আর জি কর কাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ। বিচার চাওয়ায় আশায় পা মিলিয়েছেন বহু অভিনেতা এবং অভিনেত্রীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। প্রতিটি আন্দোলনেই পাওয়া যাচ্ছে অভিনেত্রীকে। রাত দখল থেকে শুরু করে আন্দোলনরত মানুষ দের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা করা সমস্ত কর্মসূচিতেই এগিয়ে এসেছেন তিনি। তবে এরপরেও পান থেকে চুন খসলেই চরম কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে অভিনেত্রীকে।
তবে শুধুমাত্র তিনিই নন একইরকম ভাবে ট্রোল এর শিকার হতে হচ্ছে আরও বহু তারকাদের। কোনো তারকা আন্দোলনে উপস্থিত থাকলো বা না থাকলো অথবা কেউ হাসি মুখে শেয়ার করলো নিজেদের ছবি। সমস্ত বিষয়ে খুব সহজে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে সেলিব্রেটিদের। এই কারণে অনেকে মনে করছেন তারকারা খুব সহজেই সফট টার্গেট হয়ে উঠেছেন নেটিজেনদের ! এই বিষয়ে এবার প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হলেন অভিনেত্রী পায়েল এবং স্বস্তিকা।
কী বললেন স্বস্তিকা?
আন্দোলনের মাঝেই অভিনেত্রী স্বস্তিকা তাঁর আসন্ন ছবি টেক্কা-র প্রথম লুক পোস্ট করেন নিজের ফেসবুক আইডিতে। ব্যস তারপরেই তাকে নিয়ে শুরু হয় কটু মন্তব্য। অনেকেই তাঁর এই ছবিকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে।
তবে এর উত্তরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী নিজের ছবি টেক্কা-র আরও একটি পোস্টার শেয়ার করে তার ক্যাপশনে লিখলেন, ” রেপ কালচার, থ্রেট কালচার এগুলোর সাথে আমরা অবগত। ব্যান কালচারের সাথেও, এখন এই দুঃসময়ে এটা আবার ট্রেন্ডও করছে।আমি পেশায় অভিনেতা। সংসারও চলে অভিনয় করেই। আর শুধু আমারই নয় আরও দশটা মানুষের সংসারও চলে । তারা আমার ওপরেও নির্ভরশীলআমরা কাজ ভালোবেসে করি, ওটাই আমার প্যাশন। ওটাই আমার ভাত কাপড় জোটায়। বাকি সক্কলে যেমন কাজ সামলে এই আন্দোলনে সারা দিচ্ছেন, আমিও তার চেয়ে আলাদা নই।
আমরা যারা তিলোত্তমা তাদের নিজের তাগিদেও এ লড়াইয়ে সামিল হওয়া।লড়াই কিন্তু কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্যেও, তাই না? তাহলে যারা প্রতিবাদের পাশাপাশি নিজের ব্যবসার তাগিদে বা কাজের তাগিদে পোস্ট করছেন? তাদের ছোট করা মানে কিন্তু তাদের অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে বা নৈতিকভাবে অসুরক্ষিত করে দেওয়া নয় কি?খালি পেটে বিপ্লব হয় না, সাথী। ভাতের জন্যেও লড়তে গেলে ভাতের স্বাদ জানতে হয়। তাই যদি বেঁচে থাকার পন্থাকে আপনারা নিন্দা করতে শুরু করেন, তাহলে খুনের জন্য বিচার চাওয়াটা হিপোক্রেসি নয় কি?
এ মেসেজ সব্বার জন্যে, যাঁরা ছোটো করছেন বাকিদের যাঁরা আন্দোলনের পাশাপাশি ভাতের লড়াইটাও করছেন,পুজো না হয় একা করলেন, উৎসব সবাই মিলে করতে হয়। আমি পুজোয় আছি, উৎসবে নেই। আমি নেই, এ আমার একান্ত ব্যক্তিগত স্টান্স।আপনাদের তো বলিনি যে থাকবেন কী থাকবেন না। আপনাদের ইচ্ছে হলে থাকবেন না হলে থাকবেন না।
এই মত কারুর ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায়না। ইচ্ছে হলে আমার সিনেমা দেখবেন না হলে দেখবেন না। আমার কাজের প্রতি আমার দায় আছে, দায়িত্ব আছে। আমি প্রচার করার জন্য চুক্তিবদ্ধ। আমি কাজের প্রতি ভালোবাসার জায়গা থেকে প্রচারও করব নতুন ছবির, আবার আন্দোলনেও থাকবো।দু’টোই করবো । এবং বেশ করবো।প্রতিবাদ করছি বলে কিছু মানুষ দেখলাম তার প্রতিবাদ করছেন। অদ্ভুত, এ প্রথম দেখলাম এমন। অসুবিধা নেই। আর কোনো কৈফিয়তও আমি দেবো না। আন্দোলন দীর্ঘজীবি হউক। ”
প্রতিক্রিয়া পায়েলের
অন্যদিকে অভিনেত্রী পায়েল তারকাদের কটাক্ষ বিষয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে জানালেন নিজের প্রতিক্রিয়া। তাঁর মতে বিচার চেয়ে যে প্রতিবাদ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি প্রতিবাদ করা হচ্ছে তারকাদের নিয়ে। এই কারণে তিনি মনে করেন আন্দোলন বেপথে চলে গেছে। তিনি আরও বললেন, চাইলে তারকারা বসে বসে খেতে পারে কিন্তু যাঁরা ক্যামেরার ওপারে কাজ করেন তাঁদের কী হবে ? তাই তিনি বলেন পরিচালক , প্রযোজক এমনকি অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের কথা বাদ দিন যাঁরা এই চলচ্চিত্র পেশার সঙ্গে যুক্ত অথচ দিন আনে দিন খায় তাদেরকে বেশি করে সমর্থন জানান। তবে তাঁর এই উত্তরের পর হয়তো অভিনেত্রীকেও সফট টার্গেট করা হতে পারে এমনটাই মতামত পায়েলের।