“আমি আবার সেই একা হয়ে যাচ্ছি , জঙ্গলে একা ছোট মোগলির মতন, যার হাত ধরার মত কেউ নেই, বন্ধুবান্ধবের অনেক দূরে চলে গেছে , পাশে থাকার আশ্বাস টুকু দিয়ে গেছে, কিন্তু আমি একা , একদম একা।”-বাবিল খান
তিনি স্টারকিড, কিন্তু স্টারডম এর লেশমাত্র ধরা পড়েনা তাঁর চলবলন এমনকি কথাবার্তায়, পাপারাতজি দের ভিড়ে যিনি অনায়াসে মিশে যান, যার কথা উঠলে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন কে কে মেননের মত সহশিল্পী সেই বাবিল খান শেয়ার করলেন বাবা ইরফান খানের সঙ্গে তার ছোটবেলার ফটো ইনস্টাগ্রাম এ। ছেলের একমাত্র বন্ধু ছিলেন তাঁর বাবা। বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত নায়ক ইরফান খান, কমার্শিয়াল বা ভিন্ন ধারার ছবিতে যার ছিল অবাধ বিচরণ। অসময়ে ক্যান্সার এ আক্রান্ত হয়ে চলে গেছেন পৃথিবী ছেড়ে সেই ২০২০ সালে। রেখে গেছেন সম্ভাবনাময় সন্তান বাবিল খান কে। যার প্রসঙ্গে টিনসেল টাউনের এর একটাই বক্তব্য বাবার যোগ্য ছেলে। হবে নাই বা কেনো বাবা ইরফান ছিলেন আপাদমস্তক শিল্পী, স্টারডম থেকে বহুদূরে একজন স্বয়ংসম্পূর্ণ অভিনেতা।বলিউডের তাবড় সুপারহিরোদের চ্যালেঞ্জ দিতে পারতেন ইরফান, কখনও বাদশা কখনও বা শাহেনশা সবার পাশেই তার জ্বলন্ত উপস্থিতি। এমন শিল্পীর অকালে চলে যাওয়া মানতে পারেনি বলিউড।
বাবাকে বড্ড ভালবাসতেন বাবিল । ইরফানের মৃত্যুর পরে তার দেওয়া প্রত্যেক সাক্ষাৎকারে বাবাকে স্মরণ করেছেন তিনি। মা সুতপা সিকদার এর ছায়ায় বড় হলেও বাবা র বন্ধুত্ব ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে দামি। ছোটবেলা থেকে অন্যভাবে মানুষ হয়েছেন বাবিল খান। প্রথাগত পড়াশোনার ইঁদুর দৌড়ে সামিল না হয়ে বেড়ে উঠেছেন জীবনের মূল্যবোধের পুঁজি নিয়ে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন অন্য সব বাচ্চারা যখন ইতিহাস ভূগোল বিজ্ঞানে ব্যস্ত তখন তিনি জীবনের পাঠ নিচ্ছেন মধ আইল্যান্ডের বাড়িতে। গাছে চড়া বা জলে সাঁতার কাটা খুব প্রিয় ছিল তাঁর। এরই মধ্যে একসময় বাবার কাজের ব্যস্ততার জন্য ফিরতে হলো মুম্বাই। সেখানে অনেক বন্ধু পেলেন বাবিল। ইরফান খান তখন নামী তারকা তাই বাবিল এর বন্ধু জুটে গেল বেশকিছু। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে বাবার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ল তাঁর। বাবা চাইতেন ছেলে অভিনেতা হোক। কিন্তু বেশ তাড়া দিতেন। বাবিল বলেছেন বাবার তাড়া ছিল খুব। ছেলের বড় হয়ে ওঠার তাড়া, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তাড়া, এত তাড়া কিসের , বাবা তো রয়েছেন থাকবেন ও। কিন্তু জীবন অন্যরকম কিছু ভেবেছিল তাই বাবার তাড়াহুড়ো শেষ হলো একদিন। আজ বাবা নেই বাবিল তাই একা। বলিউডে পা দিয়ে কালার মত সিনেমায় অভিষেকেই চমকে দিয়েছেন বাবিল খান। এরপর যশরাজ এর ব্যানারে ভুপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি নিয়ে তৈরি দ্যা রেলওয়ে মেন এ কে কে মেননের পাশে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন , পেয়েছেন দর্শকের অকুণ্ঠ প্রশংসা। দর্শকের অভিনেতা ছিলেন ইরফান , বাবিল ও তাই। শুধু একটাই আফশোস বড় তাড়াতাড়ি চলে গেলেন বাবা ইরফান। জঙ্গলে তাই বা এখন মোগলির মতই বাবিল একা নির্বান্ধব।
পাপা কেহতে হ্যায়, বাবার স্মৃতি আঁকড়ে পথ চলছেন বাবিল খান
