সম্প্রতি নিজের বেফাঁস মন্তব্যের কারণে নেটিজেনদের তুমুল ট্রোলিং-এর স্বীকার হয়েছেন তারকা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। তিনি বলেছিলেন , “যারা কর্মবিরতি করছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে, তাঁরা সরকারি বেতন, বোনাস নেবেন তো? সরকারি পুরস্কার ফেরত দেবেন তো।”
এরপরেই নিজের বন্ধু সহকর্মীদের পক্ষ থেকে ধেয়ে আসে একের পর এক কটাক্ষ। অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী থেকে শুরু করে বিদিপ্তা চক্রবর্তী সকলেই অভিনেতা ও বিধায়ক কাঞ্চনের বলা এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করতে থাকেন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে। পোস্ট করতে দেখা যায় অভিনেতা ঋদ্ধি সেনকেও। এমনকি নাট্যকর্মী সুজয় নীল মুখোপাধ্যায় ” মাগন রাজার পালা” নাটকটির শো বাতিল করে দেন যেখানে কাঞ্চন একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতেন। সুদীপ্তা চক্রবর্তী পোস্ট করে জানিয়ে দেন যে তিনি তার বন্ধু কাঞ্চনকে তার এই বলা কথাগুলির জন্য রীতিমতো ত্যাগ করলেন।
কাঞ্চন- কথায় অপমানিত নাট্য ব্যক্তিত্ব, অভিনেতা
এবার কাঞ্চনের বলা এই মন্তব্যে অপমানিত বোধ করে পুরস্কার ফেরত দিতে চাইছেন বর্ষীয়ান নাট্যকার চন্দন সেন। ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ চন্দন সেনকে নাট্যক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মান দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার সকাল বেলায় নাট্যকার চন্দন সেন ঘোষণা করেছেন যে তিনি এই পুরষ্কার ফেরত দিতে চান। সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগে ইতিমধ্যেই ই-মেইল করে জানিয়ে দিয়েছেন চন্দন সেন। নাট্যক্ষেত্রে তার ব্যাপক অবদানের জন্য ২০১৭ সালে চন্দন সেনকে দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়। এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পুরস্কার মূল্য হিসেবে তিনি ২৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। সেই ২৫০০০ মূল্যের আর্থিক পুরস্কারও ফেরত দিয়ে দিতে চান তিনি। তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের সরকারি পুরস্কার ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে এমন মন্তব্যের কারণে তিনি রীতিমতো অপমানিত বলে জানিয়েছেন।
তবে এর পাশাপশি শুধুমাত্র চন্দন সেনই নন পরিচালক এবং অভিনেতা বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর নাট্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন ইতিমধ্যে। তিনি এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির সচিবকে মেল করে তার এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। তাকে বেশ কিছু বাংলা ধারাবাহিকেও অভিনয় করতে দেখা যায়। বর্তমানে তিনি জি বাংলার মালা বদল ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। পুরষ্কার মূল্য বাবদ তাকে ৩০,০০০ টাকা দেওয়া হয়, সেই অর্থ মূল্যও তিনি ফেরত দিতে চেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। চন্দন সেনের মতো তিনিও কাঞ্চনের এহেন মন্তব্যের কারণে ব্যথিত। সেই কারণে তিনিও তার পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তবে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ভুল স্বীকার করে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট করেন কাঞ্চন মল্লিক। কিন্তু তার ক্ষমা প্রার্থনার ফলে যে চিঁড়ে একদমই ভেজেনি তা উপরের ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা গেছে।