাজ তখনই ভাল হয় যখন প্রত্যেকটা অভিনেতা অভিনেত্রী একই লক্ষ্যে কাজ করেন। শোভিতা জীর সঙ্গে কাজ করা এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। শোভিতা এবং আমরা সকলেই চাইছিলাম সিনেমাটা যাতে ভাল হয়। আমাদের পরিচালক ভীষণ ভাল ছিলেন। আমরা চেয়েছিলাম আমাদের সিনেমাটা তারার মতোই ঝলমল করুক।”
বাংলায় কাজ করতে চান রাজীব
কথাপ্রসঙ্গে বাংলাতে কাজ করার ইচ্ছের কথাও জানান অভিনেতা। মহারাজা সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘নায়ক’ সিনেমা মুগ্ধ করেছে তাঁকে। অভিনেতা বলেন ‘নায়ক’ দেখে তিনি বাংলা কাজের অনুরাগী হয়ে গেছেন। এত সুন্দর, এত মননশীল কাজ যে বাংলায় হয় সেটা নাকি তাঁর ধারণার বাইরে ছিল। তিনি বহুবার এই সিনেমাটি দেখেছেন বলেও জানান। ছবিটির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমার। সুযোগ পেলে রাজীব নিজেও বাংলায় কাজ করতে চান বলে জানান। থিয়েটারের সূত্রে এর আগেও কলকাতায় এসেছেন তিনি। বাংলা ভাষা শেখার ইচ্ছেও আছে অভিনেতার। তিনি বলেন, “কখনও বাংলা ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেলে অবশ্যই করতে চাইব। এই সুযোগে ভাষাটাও শিখে নিতে পারব।”
প্রতিবেদন : প্রিয়াংকা সরকার