আরজি কর কাণ্ডে উত্তাল গোটা দেশ। সরগরম রাজনৈতিক মহলের। যতদিন যাচ্ছে প্রতিবাদের পারদ চড়ছে। তিলোত্তমা হত্যার একমাস অতিক্রান্ত। বিচার তবুও অধরা। এরই মাঝে টলিপাড়ায় যৌন হেনস্থার খবর ভাইরাল। কখনও উঠে আসছে অরিন্দম শীলের নাম, কখনও আবার জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেতার নাম, মিটু আন্দোলনে নেমে পড়েছেন সেলিব্রিটিরাও। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আচমকা নবান্নে হাজির হন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। । তাঁর নবান্নে যাওয়াকে ঘিরে টলিপাড়ায় তৈরি হয়েছে গুঞ্জন।
প্রসঙ্গত, আরজি কর ঘটনার মাঝেই যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে। শুটিং সেটে শট বোঝানোর সময় পরিচালক অশ্লীল আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন এক অভিনেত্রী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ডিরেক্টর্স গিল্ড-এর পক্ষ থেকে সাসপেন্ড করা হয় পরিচালক অরিন্দম শীলকে। এরপরই ইন্ডাস্ট্রির এই তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে সরব হয়েছেন একাধিক অভিনেত্রীরা। বাদ গেলেন না অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় ঋতাভরী
সূত্রের খবর, টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্থার ঘটনা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন অভিনেত্রী। মহিলা সিনেমাকর্মীদের সুরক্ষার্থে মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হয়েছে হেমা কমিশন। সেই কমিশনের আদলেই এবার টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কমিশন তৈরি করার আর্জি জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
জানা গিয়েছে, সেই আলোচনা শেষে এই বিশেষ কমিটি তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, এর আগে ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্থা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। তাঁর হাত ধরেই টলিউডে প্রথম এসেছিল
মিটু আন্দোলন।
সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি সুদীর্ঘ পোস্ট করেন অভিনেত্রী। যেখানে তিনি লিখেছিলেন, “মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্থা ঘটনা উন্মোচন করে হেমা কমিশনের রিপোর্ট আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছে কেন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি একই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না?
এরকম অনেক অভিযোগই আসছে। আমার সঙ্গে আমার অনেক পরিচিতরাও এই ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। এই ধরনের নোংরা মানসিকতা এবং আচরণের নায়ক, প্রযোজক এবং পরিচালকরা দিনের পর দিন অন্যায় করেও নির্দ্বিধায় কাজ করে চলেছেন। এমনকি আরজি কর ঘটনায় তিলোত্তমার বিচারের জন্য মোমবাতি হাতে ধরেও পথে নামছেন।
কী বললেন অভিনেত্রী
এই শিকারিদের মুখোশটা টেনে খুলে দিতে হবে। আমি আমার সহ অভিনেত্রীদের এই দানবদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমি জানি অনেকেই তাদের কাজ হারানোর ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা আর কতক্ষণ চুপ থাকব? আমাদের কি কোনও দায়বদ্ধতা নেই এই তরুণ প্রজন্মের অভিনেত্রীদের প্রতি, যারা স্বপ্ন নিয়ে কাজ করতে আসেন এবং তাঁর যেনও বিশ্বাস করতে বাধ্য না হয় যে এটি একটি সুগার কোটেড ব্রথেল ছাড়া আর কিছুই নয়”।
সব শেষে এই পোস্টে অভিনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উল্লেখ করে লিখেছেন, “আমরা এই একই রকম তদন্ত, রিপোর্ট এবং সংস্কার চাই”।