বিখ্যাত ক্লাসিকাল সঙ্গীত বিশারদ লেট পণ্ডিত যশরাজের স্ত্রী মধুরা পণ্ডিত যশরাজ বুধবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। মুম্বইয়ের ভারসবাতে নিজের বাসভবনেই মারা যান বলে সূত্রের খবর। বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মুম্বইয়ের ওশিওয়ারা শ্মশানে মধুরা যশরাজের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
মধুরা পণ্ডিত এবং পণ্ডিত যশরাজের প্রেম
১৯৬২ সালে পণ্ডিত যশরাজের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মধুরা। বর্তমানে তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে, কন্যা দুর্গা যশরাজ এবং পুত্র শরং দেব পণ্ডিত। একবার একটি সাক্ষাৎকারে পণ্ডিত যশরাজ তার সঙ্গে মধুরা পণ্ডিতের প্রথম দেখা হওয়ার কথা স্মরণ করেছিলেন, যা ঘটেছিল ১৯৫৪ সালে। তিনি বলেছিলেন কেউ একজন তাকে মধুরার সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলেন যাতে তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। সেইসময় মধুরা পণ্ডিতের বাবা ব্যস্ত ছিলেন ঝনক ‘ঝনক পিয়া বাজে’ (১৯৫৫) ছবির শ্যুটিংয়ের কাজে। মধুরা বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক ভি শান্তরামের কন্যা।
১৯৬০ সাল পর্যন্ত পণ্ডিত যশরাজ এবং মধুরা একে অপরের সঙ্গে খুব কম দেখা করতেন। এরপর থেকে পণ্ডিত যশরাজ মুম্বইতে থাকা শুরু করেন। সেই সময়তেই নাকি দুজন দুজনার প্রেমে পড়েন বলে জানান পণ্ডিত যশরাজ এমনকি মধুরা পণ্ডিতের বাবা তাঁর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন কারণ তিনি সন্দেহ করেছিলেন যে জসরাজ আগে থেকেই বিবাহিত। এমনটা একটি সাক্ষাৎকারে নিজেই জানিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী।
মধুরা পণ্ডিত যশরাজের টুকরো কর্ম জীবন
ছোট থেকেই সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন মধুরা পণ্ডিত যশরাজ মধুরা জসরাজ, ‘সঙ্গীত মার্তন্ড পণ্ডিত যশরাজ’ (২০০৯) এবং ‘অ্যায় তুজা আশির্বাদ’ (২০১০) এর মতো চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন, যেখানে তিনি লতা মঙ্গেশকর সহ বিখ্যাত শিল্পীদের সাথে কাজ করেছিলেন। উপরন্তু এর পাশাপাশি নির্দেশনা ছাড়াও, মধুরা যশরাজ তাঁর স্বামী পন্ডিত যশরাজের সম্পর্কে একটি জীবনীও লিখেছেন, যেখানে মেওয়াতী ঘরানার সাথে একজন ধ্রুপদী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তাঁর অসাধারণ কর্মজীবনের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
এছাড়াও তিনি তাঁর বাবা ভি শান্তরামের আত্মজীবনীও লিখেছেন দুটি ভাষায়, ইংরেজি এবং মারাঠি। সেই বই দুটির নাম দ্য ম্যান হু চেঞ্জড ইন্ডিয়ান সিনেমা (ইংরেজিতে) এবং শান্তরামা (মারাঠিতে)।
২০২০ সালে ৯০ বছর বয়সে হৃদ জনিত সমস্যার কারণে পণ্ডিত যশরাজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঠিক তার চার বছর পর এই সঙ্গীত শিল্পীর স্ত্রী মধুরা পণ্ডিত যশরাজ চিরতরে বিলীন হলেন ঘুমের দেশে। বয়স জনিত সমস্যার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলেই জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত গোটা পরিবার।